1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের মাঝে ইউক্রেন

ব্যার্ন্ড ইওহান / এসবি২ ডিসেম্বর ২০১৩

ইউক্রেনের মানুষ আর মুখ বন্ধ রাখতে প্রস্তুত নন৷ কিয়েভে গণবিক্ষোভ তার প্রমাণ৷ বিষয়টি এখন আর ইউরোপের ঘনিষ্ঠ হওয়ার দাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, গণতন্ত্র রক্ষাই হয়ে উঠেছে মূল লক্ষ্য – মনে করেন ব্যার্ন্ড ইওহান৷

Johann Bernd DW Expert 2007
ব্যার্ন্ড ইয়োহান, ডয়চে ভেলের ইউক্রেনীয় বিভাগের প্রধান

প্রায় ৯ বছর আগে ‘কমলা বিপ্লব'-এর পর ইউক্রেনে এমন বিক্ষোভ দেখা যায় নি৷ ২০০৪ সালে গণতন্ত্র ও দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে মানুষ পথে নেমেছিল৷ আবার তাঁদের জাগরণ ঘটেছে৷ আবার তাঁরা গণতন্ত্র ও দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে পথে নেমেছেন৷ লক্ষ্য সেই একই ব্যক্তি – ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ ইউক্রেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র থাকবে, না স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠবে – সেটা এখন তাঁরই হাতে৷

অতীতেও মানুষ ইয়ানুকোভিচ-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন, কারণ তিনি প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন বলে নির্বাচনে কারচুপি করেছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন বটে, কিন্তু মানুষ আর বিশ্বাস করেন না যে তিনি ইউক্রেন-কে ইউরোপের দিকে চালিত করছেন৷ ফলে তাঁরা আবার বিক্ষোভ শুরু করেছেন৷ শুধু ইউরোপে ইউক্রেনের স্থান নয়, দেশে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপন্ন বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন৷

পুলিশের হিংসা সত্ত্বেও প্রতিবাদ

রাজধানী কিয়েভ-এ রবিবার প্রায় ১ লক্ষ মানুষ সরকার ও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা এসেছেন৷ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা সত্ত্বেও তাতে যোগ দিয়েছেন ছাত্রছাত্রী, শ্রমিক, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, সন্তান সহ অনেক পরিবারও৷ বহুদিন ধরে প্রস্তুতি সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি যারা শেষ মুহূর্তে বাতিল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মানুষ৷ রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককেও তাঁরা ভালো চোখে দেখছেন না৷

কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে৷ কারণ ইইউ দেশগুলির মতো গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির স্বপ্ন আপাতত ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে৷ তার বদলে আসতে পারে দুঃস্বপ্ন৷ প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া ও বেলারুশের মতো রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ইউক্রেনেও সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠতে পারে৷ শুক্রবার রাতে কিয়েভে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গেল৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বাহিনী এদিন আচমকা নিষ্ঠুর হাতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হয়েছিল৷

কিয়েভ-এ রাজনৈতিক ক্রান্তিলগ্ন

সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে মস্কো ও মিনস্ক-এ এমন পুলিশি বর্বরতার কথা জানতেন ইউক্রেনের মানুষ৷ দেশে কমলা বিপ্লবের পর এমন আচরণ তাঁরা দেখেন নি৷ কিয়েভে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো বিক্ষোভ বা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সম্মেলন-সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকারকে মানুষ বেশ সৃজনশীল উপায়ে কাজে লাগিয়েছে৷ কিন্তু ইইউ-র সঙ্গে সহযোগিতার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সময় সেই অধিকারকে খর্ব করছে নিরাপত্তা বাহিনী৷

এটা একটা গণতান্ত্রিক ক্রান্তিলগ্ন হয়ে উঠতে পারে৷ মানুষ এমন আচরণ মেনে নিতে আর প্রস্তুত নন৷ ইউক্রেনের মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠেছেন৷ এতকাল সারা দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভের কারণ ছিল

ইইউ সম্পর্কে সরকারের নীতি৷ তবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের উপর হিংসাত্মক হস্তক্ষেপের পর প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পেয়েছে৷ এবার মানুষ আর শুধু পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে পরিবর্তনের দাবি করছেন না, তাঁরা এখন সরাসরি সরকার ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি করছেন৷

চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট

গণবিক্ষোভের ফলে বিরোধী শক্তি আবার জোরালো হয়ে উঠছে৷ ক্ষমতাসীন শিবির এই অবস্থায় কী করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ-এর উপর চাপ বাড়ছে৷ এমনকি সরকারি শিবিরেও খোলামেলা প্রতিবাদের সুর শোনা যাচ্ছে৷ কয়েকজন সংসদ সদস্য দলত্যাগ করেছেন৷

২০০৪ সালে কমলা বিপ্লবের সময় ইয়ানুকোভিচ দীর্ঘ টালবাহানার পর মানুষের প্রতিবাদের মুখে নত হয়েছিলেন৷ আজ তাঁকে আবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ তিনি কি সভা-সমাবেশ ও মত প্রকাশের অধিকার মেনে নেবেন? পদত্যাগের দাবিকে তিনি কী ভাবে দেখবেন? দেশের মানুষকে এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে৷ এটাও জানাতে হবে, ইউরোপীয় সমন্বয়ের স্বপ্ন আদৌ বাস্তব হয়ে উঠবে কি না৷ নাকি স্বৈরাচারী শাসনের দুঃস্বপ্নের ফলে দেশ ইউরোপ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে উঠবে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ