স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে পাকিস্তানে ফিরছেন নওয়াজ শরীফ
২১ অক্টোবর ২০২৩
পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে চার বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষ করে আজ শনিবার দেশে ফিরছেন৷
বিজ্ঞাপন
সাধারণ নির্বাচনের তিন মাস আগে দেশে ফিরছেন দুর্নীতির দুটি মামলায় ১৪ বছর কারাদণ্ড পাওয়া শরীফ৷
দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে যেন তাকে গ্রেপ্তার করা না হয় সেজন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার আদালত তাকে ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ দিয়েছে৷ ঐদিন আদালতে শরীফের হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে৷
২০১৭ সালে শেষবার ক্ষমতাচ্যুত হন শরীফ৷ এরপর সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৯ সালে লন্ডন চলে গিয়েছিলেন৷ আদালত তাকে চিকিৎসা সেবা নিতে সীমিত সময়ের জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল৷
লন্ডনে থেকেই নওয়াজ শরীফ ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং সফল হন৷ ফলে ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান৷ তিনিও এখন জেলে আছেন৷
পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর কুকুরদের প্রশিক্ষণের এক ঝলক
02:03
ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজের ছোট ভাই শাহবাজ শরীফ৷
আগামী বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা৷ দেশটিতে ইমরান খানের এখনও অনেক জনপ্রিয়তা আছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের দ্য উইলসন সেন্টারের ‘সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের' পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান৷ তিনি বলেন, ইমরান খানের বিশাল ভোটব্যাংকের কারণে শরীফের দলের জনপ্রিয়তা কমেছে৷
২০১৭ সালে শরীফ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৮ শতাংশ৷ মূল্যস্ফীতি ছিল মাত্র চার শতাংশ৷
এদিকে, গত সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার গতবছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি ছিল৷ আর এই বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই শতাংশের কম হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে৷
লেখক ও বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা মনে করছেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে শরীফ নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করতে পারেন৷
তবে নওয়াজ শরীফ ও ইমরান খান দুজনই সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স)
পাকিস্তানে শিল্পীদের ট্যাবু ভাঙার লড়াই
পাকিস্তানে নারী এবং এলজিবিটিকউদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন তারা৷ ফলে নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের৷ শেহজিল, জয়নাব এবং আহমার কিভাবে সব বাধা জয় করছেন, পিএএফ কিভাবে তাদের সহায়তা করে, তা জেনে নিন ছবিঘরে...
ছবি: Zainab Aziz
সাদা-কালোয় সমাজের ‘ভণ্ডামি’
জয়নাব আজিজের তেলরংয়ের কাজে সাদা-কালোর প্রাধান্যই চোখে পড়ে বেশি৷ জয়নাব জানান, সাদা আর কালোর বৈপরিত্য দিয়ে আসলে সমাজে বিরাজমান ভণ্ডামিগুলোই প্রতীকী রূপে তুলে ধরতে চান৷ কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ডিজাইন এবং ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস-এ পড়াশোনা করা জয়নাব আরো জানান, পাকিস্তানে নানা বাধাকে জয় করে শিল্পচর্চা করতে হয়, তাকেও নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে৷
ছবি: Zainab Aziz
‘ওসব দেখতে নেই, ওসব নিয়ে ভাবতে নেই!’
জয়নাব বলেন,‘‘আমার কাজ নারীর জীবন নিয়ে৷ নারীরা যেভাবে নিজেদের গোপনীয়তা এবং বন্ধনের কথা ভাগাভাগি করেন, সেই দিকটাও তুলে ধরি আমি৷ আমি নারীর শরীরকে সমাজের এমন এক ল্যান্ডস্কেপ হিসেবে দেখি, যা আসলে সমাজের বহু ধরনের গল্প ধারণ করে৷’’ ওপরের ছবিতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে নারী কিভাবে সমাজের সব আতঙ্ক জাগানো বিষয়গুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখে, তা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন জয়নাব৷
ছবি: Zainab Aziz
রং-তুলিতে নারীর শক্তি
শেহজিল মালিক তার কাজের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুপরিচিত৷ পুরুষশাসিত সমাজে যে নারীরা লড়াই করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছেন, বিশেষত তাদেরই রং-তুলিতে তুলে ধরেন শেহজিল৷ পাকিস্তানে নারীর প্রতি সহিংসতা নিত্য দিনের বাস্তবতা৷ এই বাস্তবতাও উঠে আসে শেহজিলের কাজে৷
ছবি: Shehzil Malik
এলজিবিটিকিউদের শিল্পী
সমলিঙ্গের যৌনতা পাকিস্তানে আইনত নিষিদ্ধ৷ ফলে এলজিবিটিকিউদের সব সময় নানা কৌশলে টিকে থাকতে হয়৷ তাদের এই সংগ্রামের দিকটাই তুলে ধরেন আহমার ফারুক৷ ওপরের ছবিতে এমন তিন সমকামীকে দেখানো হয়েছে, যারা সমাজের নিষ্ঠুরতা থেকে বাঁচতে প্রকৃত সম্পর্ক গোপন করে বাইরে স্রেফ বন্ধু হিসেবে ঘুরে বেড়ান৷
ছবি: Ahmed Farooq
পিএএফ-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা
শেহজিল, জয়নাব এবং আহমার- তিনজনই পাকিস্তান আর্ট ফোরাম (পিএএফ)-এর প্রতি কৃতজ্ঞ৷ পাকিস্তানের উদীয়মান শিল্পীদের সহায়তার জন্য ২০১৪ সালে পিএএফ প্রতিষ্ঠা করেন ইমতিসাল জাফর৷ আহমার ফারুক পিএএফ-এর প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘কখনো সেন্সর না করে আমার কাজগুলো প্রদর্শন করায় আমি পিএএফ-এর প্রতি কৃতজ্ঞ৷’’