‘গণতন্ত্রের' দাবিতে আন্দোলনকারী হংকংয়ের রাজনৈতিক কর্মী জশুয়া ওয়ংকে আটকের কয়েকঘন্টা পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ৷ শুক্রবার ওয়ংকে আটক করেছিল হংকং পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
এদিকে রাজনৈতিক কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে শনিবার হংকংয়ে অবস্থিত বেইজিং এর লিয়াজোঁ অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিলকরার ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা৷ সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ৷
ছাড়া পাওয়ার পর, ওয়ং-এর রাজনৈতিক দল ডেমোসিস্টো জানায়, পুলিশ তাঁকে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল৷ দলটির পক্ষ থেকে আরো জানানো হয় যে, হংকংয়ের চলমান আন্দোলনের সমর্থক দলটির আটক আরেক সদস্য আগনেস চৌ-কেও মুক্তি দেয়া হয়েছে৷
এ দুই রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে বেআইনিভাবে সমাবেশ করার অভিযোগ আনে পুলিশ৷ আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত মামলাটি মুলতুবি রাখে আদালত৷
এখনো দাবি আদায় হয়নি
হংকংয়ের এ চলমান আন্দোলনের সময়ে পুলিশ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে৷ প্রত্যর্পণ বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রায় মাস তিনেক আগে এ আন্দোলন শুরু হয়৷ প্রবল আন্দোলনের মুখে যদিও প্রস্তাবিত বিলটি প্রত্যাহার করে নেয় হংকং সরকার তারপরও চলতে থাকে এ আন্দোলন৷ গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে আনদোলনকারীরা৷ তবে এখন পর্যন্ত তাঁদের দাবি-দাওয়া পূরণের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ বরং আন্দোলন থামাতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি করছে বেইজিং৷
আরআর/কেএম (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)
হংকং সীমান্তে কেন চীনা সেনা?
হংকং ও চীনের সীমান্তের কাছে শেনঝেনে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন৷ হংকং এ চলমান প্রতিবাদের আবহাওয়ায় কেন এই মহড়া?
ছবি: Reuters/T. Peter
প্রতিবাদের পরিবেশ
গত ১০ সপ্তাহ ধরে হংকং এ চলছে সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ৷ ১৯৯৭ সালের পর থেকে হংকঙে গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে বর্তমানের এই বিক্ষোভ৷ প্রথমে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে বদলের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা হংকং এ সার্বিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে পরিণত হয়৷ গণতন্ত্রের দাবিতে পথে নামা জনতা ইতিমধ্যে স্তব্ধ করেছে হংকংগামী বিমান চলাচলও৷
ছবি: picture-alliance/AP/V. Thian
অপেক্ষায় ট্যাঙ্কার
চীনের ‘পিপলস আর্মড পুলিশ'এর শতাধিক আধাসামরিক ট্যাঙ্ক ও ট্রাকসহ কয়েকশ সামরিক সদস্য বর্তমানে সীমান্তবর্তী শহর শেনঝেনে রয়েছেন৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এর সাথে রয়েছে দু'টি জলকামানও৷
ছবি: Reuters/T. Peter
সামরিক অভিযান?
বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে হংকঙে চীনের সামরিক অভিযানের আশঙ্কার কথা৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতামত, এমনটা হবে না৷ গোটা বিষয়টা আসলেই স্রেফ মহড়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
কেন নয় সামরিক অভিযান?
গত চার দশক ধরে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে বড় অবদান রয়েছে হংকঙের, বলছেন ডয়চে ভেলের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ক্লিফর্ড কুনান৷ তাঁর মতে, অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ চীনে কিছুটা হলেও ধুঁকছে৷ এঅবস্থায় হংকং থেকে প্রাপ্য আর্থিক স্বস্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে চায়না চীন৷ তাই আপাতত সীমান্তেই অবস্থান করছে চীনা সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/T. Peter
আন্তর্জাতিক চাপ?
হংকং চীনের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়৷ চীনা বাজারে লগ্নি করতে চাওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থারা বেইজিং এর কঠোর হংকং-নীতির ফলে বেঁকে বসতে পারে বলে মতামত কুনানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
সামরিক মহড়ায় কী প্রাপ্তি?
বিক্ষোভ সংযত করতে বেইজিং জানিয়েছে যে, এই প্রতিবাদকে তারা দেখছে প্রায় সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য হিসাবে৷ এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবাদকারীদের চাপে রাখতে ও কিছুটা ভয় দেখাতেই এই মহড়ার আয়োজন, মনে করেন নানইয়াং ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজির সামরিক বিশেষজ্ঞ জেমস চার৷