1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে বাধা কোথায়?

১৭ জুলাই ২০২৫

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে পুলিশের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের ৯টি বিষয় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ সদর দপ্তর৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশ সদর দপ্তরকে চিঠি দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে নেই কোনো অগ্রগতি৷

১৯ জুলাই ২০২৪-এর ছবি৷ ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজপথে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করছেন এক পুলিশকর্মী৷ ছবিতে তার হাতে ধরা সেই বন্দুক৷
কমিশনের প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে তারা যে পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছে তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিন্নমত জানিয়েছে৷ আর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ও বিচারের জন্য পুলিশের বাইরে যে আলাদা সংস্থা গঠন দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো তা গঠনের জন্য কোনো সুপারিশ নেই৷ছবি: Rajib Dhar/AP/picture alliance

২২ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরকে ৯টি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য চিঠি দেয়া হয়৷ সেগুলো কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তারও একটি অগ্রগ্রতি প্রতিবেদন তৈরি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর৷

১. রাতের বেলায় (সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়) গৃহ তল্লাশির ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ম্যাজিস্ট্রেট, স্থানীয় সরকারের একজন প্রতিনিধি বা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে৷

২.থানায় মামলা দায়ের এবং এফআইআর গ্রহণ ও তদন্ত কঠোরভাবে সার্কেল অফিসার (এএসপি সার্কেল) ও পুলিশ সুপার নিয়মিত তদারকি জারি রাখবেন৷

৩. ভুয়া ও গায়েবি মামলায় অনিবাসী (বাংলাদেশে অবস্থান করছেন না), মৃত ও নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য করতে হবে৷

এই তিনটি সুপারিশ ও নির্দেশনার ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদনে ‘নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে,' বলা হয়েছে৷

৪. বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে  চূড়ান্তভাবে দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসাবে উপস্থাপন করা যাবে না৷

পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, ‘নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য সকল ইউনিটকে জানানো হয়েছে৷'

৫. থানায় জিডি গ্রহণ বাধ্যতামূলক৷ কোনোভাবেই জিডি গ্রহণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে না৷

পুলিশ সদর দপ্তরেরর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব থানায় পর্যায়ক্রমে অনলাইন জিডির কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এর ফলে আবেদনকারী সরাসরি থানায় না গিয়েও জিডি করতে পারবেন৷ ফলে জিডি প্রত্যাখ্যানের সুযোগ থাকবে না৷

৬. মামলার এফআইআর গ্রহণে কোনো অনীহা বা দেরি করা যাবে না৷

পুলিশ সদর দপ্তর বলছে,  এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ এছাড়া অনলাইনে এফআইআর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে৷ পুলিশ সদর দপ্তর অনলাইন এফআইআর চালুর জন্য ফৌজদারী কার্যবিধির সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে৷

৭. চাকরি প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, শিক্ষা সনদপত্র, ট্রান্সক্রিপ্ট, মার্কশিট ইত্যাদি যাচাই বাছাই করার দায়িত্ব নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পুলিশ এই ভেরিফিকেশনে অংশ নেবেন৷

এই নিয়ে জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চ (ডিএসবি) ম্যানুয়াল সংশোধনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে৷

৮. চাকরির জন্য সকল পুলিশ ভেরিফিকেশন দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে৷

পুলিশ সদর দপ্তর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে৷

৯. মামলা দায়ের, রেকার চার্জ করা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মনিটরিং-এর ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে৷ পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে৷

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জনিয়েছেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরপত্তা বিভাগ থেকে চিঠি দেয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে৷

তবে পুলিশের সাবেক আইজি মো. নূরুল হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘এগুলো কোনো মৌলিক সংস্কার না৷ এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিরও দরকার নাই৷ সংস্কার কমিশনও দরকার নাই৷ এগুলো পুলিশ এমনিতেই করতে পারে৷ আসল সংস্কার হলো স্বাধীন পুলিশ কমিশন৷ যা পুলিশকে রাজনীতিসহ বিভিন্ন চাপ থেকে বাঁচিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেবে৷''

‘জুলাই-আগস্টে পুলিশের যে ভূমিকা দেখেছি তাতে আমাদের টার্গেট ছিলো পুলিশকে জনবান্ধব করা’: নাসির উদ্দিন এলান

This browser does not support the audio element.

পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠনের লক্ষ্য

পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠনের মূল লক্ষ্য ছিলো পুলিশকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলা ও জবাবদিহির আওতায় আনা৷ একই সঙ্গে পুলিশকে রাজনৈতিক ও ব্যক্তির স্বার্থে ব্যবহার বন্ধ করা৷ ১ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়৷ ১১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ২২১টির মতো সুপারিশ ও প্রস্তাব আছে৷ এগুলোকে তারা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে ভাগ করেছেন৷ এরমধ্যে পুলিশ সংক্রান্ত ২২টি আইনের সংশোধন ও পরিমার্জনের কথা বলা হয়েছে৷

কমিশন যেসব সুপারিশ করেছে তার মধ্যে আছে গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন৷ ফৗজদারি কার্যবিধিসহ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন, আটক ব্যক্তি বা রিমান্ডে নেয়া আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিটি থানায় কাঁচের ঘেরাটোপ দেওয়া ‘জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ' তৈরি৷

নারী আসামিকে শালীনতার সঙ্গে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ৷ তল্লাশির সময় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিতে না চাইলে অথবা সার্চ ওয়ারেন্ট না থাকলে জরুরি প্রয়োজনে তা চালু করা৷ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেওয়ার অপচর্চা বন্ধ করা, বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন না করা৷

উন্নত বিশ্বে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে যেসব প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করা হয় তা বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ ধাপে বল প্রয়োগ করা৷ এই ধাপগুলো জাতিসংঘ কর্তৃক বল প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হয়েছে৷ এতে ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির ঝুঁকি এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে৷

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরাসরি সব পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা৷ পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও জনবান্ধব পুলিশ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে র‌্যাবের অতীত কার্যক্রম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা পুনর্মূল্যায়ন৷

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন৷

একটি  ‘পুলিশ কমিশন' প্রস্তাব করা হয়েছে৷ তবে পুলিশ কমিশন গঠন, কার্যপরিধি, সাংবিধানিক বা আইনি বাধ্যবাধকতা, আইনে অন্তর্ভুক্ত বিষয়াদি বিচার-বিশ্লেষণ ও যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে কমিশন মত দিয়েছে৷

ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য একটি বিশেষায়িত দল গঠন করা, যাদের তদন্ত সংক্রান্ত ইউনিট ও থানা ব্যতীত অন্যত্র বদলি করা যাবে না৷

পুলিশের দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিটি থানা বা উপজেলায় একটি ‘সর্বদলীয় কমিটি' গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে, যারা ওয়াচডগ বা ওভারসাইট বডি হিসেবে কাজ করবে এবং দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে৷

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, পদায়ন, বদলি এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠাকে গুরুত্ব দেয়া এবং সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে৷ এছাড়া পুলিশের আবাসন সমস্যাসহ আরো কিছু সুযোগ সুবিধার সুপারিশ করা হয়েছে৷

জনকেন্দ্রিক ও জনবান্ধব পুলিশিং করার জন্য নিয়মিত টাউন হল সভা, নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন,একদিন পুলিশ হয়ে দেখুন শিরোনামে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ, সেবামূলক ও জনবান্ধব কার্যক্রম বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে৷

পুলিশে কী কী সংস্কার হবে?

20:06

This browser does not support the video element.

সংস্কারে বাধা কোথায়?

কিন্তু কমিশনের প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে তারা যে পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছে তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিন্নমত জানিয়েছে৷ আর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ও বিচারের জন্য পুলিশের বাইরে যে আলাদা সংস্থা গঠন দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো তা গঠনের জন্য কোনো সুপারিশ নেই৷

পুলিশে এখন কর্মরত কর্মকর্তারাও চান একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন৷ এনিয়ে গত ১৭ মার্চ পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো আলোচনার জন্য ঐকমত্য কমিশনের চলতি আলোচনায় যুক্ত করা হয়নি৷ পুলিশের সাবেক আইজি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘‘এ থেকেই বোঝা যায় তারা পুলিশের সংস্কার কতটা চান বা কতটা গুরুত্ব দেন৷ আসলে পুলিশ সংস্কারের মূল বিষয়ই হলো একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা৷ সেটা করা গেলে পুলিশকে রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালীদের অপব্যবহার বন্ধ হবে৷ সেটা না করে অন্য কিছু করলে আসলে কোনো সংস্কার হবে না৷''

সংস্কার কমিশনের ছাত্র প্রতিনিধি মো. জারিফ রহমান বলেন, ‘‘আমরা কমিশনের সবাই পুলিশ কমিশনের ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত হয়েছি৷ কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ আপত্তি জানিয়েছে৷ প্রতিবেদনে সেই কথা আছে৷''

জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে পুলিশের হাতে বেশি মানুষ নিহত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘সবার আগে দরকার ছিলো পুলিশের সংস্কার৷ কিন্তু সেটাকে গুরুত্বই দেয়া হলো না৷ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় পুলিশ কমিশনের সুপারিশ না থাকায় আমি আশাহত হয়েছি৷ এটা জুলাই স্পিরিটের সাথে গাদ্দারী৷ আমার প্রশ্ন তাহলে আমাদের কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেন (সাবেক সচিব) ঐকমত্য কমিশনে কেন আছেন? তিনি সেখানে বসে কী করছেন?''

এই প্রশ্নের জবাব পেতে সফর রাজ হোসেনকে বার বার ফোন মেসেজ পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি৷

‘পুলিশের মৌলিক সংস্কার হলো পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার বন্ধ করা’: নূর খান

This browser does not support the audio element.

তবে কমিশনের আরেক সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরপত্তা বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব এবং বর্তমানে বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু সাদ মমতাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘প্রতিবেদন দেয়ার পর তো আমাদের কোনো কাজ নাই৷ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের৷ তবে আমি যতদূর জানি আমাদের সুপারিশের কিছু কিছু বাস্তবায়ন হচ্ছে যেগুলো পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে সরাসরি বাস্তবায়ন সম্ভব৷''

পুলিশ সদর দপ্তর যে ৯টি বিষয় নিয়ে কাজ করছে এবং  বিভিন্ন পর্যায়ে নির্দেশ পাঠিয়েছে তা বাস্তবে কতটা হচ্ছে তা জানার জন্য ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে দেশের কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপারদের ফোন করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ‘‘আমরা কিছু নির্দেশনা পেয়েছি৷ তবে এগুলো সংস্কার কমিশনের সুপারিশের অংশ কীনা তা আমাদের বলা হয়নি৷ এই ধরনের নির্দেশ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রায়ই আমাদের কাছে আসে৷''

এ নিয়ে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলমের কাছে জানতে ফোন করলে তিনি কোনো মন্তব্যে করতে রাজি হননি৷ 

সংস্কার কমিশনের ১১ সদস্যের একজন হলেন মানবাধিকার কর্মী নাসির উদ্দিন এলান৷ তিনি বলেন,‘‘আসলে আমরা জুলাই-আগস্টে পুলিশের যে ভূমিকা দেখেছি তাতে আমাদের মূল টার্গেট ছিলো কীভাবে পুলিশকে জনবান্ধব করা যায়৷ সেখানে আমরা যে সুপারিশ করেছি তা অধ্যাদেশের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব ছিলো৷ কিন্তু সরকার তা কেন করছে না সেটা আমি বলতে পারবো না৷ আর আমরা নানা কারণে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের সুপারিশ শেষ পর্যন্ত করিনি৷ আমরা একটা  পুলিশ কমিশনের কথা বলেছি৷''

মানবাধিকার কর্মী ও গুম কামিশনের সদস্য নূর খান বলেন, ‘‘পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন জটিল কাজ নয়৷ কিন্তু এটা বাস্তবায়ন না হলে পুলিশে যেমন শৃঙ্খলা ফিরবেনা৷ তেমনি পুলিশের প্রতি নাগরিকদের আস্থাও ফিরবে না৷ পুলিশের মৌলিক সংস্কার হলো পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার বন্ধ করা৷ এটা না করা গেলে আর কোনো সংস্কারাই কাজে আসবে না৷''

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন,  ‘‘এখনো পুলিশকেরাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চায়বলেই স্বাধীন পুলিশ কমিশনে আগ্রহ নেই৷ পুলিশকে আসলে তারা প্রভাবমুক্ত রাখতে চায় না৷ আর এই সংস্কার করতে হলে যোগ্য লোক দরকার৷ সেটা নেই বলেই হচ্ছে না৷''

কমিশন গঠনে পর তাদের পক্ষ থেকে ‘কেমন পুলিশ চাই?' শিরোনামে একটি জরিপ করা হয়েছিলো৷ সেই জরিপেও পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অবাসন চেয়েছেন জরিপে অংশ নেয়া নাগরিকরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ