1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটায় কাজ পায় কারা?

ফয়সাল শোভন, সমীর কুমার দে
১ মার্চ ২০২১

বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের জন্য আলোচিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরেফিরে কাজ পায় স্বাস্থ্যখাতে৷ কারসাজি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গত অর্থবছরেও কয়েক কোটি টাকার কাজ বাগিয়েছে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান৷

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৫২৭৭টি ডেঙ্গু ডিভাইসের মধ্যে ১০০টি সরবরাহ করেই কার্যাদেশের পুরো ১৯ লাখ টাকা তুলে নেয় মেডিটেকছবি: Mortuza Rashed

সেইসব কাজেও তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে৷

২০১৯-২০ অর্থবছরের ঢাকার নয়টি হাসপাতালের কেনাকাটা নিয়ে সরকারের অডিট রিপোর্টে এমন কয়েকটি কোম্পানির নাম এসেছে যারা বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের কারণে আলোচিত এবং যাদের বিরুদ্ধে দুদকেও তদন্ত চলছে৷ কোন না কোনভাবে ফাঁক ফোকর বের করে তারা কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল৷ তবে স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নানের দাবি এসব চিত্র আগের, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন৷

কেনাকাটায় সিন্ডিকেট
বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে আলোচিত একজন ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু৷ ২০১৬ সালে ফাঁস হওয়া পানামা পেপার্সে তার নাম আসে৷ ২০১৩ সালে মুগদা জেনারেল হাসপাতালের কেনাকাটাতে মিঠু ও তার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম পাওয়া যায় সরকারি নিরীক্ষায়৷ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করেই কয়েকশ কোটি টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে৷ স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটায় বিভিন্ন সময় অনিয়ম, দুর্নীতির জন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার৷ কিন্তু তিনি ও তার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান লেক্সিকোন মার্চেনডাইজ বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকেছেন৷ 

শুধু রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালেই গত অর্থবছরে কয়েক কোটি টাকার কাজ পেয়েছে লেক্সিকোন৷ যথারীতি সেগুলোতে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনাও ঘটেছে৷ অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী ৭৫ টাকার এক্সরে ফিল্ম ১৩৪ টাকায়, ১০৭ টাকারটি ২০৯ টাকায় আর ১২৫ টাকারটি প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহ করেছে ২৪৪ টাকায়৷ এভাবে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাজার দরের চেয়ে ৩৮ লাখ টাকা বেশি নিয়ে এই পণ্যগুলো তারা সরবরাহ করেছে৷ একইসঙ্গে বিভিন্ন রি এজেন্ট সামগ্রী (রাসায়নিক উপকরণ) সরবরাহে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৯৮ লাখ টাকা বেশি নিয়েছে লেক্সিকোন৷ এক্ষেত্রে যোগসাজশে দরপত্র দাখিলের আপত্তি তোলা হয়েছে অডিট রিপোর্টে৷

মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গত অর্থবছরে কয়েক কোটি টাকার কাজ পেয়েছে লেক্সিকোন, যেগুলোতে যথারীতি ব্যাপক অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে৷ছবি: Mortuza Rashed

২০২০ সালের মে মাসে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) প্রয়াত পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদউল্লাহ জনপ্রশাসন সচিবকে লেখা চিঠিতে মিঠুর অব্যাহত অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন৷ দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত চিঠির বক্তব্য অনুযায়ী, মোতাজজেরুল ওরফে মিঠু সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে হাসপাতালের বাজেট থেকে শুরু করে কেনাকাটার পরিকল্পনা তৈরি করেন৷ তারপর সেই তালিকা ধরে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে দিয়ে জিনিসপত্র কেনান৷ নামে-বেনামে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে তার৷ ঘুরেফিরে এই প্রতিষ্ঠানগুলোই দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়৷ প্রতিবছর আবার এসব প্রতিষ্ঠানের নামও বদলে যায়৷

তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেড এর কথা উল্লেখ করেন শহীদুল্লাহ৷ এর পরিচালক হুমায়ূন কবির মোতাজজেরুলের লেক্সিকোনেই কর্মরত ছিলেন বলেও জানান তিনি৷

লেক্সিকোন ও মেডিটেকের যোগসূত্র পাওয়া যায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালের এক দরপত্রের কার্যাদেশেও৷ ২০১৯ সালের নভেম্বরে পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ ১৭ হাজার টাকার রি-এজেন্ট (রাসায়নিক) সামগ্রী সরবরাহের জন্য লেক্সিকোন মার্চেনডাউজ বরারবর চুক্তি স্বাক্ষরের একটি নোটিশ জারি করে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল৷ কিন্তু ২৩ অক্টোবর চুক্তিটি স্বাক্ষর হয় মেডিটেক ইমেজিং এর সাথে৷ আবার চুক্তি মেডিটেক এর সাথে হলেও রি-এজেন্ট সরবরাহের আদেশ দেয়া হয় লেক্সিকোন মার্চেনডাউজকেই৷ অডিট অনুযায়ী, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠানটিকে এই কাজ প্রদান ও বিল পরিশোধ করেছিল বেশ কয়েক ধাপে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে৷ 

দৃশ্যপটে মেডিটেক

ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোতে গত এক বছরে অনেকগুলো কার্যাদেশ পায় মেডিটেক৷ সেসব কেনাকাটায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে৷ অডিট অনুযায়ী, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে এক একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র তারা সরবরাহ করেছে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা দরে৷ যেগুলোর প্রকৃত বাজার মূল্য ছিল মাত্র ৭৮ হাজার টাকা৷ এভাবে আটটি যন্ত্রে তারা সাত লাখ ৬৮ হাজার টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে৷ একই হাসপাতালে একটি সিবিসিটি যন্ত্র তারা বাজারদরের চেয়ে এক কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা বেশিতে সরবরাহ করেছে৷

ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে ৭৮ হাজার টাকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র মেডিটেক সরবরাহ করেছে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা দরেছবি: Mortuza Rashed

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৫২৭৭ টি ডেঙ্গু ডিভাইসের মধ্যে ১০০টি সরবরাহ করেই কার্যাদেশের পুরো ১৯ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে তারা৷ কোনো পণ্য সরবরাহ না করেই দুই কোটি ৯৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে এমন উদাহরণও আছে৷ যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেয়াদোত্তীর্ণ যাতে না হয় সেজন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ধাপে ধাপে সেগুলো গ্রহণ করবে তারা৷

মেডিটেকের ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির মালিক হিসেবে আরিফুল বারি চৌধুরী ও কাজী শাহ আলমের নাম দেয়া৷ এরমধ্যে আরিফুল বারি চৌধুরী পেশায় ডাক্তার ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডিরত আর কাজী শাহ আলমকে সুইডেন প্রবাসী ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷

দরপত্রে কারসাজি

মেডিটেক ছাড়াও ঢাকার হাসপাতালগুলোর কেনাকাটার অনিয়মে ঘুরেফিরে বেশ কিছু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে৷ কারসাজি করে একই মালিকানার নাম সর্বস্ব একাধিক প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিয়ে কাজ বাগিয়ে নেয়ার প্রমাণও মিলছে৷

২০১৯ সালের অক্টোবরে সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, ঔষধ, লিলেন ও আসবাবপত্র সরবরাহের তিনটি কার্যাদেশ দেয় মুগদা জেনারেল হাসপাতাল৷ ১২টি দরপত্রের মধ্যে তিনটি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়৷ সেগুলো হল মেসার্স অরবিট ট্রেডিং, মেসার্স ইউরো ট্রেডিং, আর মেসার্স গোল্ডন ট্রেডিং৷ নিরীক্ষায় দেখা যায় তিনটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্রেরই প্রাইস শিডিউল একই হাতের লেখা৷ আবার প্রতিষ্ঠানগুলোর ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রে মালিক আলাদা হলেও তাদের ঠিকানা একই৷ যা বলে দিচ্ছে তিনটি প্রতিষ্ঠান আসলে একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং দর দাখিল করা হয়েছে যোগসাজশের মাধ্যমে৷ তাদের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতাও যেই দর দাখিল করেছে সেটিও বাজার মূল্যের চেয়ে কয়কগুণ৷ যেমন ইউরো ট্রেডিং ৩৫০ টাকার কম্বল সরবরাহ করেছে ২৪১৮ টাকাতে৷ সব মিলিয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে কার্যাদেশ পাওয়া তাদের দুইটি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত পণ্যে দেড় কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে হাসপাতালের৷ এইসব বিষয়ে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে বর্তমান পরিচালক কথা বলতে রাজি হননি৷

দুদকের অনুসন্ধান
অভিযোগ আছে বিভিন্ন সিন্ডিকেট বা চক্র তৈরি করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ বাগিয়ে নেয়৷ এমনকি অনেক সময় কাজের চাহিদাপত্রও তারাই তৈরি করে দেয়৷ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের প্রয়াত পরিচালক মো. শহীদউল্লাহ জনপ্রশাসন সচিবকে লেখা চিঠিতে বলেন, ২০১৯ সালে ২২ নভেম্বর সেখানে যোগ দেয়ার পর তাকে একটি কেনাকাটার তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব তাকে মৌখিকভাবে জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার ছেলের অনুরোধ আছে তাদের তালিকা অনুযায়ী কেনাকাটার ব্যবস্থা করতে হবে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলামকে জুনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়েছেন৷ মো. শহীদউল্লাহর চিঠিতে উল্লিখিত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি কখনোই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পক্ষে বা এমন কোন তালিকা ওনাকে ধরিয়ে দেইনি৷ এমনকি মৌখিকভাবেও এরকম কোন বিষয় তাকে বলিনি৷ কারণ আমাদের তখন দরকার ছিল যেসব জিনিস দ্রুত কিনতে হবে, মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে যেগুলো ফিল্ডের চাহিদা ছিল সেগুলো কিনতে বলা হয়েছিল৷ ...তালিকা বলতে সেটা বিভিন্ন হাসপাতালের কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের জন্য ১৭ বা ১৮ রকমের যন্ত্রপাতি এবং সম্ভবত তখন পর্যন্ত হাসপাতাল ছিল ঢাকা বেল্ট, এগুলোর জন্য যে যন্ত্রপাতি লাগবে তার জন্য আমরা অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছিলাম, সেটা যখন কিনতে পারেনি আবারো তখন কেনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে রিমাইন্ডার পাঠানো হয়েছিল৷ এটুকুই আমার মনে আছে৷’’

জবাবদিহিতার অভাবেই এমন অবস্থা হচ্ছে: বিএমএ এর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল

This browser does not support the audio element.

স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটার দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তদন্ত করে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক৷ তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে খবর বের হয়েছে৷ 

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুদক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ১৪ টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও সেগুলোর মালিকের নাম পাঠায়৷ তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুনে এসে নামগুলো কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়৷ কিন্তু সেই তালিকায় মিঠু বা তার প্রতিষ্ঠান ছিল না৷ ছিল না মেডিটেক ইমেজিং এর নামও৷

তবে গত জুলাইতে স্বাস্থ্যখাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচ ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)৷ এরমধ্যে লেক্সিকোন মার্চেনডাইজের মালিক মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু ছিলেন৷ তিনি উপস্থিত না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন জানিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি পাঠান৷ গত ১১ ফেব্রুয়ারি এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে মিঠুর বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর পুরনো একটি তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট৷ মিঠুর আইনজীবী হারুর উর রশীদ বলেন, ২০১৬ সালে মিঠুর সম্পদ নিয়ে মামলার প্রেক্ষিতে দুদক একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল৷ এখন এর উপর রুল দেয়া হয়েছে৷ আদালত সেটি পরীক্ষা করে দেখার কথা বলেছে৷ মিঠু করোনা মহামারির আগে থেকে দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানান তিনি৷ এই বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী মোঃ খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘‘হাইকোর্টের আদেশ আমরা এখনও পাইনি৷ আদেশ পেলে আমরা (দুদকে) পৌঁছে দিব৷ রুল দিয়েছে এখনও কোন চূড়ান্ত আদেশ দেয়নি৷’’ জনাব খান আরো বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি নিয়ে (দুদকে) অনেকগুলো মামলা চলছে সঠিক সংখ্যাটি বলা এখন সম্ভব নয়৷’’ 

সেগুলোতে তো অবশ্যই অনিয়ম ছিল, ছিল বলেই এখন সব পালিয়েছে: স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান

This browser does not support the audio element.

অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না কেন?
স্বাস্থ্য খাতে বাজেট ও কেনাকাটার জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ পেরুতে হয়৷ এক্ষেত্রে অনিয়মের জন্য সবগুলো ধাপের জবাবদিহিতার অভাবকে দায়ী করছেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বিএমএ এর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল৷ তিনি বলেন, ‘‘সচিব পর্যন্ত, মন্ত্রী পর্যন্ত ফাইল যায়৷ মন্ত্রী থেকে শুরু করে সবচেয়ে নীচে যিনি কেনাকাটা করেন, টোটাল জায়গাটাতেই কোন জবাবদিহিতা নাই৷ জবাবদিহিতার অভাবেই এমন অবস্থা হচ্ছে৷ একজন পরিচালকের যদি অধিদপ্তরের কাছে জবাবদিহিতা থাকে, মহাপরিচালকের যদি মন্ত্রণালয়ে জবাবদিহিতা থাকে আর সচিবের যদি মন্ত্রীর কাছে জবাবদিহিতা থাকে তাহলে এমনটা হতো না৷ সেখানে ব্যত্যয় হচ্ছে৷ জবাবদিহিতার জায়গায় কাজ না করতে পারলে এগুলো বন্ধ করা যাবে না৷’’

তার মতে যেকোন একটি ঘটনার প্রতিটি ধাপে নীচ থেকে উপর পর্যন্ত কে কে ছিলেন তা চিহ্নিত করে যদি শাস্তির আওতায় আনা যায় তাহলে আর অনিয়ম হবে না৷

তবে স্বাস্থ্য খাতের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভিন্ন বলে দাবি করেন স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান৷ তিনি নিরীক্ষার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘অডিট রিপোর্টটি ২০১৯-২০ সালের কেনাকাটার৷ আর আমি ২০২০ সালের মাঝামাঝি এখানে যোগদান করেছি৷ এই রিপোর্টটা আমি আসার আগের৷ সেগুলোতে তো অবশ্যই অনিয়ম ছিল৷ ছিল বলেই এখন সব পালিয়েছে৷’’ বর্তমানে যেকোন অনিয়ম নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি৷ বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে এখন অনিয়ম যারা করে তাদের প্রবেশ সম্ভব না৷ আগের চেয়ে কেনাকটায় এখানে একশো থেকে দেড়শো কোটি টাকা সাশ্রয়ও হয়েছ৷ সেই সঙ্গে অডিট প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে৷

গত ২৮ সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ