1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘যদি আরো লাশ মেলে...’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১২ আগস্ট ২০১৪

পদ্মায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের কোনো হদিস এখনো মেলেনি৷ তাই সোমবার উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়৷ কিন্তু স্বজন হারাদের কে থামাবে? তাঁরা লোকজন নিয়ে দেশীয় ‘কপ্পা’ পদ্ধতিতে এখনো অনুসন্ধান চালাচ্ছেন৷

Fähre mit mehr als 200 Passagieren in Bangladesch gesunken
এখনো খোঁজে মেলেনি পিনাক-৬ লঞ্চেরছবি: picture-alliance/dpa

সোমবার ঐ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণার আগের দিন, অর্থাৎ রবিবার, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন করেছে আরেকটা কাজ৷ তারা নিখোঁজ যাত্রীর সংখ্যা দাপ্তরিকভাবে কমিয়ে ফেলেছে৷ শনিবার পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মোট নিখোঁজ যাত্রী ছিলেন ১১২ জন৷ তাঁদের তালিকাও টাঙানো ছিল মাওয়া ঘাটের তথ্য কেন্দ্রে৷ কিন্তু রবিবার হঠাৎ করেই তালিকা সরিয়ে ৬১ জন নিখোঁজের তালিকা টানানো হয়৷ অর্থাৎ ৫১ জন নিখোঁজ যাত্রী তালিকা থেকে উধাও হয়ে যান৷ মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল দাবি করেন, ৬১ জনই সঠিক৷ আগের তালিকা ভুল ছিল৷ তবে নতুন তালিকা কিভাবে বানানো হলো তার ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি৷

গত সোমবার মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে আসার পর পিনাক-৬ লঞ্চটি পদ্মায় ডুবে যায়৷ লঞ্চে প্রায় ৩০০ যাত্রী ছিলেন৷ এর মধ্যে ১০০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে৷ আর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ৫০টি৷

সোমবার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল মাওয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধার অভিযান শেষ করার ঘোষণা দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বাস্তবতা, সময় বিবেচনা, নদীর পরিস্থিতি ও আবহাওয়া – সব কিছু বিবেচনা করেই আমরা মনে করছি যে, লঞ্চ শনাক্তকরণ তৎপরতা আর চালানোর কোনো অবকাশ নাই৷ চালানোর কোনো প্রয়োজনও নেই৷ বা চালালে ইতিবাচক কোনো ফল পাওয়া যাবে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে না৷ তাই এই লঞ্চ শনাক্তকরণ তৎপরতা আমরা স্থগিত ঘোষণা করছি৷ তবে অন্যান্য কার্যক্রম – যেমন লাশ খোঁজা ইত্যাদি অব্যাহত থাকবে৷''

তিনি দাবি করেন, ‘‘ফায়ার ব্রিগেড, কোস্ট গার্ড, বিআইডাব্লিউটিএ, নৌ-বাহিনী ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লোকবল ও নৌ-যান এবং সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার করে তল্লাশি চালিয়েছে৷ চেষ্টার কোনো ত্রুটি করা হয়নি৷''

কিন্তু নিখোঁজদের স্বজনরা এটা মানতে পারছেন না৷ তাঁরা উদ্ধার অভিযান শেষ করার ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা তো আর কিছু চাই না, শুধু প্রিয়জনের লাশটা বাড়ি নিয়ে কবর দিতে চাই৷ সেই চাওয়া কি পূরণ হবে না!''

স্বজনহারাদের আর্তনাদ (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

ফরিদপুর থেকে স্বজনের খোঁজে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা যাব না, আমরা লাশ নিয়েই যাব৷ আমরা আমাদের সাধ্যমত খুঁজব৷''

পদ্মার দুই তীরে শোকার্ত মানুষের ভিড় এখনো একই আছে৷ তাঁদের কান্না এবং কষ্টে স্থানীয়রাও সমব্যথী৷ তাই প্রশাসন শেষ করলেও সাধারণ মানুষ থামছেন না৷ তাঁরা দেশীয় ‘কপ্পা' পদ্ধতিতে এখনো অনুসন্ধান চালাচ্ছেন৷ এই পদ্ধতিতে নৌকা থেকে দড়ির মাথায় ভারী কোনো বস্তু বেধে নদীতে ফেলা হচ্ছে৷ সেই দড়িতে নদীর তলদেশে কিছু আটকে গেলে তা দিয়ে ধারণা করার চেষ্টা করা হচ্ছে যে আটকে যাওয়া বস্তুটি কী৷''

স্থানীয়রা জানান, এভাবে এর আগে আগেও ডুবে যাওয়া লঞ্চ চিহ্নিত করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে লাশ৷ বলা বাহুল্য, স্বজন হারাদের কেউ কেউ নিজেরাই নদীতে নেমে পড়েছেন দেশি নৌকা এবং কপ্পা নিয়ে৷ কারণ এখন কপ্পাই যে তাঁদের শেষ ভরসা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ