এশিয়ান গেমসে টাই চিয়াও শুয়েনের জয় করা স্বর্ণ পদকটি ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে মালয়েশিয়া৷ ডোপিং টেস্টে উত্তীর্ণ না হওয়ায় ফেরত দিতে হচ্ছে পদকটি৷ যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল সে দেশ৷
বিজ্ঞাপন
খেলাধুলা বিষয়ক সালিশি আদালত সিএএস-এ আপিল করেছিলেন টাই৷ দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচন শহরে দ্রুত শুনানি শেষে সে আপিল বাতিল করে দিয়েছে আদালত৷
সিএএস-এর এই সিদ্ধান্ত আপাতত মেনে নিয়েছে মালয়েশিয়া৷ দেশটির যুব এবং ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী খায়রি জামালউদ্দিন বলেছেন, মালয়েশিয়া আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে৷ তবে এর অর্থ এই নয় যে আমরা ডোপিং টেস্টের প্রক্রিয়া নতুন খুশি এবং সন্তুষ্ট৷
ডোপিং টেস্টের বর্তমান প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে৷ আমরা অলিম্পিক কাউন্সিল এবং অলিম্পিক কাউন্সিল অফ এশিয়াকে এই ব্যাপারে লিখবো৷''
‘বাংলার বাঘিনী’ রিতার বিশ্বজয়
পুরো নাম মার্গারিতা মামুন, ডাকনাম রিতা৷ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশ এই তরুণী রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছেন৷ রিতার সাফল্য নিয়ে আমাদের বিশেষ ছবিঘর৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রিতা
মার্গারিতা মামুনের বাবা বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল মামুন, মা রাশিয়ান আন্না মামুন৷ ছোটবেলায় অনেকবার বাংলাদেশে গেছেন রিতা৷ রিও অলিম্পিকে স্বর্ণ জেতার ৬ দিনের মাথায় মারা যান তার বাবা, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Naumov
যেভাবে শুরু
রাশিয়ার রিদমিক জিমন্যাস্ট দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রিতা৷ এপর্যন্ত পৌঁছানোর ইতিহাস জানা যায় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে৷ ১৯৯৫ সালের ১ নভেম্বর জন্ম নেয়া রিতা সাত বছর বয়স থেকেই রিদমিক জিমন্যাস্টিকস চর্চা শুরু করেন৷
ছবি: AFP/Getty Images/S. Supinsky
বাংলাদেশি হিসেবে প্রতিযোগিতায়
দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রিতা জুনিয়র হিসেবে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন৷ ২০০৫ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচরণ তাঁর৷ জুনিয়র পর্যায়ে বাংলাদেশের হয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি৷ তবে এক পর্যায়ে রাশিয়ার হয়েই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রিতা৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
সাফল্যের শুরু
২০১১ সাল থেকে রিতার জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসতে শুরু করে৷ প্রথম আলোতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর রাশিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে হুপ ও বলে অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পান৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
প্রথম সোনা জয়
২০১১ সালে মন্ট্রিল ওয়ার্ল্ড কাপে অংশ নিয়ে ১০৬.৯২৫ পয়েন্ট অর্জন করে অল-অ্যারাউন্ডে ব্রোঞ্জ পান রিতা৷ আর বল ফাইনালে ২৭.০২৫ পয়েন্ট নিয়ে স্বর্ণ জিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন৷
ছবি: AFP/Getty Images/S. Supinsky
রিতার এগিয়ে চলা
এই ছবিটি জার্মানির স্টুটগার্টে আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতা থেকে তোলা৷ চলতি বছরের মার্চে এই আসরে রিতা তিনটি স্বর্ণ পদক, একটি সিলভার এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
সাফল্যের কিছু নমুনা
উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী রিতা রিদমিক জিমন্যাস্টিকসের ২০১৪ সালের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে সবমিলিয়ে সিলভার মেডেলিস্ট এবং ২০১৩ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে ‘অল অ্যারাউন্ড’ চ্যাম্পিয়ন৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
‘বাংলার বাঘিনী’ রিতা
এই তরুণী বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন্সশিপে আটটি এবং ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্সশিপে চারটি সোনা জিতেছেন। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে বিশ্ব রেকর্ডও রয়েছে মার্গারিটার। ২০১৬ বাকু বিশ্বকাপে চারটি ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী এই জিমন্যাস্ট। রিতাকে বলা হয় ‘বাংলার বাঘিনী৷’ আর এই খেতাব তাঁকে দিয়েছেন তাঁর রুশ কোচ ইরিনা ভিনের৷ রাশিয়ার গণমাধ্যমেও রিতাকে ‘বাংলার বাঘিনী’ হিসেবেই উল্লেখ করা হয়৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
বাংলা বলা
রিতা নাকি ছোটবেলায় ভাঙা ভাঙা বাংলাও বলতে পারতেন৷ বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে অনেকবার বেড়াতেও গিয়েছেন তিনি৷ রাশিয়ার গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
ফেসবুকে, ইন্সটাগ্রামে রিতা
রিতার সাফল্যের খবর নিয়মিত পাওয়া যাবে ফেসবুকে৷ ‘মার্গারিতা মামুন ফ্যানস’ নামক একটি পাতা রয়েছে তাঁর৷ এছাড়া ইন্সটাগ্রাম এবং ভিকন্টাক্টিয়াতেও পাওয়া যাবে তাঁকে৷
ছবি: Alex Grimm/Bongarts/Getty Images
10 ছবি1 | 10
মালয়েশীয় নারী ক্রীড়াবিদ টাই এশিয়ান গেমসের ‘উশু' বা মার্শাল আর্টে স্বর্ণপদক জয় করেন গত ২০ সেপ্টেম্বর৷ কিন্তু এরপর ডোপিং টেস্টে তাঁর শরীরে নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদকের উপস্থিতি ধরা পড়ে৷ ফলে এশিয়ান গেমস কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিষিদ্ধ করে এবং তাঁর স্বর্ণ পদকটিও ফেরত দিতে বলা হয়৷
তবে মালয়েশিয়া শুরু থেকেই টাই-এর পক্ষে রয়েছে৷ বরং ডোপিং টেস্টে ভুল করা হয়েছে বলে দাবি সে দেশের৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় মালয়েশিয়ার ‘চিফ অফ মিশন' ডানিয়েল বালাগোপাল বলেন, মেয়েটির জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে৷ তার প্রতারণা করার কোনো ইচ্ছা ছিল বলে আমার মনে হয় না৷
উল্লেখ্য, এশিয়ান গেমস থেকে পাঁচ ক্রীড়াবিদ ডোপিং টেস্টে উত্তীর্ণ না হওয়ায় বাদ পড়েছেন৷ অলিম্পিক কাউন্সিল অফ এশিয়া জানিয়েছে, চলতি বছর ইনচন গেমসে অংশ নেয়া সাড়ে নয় হাজার ক্রীড়াবিদের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ১,৯০০ জনের ডোপিং টেস্ট করা হয়েছে৷