স্বাধীনতা দিবস
২৭ মার্চ ২০১২২৫শে মার্চের কালো রাত্রি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নিহত লাখো শহীদদের স্মরণ করে নিজের বক্তব্য শুরু করেন মান্যবর মান্নান৷ শ্রদ্ধা জানান পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হাজারো বাঙালি নারী আর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি৷
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইউরোপের যে দেশটি প্রথম তাকে স্বীকৃতি দেয়, সেটা ছিল জার্মানি৷ রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান জানান, ‘‘জার্মানি তখন দু'ভাগে বিভক্ত ছিল এবং দু'টো অংশই প্রথম দু'মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়৷ ফলে বাংলাদেশের মানুষ জার্মানির প্রতি চিরকৃতজ্ঞ৷''
ওদিকে সোমবারের ঐ অনুষ্ঠানে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এমিলি হাবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে'র হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছার বাণী পাঠ করেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েও বাংলাদেশ সেগুলির মোকাবিলা করে চলেছে৷ তাই জার্মানি বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে চায়৷'' জার্মানির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফাউন্ডেশন যেভাবে বাংলাদেশে সক্রিয় হয়ে উঠছে, তার ফলেও এই আগ্রহের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে৷ পররাষ্ট্রসচিব এমিলি হাবার এক্ষেত্রে দু'দেশের সাধারণ মূল্যবোধের বিষয়টিকে তুলে ধরেন৷
স্বাভাবিকভাবেই, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে মান্যবর মসুদ মান্নান'এর কাছে৷ উত্তরে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে দেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতির কথা তুলে ধরেন, বলেন ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বে চতুর্থ অবস্থান, দারিদ্র দূরীকরণ, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং গণতন্ত্রের চর্চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা৷ সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিষয়টি মিটমাট হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের গৌরব বৃদ্ধি পেয়েছে, বলেন রাষ্ট্রদূত৷ এছাড়া, টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি৷
তবে বাংলাদেশের সামনে এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জগুলির উল্লেখ করতেও ভোলেন না রাষ্ট্রদূত মান্নান৷ বেড়ে চলা চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জ্বালানির যোগান নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং ২০২১ সালের মধ্যে দেশ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য সম্পূর্ণভাবে দূর করার সংকল্পের কথা বিশেষভাবে উঠে আসে বক্তব্যে৷ আর সেক্ষেত্রে জার্মানিকে পাশে পেতে চায় বাংলাদেশ, জানান রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান৷
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন