বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারের হার ক্রমশ বাড়ছে বলেই জানাচ্ছেন বিভিন্ন মহল৷ বিশেষ করে এক সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির কোনায় খোলা শৌচাগার দেখা যেত৷ এখন সেই অবস্থা অনেকটাই বদলে গেছে৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে স্যানিটেশন কাভারেজ বাড়ছে, রয়েছে বিতর্কও
বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারের হার ক্রমশ বাড়ছে৷ তবে এখনো অনেক মানুষের কাছে এই সুবিধা পৌঁছায়নি৷ ঠিক কত শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহার করছে তা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক৷
ছবি: DW
বেড়েছে টয়লেটের ব্যবহার
একটা সময় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির কোনায় খোলা শৌচাগার দেখা যেত৷ খালের পাশে, পুকুরের কোনায় থাকতো মলত্যাগের স্থান৷ এখন পরিস্থিতি অনেকটা বদলেছে৷ সরকারি হিসাব বলছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবার স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করছে৷
ছবি: DW/K. James
শতাংশের হিসাব
বাংলাদেশে ঠিক কত শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন তার একটা হিসেব পাওয়া যায় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে৷ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে দেওয়া বাজেট বক্তৃতায় জানান, ‘‘আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় ৯০ শতাংশ পরিবারকে স্যানিটেশনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে৷’’
ছবি: DW/A. Chatterjee
তবুও সমালোচনা
তবে অর্থমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেননি এসংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ৷ ওয়াটারএইড বাংলাদেশের ডা. মো. খায়রুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মতামত পাতায় লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ২০১৩ সালের মধ্যে সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল৷’’ কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক অনেক বলেই মনে করেন খায়রুল৷
ছবি: Lalage Snow/AFP/Getty Images
প্রতিশ্রুতি কি পূরণ হয়েছে?
জুন মাসে প্রকাশিত লেখায় খায়রুল অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ের বাজেট বক্তৃতা পর্যালোচনা করেছেন৷ এতে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরে বাংলাদেশে স্যানিটেশনের কভারেজ এক শতাংশ কমেছে৷ খায়রুল ইসলাম তাঁর নিবন্ধে আরেকটি হিসেব দিয়েছেন যার সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের কোন মিল নেই৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের সদ্যপ্রকাশিত যৌথ প্রতিবেদন ২০১৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে উন্নত ল্যাট্রিনের হার ৫৫ শতাংশ৷’’
ছবি: PRAKASH SINGH/AFP/Getty Images
তবে কাজ চলছে
স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও কাজ এগিয়ে চলেছে৷ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ২৪৮টি উপজেলার গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের নিকট টেকসই ও সমন্বিত ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিনসেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন, দূষিত পানি এবং অনিরাপদ স্বাস্থ্য অভ্যাসের কারণে সৃষ্ট দূষণচক্রের অবসানকল্পে কাজ করছে সংস্থাটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যে কারণে প্রয়োজন স্যানিটেশন
স্যানিটেশনের অভাবের কারণে পৃথিবীতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিশু প্রাণ হারায়৷ যেখানে-সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করলে তা আশেপাশের পরিবেশে এবং পানিতে রোগ, জীবাণু ছড়ায়৷ আর সেই পানি ব্যবহার করলে মানুষের শরীরে দেখা দেয় কলেরা, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ৷ এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিকল্প ব্যবস্থা
স্বল্প খরচে নিরাপদ টয়লেট নিশ্চিতে চলছে নানাবিধ গবেষণা৷ সম্প্রতি জার্মানির বিজ্ঞানীরা এক নতুন ধরনের কমোড আবিষ্কার করেছেন যা ব্যবহার অত্যন্ত সহজ৷ আর তৈরিতে খরচও কম৷ এই কমোড থেকে রোগ, জীবাণু সহজে বাইরে যাবে না৷ বরং এতে থাকা মলমূত্র দিয়ে সার তৈরি সম্ভব হবে৷
ছবি: DW
7 ছবি1 | 7
বাংলাদেশে ঠিক কত শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন তার একটা হিসেব পাওয়া যায় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে৷ গত পাঁচ বছরের বিভিন্ন সময় বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত স্যানিটেশন নিয়ে কথা বলেছেন৷ সংর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে দেওয়া বাজেট বক্তৃতায় তিনি জানান, আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় ৯০ শতাংশ পরিবারকে স্যানিটেশনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে৷
তবে স্যানিটেশন সংক্রান্ত অর্থমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেননি এ সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ৷ ওয়াটারএইড বাংলাদেশের ডা. মো. খায়রুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মতামত পাতায় লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ২০১৩ সালের মধ্যে সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল৷'' কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির কি পূরণ হয়েছে?
গত জুন মাসে প্রকাশিত লেখায় খায়রুল ইসলাম এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন৷ তিনি অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ের বাজেট বক্তৃতা পর্যালোচনা করেছেন৷ এতে দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, গত এক বছরে বাংলাদেশে স্যানিটেশনের কভারেজ এক শতাংশ কমেছে৷ কেননা ২০১২-১৩ সালের বাজেট-বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছিলেন, ‘‘বর্তমানে ৯১ শতাংশ পরিবার স্যানিটেশনের কভারেজের আওতায় এসেছে যা সার্কভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ৷''
খায়রুল ইসলাম তাঁর নিবন্ধে আরেকটি হিসেব দিয়েছেন যার সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের অমিল রয়েছে৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের সদ্যপ্রকাশিত যৌথ প্রতিবেদন ২০১৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে উন্নত ল্যাট্রিনের হার ৫৫ শতাংশ৷''
স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতে কে কতটা সফল হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কাজ এগিয়ে চলেছে৷ এক্ষেত্রে বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাগুলোও ভালো অবদান রাখছে৷ ব্র্যাক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ২৪৮টি উপজেলার গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের নিকট টেকসই ও সমন্বিত ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিনসেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন, দূষিত পানি এবং অনিরাপদ স্বাস্থ্য অভ্যাসের কারণে সৃষ্ট দূষণচক্রের অবসানকল্পে কাজ করছে সংস্থাটি৷
প্রসঙ্গত, স্যানিটেশনের অভাবের কারণে পৃথিবীতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিশু প্রাণ হারায়৷ যেখানে-সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করলে তা আশেপাশের পরিবেশে এবং পানিতে রোগ, জীবাণু ছড়ায়৷ আর সেই পানি ব্যবহার করলে মানুষের শরীরে দেখা দেয় কলেরা, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ৷ এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷