1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বাস্থ্যকর্মীরা সবার আগে পাবেন ভ্যাকসিন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ অক্টোবর ২০২০

বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন এলে সবার আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের তা দেয়া হতে পারে৷ এরপর পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ যারা জনগনের সেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত তাদের দেয়া হবে৷

Russland I Grippeimpfung in Moskau
ছবি: picture-alliance/dpa/Tass/V. Prokofyev

এ বিষয়ে সরকারের কাছে একটি নীতিমালা দাখিল করেছে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যার কমিটি, জানিয়েছেন কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ৷ নীতিমালায় করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, পরিবহণ ও বিতরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন আনলেই হবে না, এর ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কাদের প্রথম দেয়া হবে, কারা দিবেন, সংরক্ষণ ও পরিবহন কীভাবে করা হবে সেগুলো পরিকল্পনায় থাকা জরুরি৷’’

টেকনিক্যাল কমিটির দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী, সবার আগে ভ্যাকসিন পাবেন করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিতরা৷ তারপর পাবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তা যারা মানুষের সরাসরি সংস্পর্শে কাজ করেন৷ এরপর যেসব শিশু দীর্ঘ সময় বাড়িতে আছে তাদের দেয়া হবে৷ তারপর অগ্রাধিকার পাবেন ৬৫ বছরের উপরে যাদের বয়স সে-সমস্ত নাগরিক৷ পর্যায়ক্রমে বাকিরাও টিকার আওতায় আসবেন৷

ভ্যাকসিন প্রদানে কয়েক কোটি আলাদা ‘ডিসপোজেবল সিরিঞ্জও’ লাগবে৷ সেগুলো আনার জন্যেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ সেই সঙ্গে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ইপিআই-এর ‘কোল্ড চেইনকেও' সারাদেশে টিকা পরিহন ও সংরক্ষণের কাজে লাগানো হবে৷ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘‘টিকাদান কর্মীর সমস্যা হবে না৷ আমাদের একবারে সাড়ে পাঁচ কোটি হাম রুবেলার টিকা দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে৷ আড়াই লাখেরও বেশি কর্মী আছে৷ আরো প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে৷’’

ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

কত ভ্যাকসিন লাগবে

বাংলাদেশে মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক বলেন, ‘‘৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে৷ তাই আমাদের ১২-১৩ কোটি ভ্যাকসিন লাগবে৷ সরকার অনেকগুলো সোর্স থেকে ভ্যাকসিন নেয়ার চেষ্টা করছে৷ তবে এত ভ্যাকসিন একসঙ্গে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না৷ কারণ সব দেশই তো ভ্যাকসিন চাইবে৷’’

কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মনে করেন ভ্যাকসিনের চাহিদা বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট করাতে হবে৷ ‘‘আসলে কত ভ্যাকসিন লাগবে তা নির্ণয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি৷ এজন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট লাগবে৷ সেটা আমরা শুরু করতে বলেছি৷ আর আগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে কারা ভ্যাকসিন পাবেন তারও একটা গাইডলাইন দিয়েছি৷ এছাড়া ভ্যাকসিন কর্মী, ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও পরিবহনের ব্যাপারেও আমরা পরামর্শ দিয়েছি৷ কারণ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই ভ্যাকসিন পাঠাতে হবে,’’ বলেন তিনি৷ 

এসব বিষয় নিয়ে চেষ্টা করেও রোববার স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের সাথে কথা বলা যায়নি৷ তবে তিনি এর আগে জানিয়েছিলেন, ‘‘বাংলাদেশ এরই মধ্যে চীন ছাড়াও রাশিয়ার সাথে ভ্যাকসিনের জন্য কথা বলেছে৷ আমরা সারা দুনিয়ায় সেখানেই ভ্যাকসিন হচ্ছে সেখানেই চিঠি দিচ্ছি, পত্রালাপ করছি, যোগাযোগ করছি৷ যেখানেই আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই আমরা ভ্যাকসিন আনব৷ প্রয়োজনে কিনে আনব৷ এজন্য আমরা টাকাও প্রস্তুত রেখেছি৷’’

ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়া, ভারত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে বাংলাদেশে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি৷

এদিকে অনেক আলোচনার পরও বাংলাদেশে চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এর বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে আছে৷ তবে ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, ‘‘ট্রায়াল না হলেও চীনা ভ্যাকসিন পেতে কোনো সমস্যা হবে না৷ এই বিষয়ে তাদের সাথে কথা হয়েছে৷’’

করোনার ভ্যাকসিন আবিস্কারে বিশ্বে ১৭০ টিরও বেশি উদ্যোগ রয়েছে৷ এর মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধু রাশিয়া দেশটির একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে৷ এছাড়া চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনের তৃতীয় বা শেষ ধাপের  ট্রায়াল চলছে৷

নজরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

ভ্যাকসিনের জন্য তহবিল

জানা গেছে, ভ্যাকসিনের জন্য এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল এরইমধ্যে সরকার গঠন করেছে৷ ভ্যাকসিন কিনতে খরচ হতে পারে আট হাজার কোটি টাকা৷ করোনার জন্য বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড আলাদা রাখা হয়েছে৷ প্রয়োজনে সেখান থেকেও টাকা কাজে লাগানো হবে৷ সেই সঙ্গে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাশের জন্য ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া যাবে বলেও সরকারের আশা৷

বাংলাদেশের দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকার ৫৫ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷ এরমধ্যে ৪০ কোটি ডলার বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাসট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার৷ বাকি অর্থ আসবে নিজস্ব অর্থায়ন থেকে৷

এই বিষয়ে বিএমএর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক হাজার কোটি টাকা ভ্যাকসিনের জন্য বরাদ্দ রেখেছেন৷ বাকি টাকা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে৷ এছাড়া কোভেক্স থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে৷’’ উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পৌঁছাতে কোভ্যাক্স নামের একটি জোট গঠন করা হয়েছে৷ এর অধীনে রয়েছে ১৭২ টি দেশ৷ 

এই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জানুয়ারি নাগাদ রাশিয়ার কাছ থেকেই ভ্যাকসিন পাওয়া যেতে পারে৷ ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, ‘‘সেক্ষেত্রে টাকা কোনো সমস্যা হবে না বলে আমাদের জানানো হয়েছে৷’’ পুরো বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মনিটর করা হচ্ছে বলে জানান ডা. এহতেশামুল হক৷

দেখুন আগস্টের ছবিঘর...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ