1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক শিল্পী

১৫ আগস্ট ২০১৯

প্রাচীরে গ্রাফিটির খেলা প্রায় সর্বত্রই চোখে পড়ে৷ কেউ শিল্প হিসেবে তার কদর করে, কেউ অপসংস্কৃতি হিসেবে উড়িয়ে দেয়৷ ফ্রান্সের এক শিল্পী বিশ্বভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে নতুন শৈলির মাধ্যমে অভিনব শিল্পসৃষ্টি করছেন৷

DW Euromaxx, Riesiges Graffiti vor dem Eiffelturm
ছবি: DW

প্যারিস শহরের প্রাণকেন্দ্রে আইফেল টাওয়ারের ঠিক সামনেই একটি শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে৷ ছয় জোড়া হাত একে অপরকে ধরে রয়েছে৷ ব্যক্তির তুলনায় সমষ্টিই যে আরও এগিয়ে যেতে পারে, এর মাধ্যমে সেই উপলব্ধি তুলে ধরা হয়েছে৷

ল্যান্ড আর্ট শিল্পী সাইপ এই সৃষ্টিকর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘সমাজের একটা অংশ নিজেদের নিয়েই মশগুল হয়ে রয়েছে৷ কিন্তু বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে আমাদের একসঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে বলে আমাদের বিশ্বাস৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা গোটা বিশ্বকে সেই বার্তা দিতে চাই৷ হাতে হাত মিলিয়ে মূল্যবোধ, শ্রদ্ধাবোধ, পারস্পরিক সহায়তা, ঐক্য, সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব৷''

পরিবেশবাদী শিল্পকলার প্রতিনিধি হিসেবে সাইপ ও তাঁর টিম আট দিন, আট রাত ধরে এই শিল্পকর্ম গড়ে তুলেছেন৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগেই কাজ শেষ করতে তাঁদের সময়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে হয়েছে৷ আবহাওয়াও ভালো ছিল না, অনেক বৃষ্টি হয়েছে৷ ঘাস ভিজে থাকলে রং ঠিকমতো শুকায় না৷ সাইপ বলেন, ‘‘প্রকৃতির যত সম্ভব কম ক্ষতি করাই আমার মৌলিক চিন্তাধারার অংশ৷ আমি শুধু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করি৷ সাদা অংশের জন্য চুন, কালো অংশের জন্য কয়লা৷ আঠাও দুধের প্রোটিন দিয়ে তৈরি৷ সবই প্রাকৃতিক উপকরণ৷ আমার মতে, আমার শিল্পকর্ম তাই পরস্পরবিরোধী নয়৷ আমি প্রকৃতির কোনো ক্ষতি না করে আত্মা স্পর্শ করতে চাই৷''

সাইপ-এর আসল নাম গিয়োম লেগ্রো৷ প্রথমে হাতে করে কাগজে স্কেচ সৃষ্টি করে তারপর মূল স্থাপত্যের কাজে হাত দেন তিনি৷ এই কাজে তাঁর তিন স্থায়ী সহকর্মী ও বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী সহায়তা করেন৷

সাইপ ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে স্প্রে করে ল্যান্ড আর্ট শিল্প সৃষ্টি করে চলেছেন৷ বিশেষ করে ইউরোপ ও দক্ষিণ অ্যামেরিকায় তিনি বেশি সক্রিয়৷ বিষয় হিসেবে তিনি বার বার জলবায়ূ ও আমাদের জগতের স্থায়িত্বের অভাব বেছে নেন৷ নিজের অতীত সম্পর্কে সাইপ বলেন, ‘‘সে সময় গ্রাফিটি শিল্প চর্চা করতাম৷ তারপর মনে হলো, এর আর কোনো অর্থ নেই৷ সর্বত্রই গ্রাফিটি দেখা যায়৷ তখন মানুষের হৃদয় ছুঁতে নতুন কোনো পদ্ধতির খোঁজ করার কথা মনে এলো৷ সেই সময়েই ইউরোপে ড্রোনের আবির্ভাব ঘটলো৷ ফলে জগত পর্যবেক্ষণ করার নতুন এক পথ খুলে গেল৷''

পরিবেশবান্ধব এক ল্যান্ড আর্ট শিল্পির কথা

04:06

This browser does not support the video element.

প্যারিসে ফ্রেস্কোর মাধ্যমে সাইপ নতুন এক চিহ্ন রাখতে চান৷ তিনি এর নাম রেখেছেন ‘বিয়ন্ড ওয়াল্স', অর্থাৎ প্রাচীরের ওপারে৷ এর মাধ্যমে তিনি ইটপাথরের তৈরি ও মানুষের মনের মধ্যে প্রাচীরের সংখ্যা কমাতে চান৷ সেই লক্ষ্য পূরণ করতে তিনি ‘ল্যান্ড আর্ট' শৈলি বেছে নিয়েছেন৷

মানুষের তা পছন্দও হচ্ছে৷ কেউ বলেন, ‘‘সেটা যে কী, নীচ থেকে তা বুঝতে পারিনি৷ উপরে উঠে বুঝলাম কী সুন্দর!'' অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আশাকরি এমন লোক রয়েছে, যারা প্রাচীর তৈরি করতে চান এবং শিল্পও ভালোবাসেন৷ সৌন্দর্যের মাধ্যমে তাঁদের কাছে পৌঁছানো যায়৷''  এক দর্শক বলেন, ‘‘লক্ষ্য করলাম, গভীরতা সম্পর্কে নানা উপলব্ধি রয়েছে৷ স্প্রে রং দিয়ে যে এমন করা যায়, এমনটা কখনো ভাবতে পারিনি৷''

সাইপ-এর জন্য প্যারিস শহর আরও এক বড় প্রকল্পের সূচনা৷ আগামী ৩ বছরে তিনি সব মহাদেশের মোট ২০টি শহরে স্প্রে রংয়ের মাধ্যমে হাতের সম্ভার সৃষ্টি করতে চান৷ এর মাধ্যমে তিনি প্রতীকী অর্থে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব শৃঙ্খল গড়ে তুলতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি অনেকটা জীবনের মতো৷ এক ধাপ পিছিয়ে এলে বাস্তব সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়৷ দ্বিতীয় বিষয় হলো, বিষয়টি অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী৷ শুনতে অদ্ভুত লাগলেও আমার কিন্তু ভালো লাগে৷ শিল্পকর্মের বিকাশ ঘটে এবং দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এখানে কিছুই থাকবে না৷''

সাইপ নিজের ক্ষেত্রে পথিকৃত হিসেবে নাম করেছেন৷ আইফেল টাওয়ারের সামনে আবার মানুষের সমারোহ হলে রং ফিকে হয়ে ওঠে৷ তখন তাঁর অনুরাগীরা ফটো দেখেই সেই শিল্পকর্মের কদর করতে পারেন৷

মারিনা স্ট্রাউস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ