1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যেই এগিয়েছেন

৩ অক্টোবর ২০১৪

আন্দোলনকারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করার আর কোনো উপায় নেই৷ এখন প্রশ্ন হল, কে আগে নতিস্বীকার করবে৷ বেইজিং পিছু হটবে না বলেই মাটিয়াস ফন হাইন-এর ধারণা৷

China Studentenprotest in Hongkong Occupy Central Regenschirme und Polizei
ছবি: Reuters/B. Yip

চীনের কেন্দ্রীয় সরকারই যে ১৯৮৭ সালে হংকংবাসীদের নির্বাচনের অধিকার দানের প্রতিশ্রুতি দেন, সেটাকে ইতিহাসের একটা রসিকতা বলা চলতে পারে৷ এবং বেইজিং যে তার ১৯৯৭ সালে প্রদত্ত সম্মতি থেকে এখন সরে দাঁড়াচ্ছে, সেটাকে ট্র্যাজিক বলা চলতে পারে৷ ‘বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা' হংকং-এর সত্তর লাখ মানুষ যদি নিজেরাই মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রশাসনিক প্রধানকে নির্বাচন করতে চায়, তাতে ক্ষমতাশীল বেইজিং-এর আশঙ্কাটা কোথায়?

হংকং-এর মানুষ চরম মনোভাবের জন্য পরিচিত নন৷ তারা পরিশ্রমী, বাস্তববাদী, উচ্চশিক্ষিত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষ হিসেবেই পরিচিত, যারা প্রায় কমিউনিস্ট পার্টির মতোই স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভালোবাসেন৷ কিন্তু তাদের খুদকুঁড়ো দিয়ে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়: যেমন এমন একটি নির্বাচন, যাতে নির্দিষ্ট তিনজন প্রার্থীর সকলেই বেইজিং-এর হাতে বাছাই প্রার্থী হবেন৷ এবং হংকং-এর মানুষরা যে মেরুদণ্ডবিহীন নন: সেটা তারা গত পাঁচদিন ধরে শহরের পথে পথে প্রদর্শন করে আসছেন৷ হংকং-এর পথে মানুষের ঢল, কিন্তু তা হংকং-এর নিজস্ব ধারায়: শান্তিপূর্ণ, ভদ্র, সুদক্ষভাবে সংগঠিত৷

ছবি: AFP/Getty Images/X. Ollleros

‘‘এক দেশ, দুই প্রণালী'': এটা কি একটা হুমকি?

হংকং যখন চীনকে ফেরত দেওয়া হয়, তখন ৫০ বছর অনেকটা সময় মনে হয়েছিল৷ অর্ধশতাব্দী ধরে দে শিয়াওপিং-এর সৃষ্ট ‘‘এক দেশ, দুই প্রণালী''-র ফর্মুলা বজায় থাকার কথা – হংকং-এর ব্যাপক স্বশাসনের অধিকার যার অন্তর্ভুক্ত৷ শুধুমাত্র পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা থাকবে বেইজিং-এর হাতে, বাকি সব সিদ্ধান্ত নেবে হংকং স্বয়ং৷

আজকের আন্দোলনকারীদের কাছে ২০৪৭ সালটা আর খুব বেশি দূরে নয় – বিশেষ করে যখন বেইজিং বহুদিন ধরে ধীরে ধীরে হংকং-এর স্বাধীনতাগুলোকে ফোঁপরা করে তুলছে৷ এ বছরের গোড়ার দিকে বেইজিং সরকারের একটি হোয়াইট পেপার হংকং-এর বিচারকদের কাছ থেকে অধিকতর ‘‘দেশপ্রেম'' দাবি করে৷ এ ধরনের মোটা দাগের দাবি হংকং-এর সমৃদ্ধির মূলে কুঠারাঘাতের সামিল, যে মূল হল আইনের শাসন৷ বেইজিং ঠিক এই ব্যাপারটাই বুঝতে পারেনি৷

মাটিয়াস ফন হাইনছবি: DW

যেমন আজ হংকং-এ যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলেছে, বেইজিং তাও ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি৷ বেইজিং যা বলছে, তাও এর আগে অন্যান্য সংকট চলাকালীন শোনা গেছে: এই প্রতিবাদ বেআইনি এবং বিদেশি প্ররোচনার ফসল; ‘‘সহিংসতার জন্য প্রস্তুত চরমপন্থিদের'' ব্যাপারে সাবধান করে দেওয়া হচ্ছে সরকারি গণমাধ্যমে৷ প্রতিবাদ যদি চলতে থাকে, তবে তার ‘‘অকল্পনীয় ফলশ্রুতি''-র কথা বলেছে পিপলস ডেইলি৷ চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং এ যাবৎ ঠিক তাঁর আপোশের মনোভাবের জন্য নাম কেনেননি৷ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একক শাসন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র দ্বিধা প্রদর্শন করলে শি তার জবাব দিয়েছেন আপোশবিহীন কঠিনতার মাধ্যমে৷

কিন্তু বেইজিং-এর এই কঠিনতা ও অনমনীয়তাই হংকংবাসীদের আজ ঐক্যবদ্ধ করেছে৷ তবে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকেও আপোশের প্রস্তুতি প্রয়োজন৷ আন্দোলনকারীরা এসেছেন বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে; তাদের কোনো সঠিক মুখপাত্র নেই; মাত্রাধিক দাবি পেশ করার অর্থ, সীমাহীন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিপদ৷

আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যেই অনেক কিছু অর্জন করেছেন: তাঁরা দুনিয়াকে দেখিয়েছেন যে, হংকং অপরাপর চীনা শহরের মতো হয়ে উঠবে না৷ এই সব আন্দোলনকারীরা এমন সব স্বাধীনতা নিয়ে বড় হয়েছেন, যা সীমান্তের অপরপারে চীনে – এ যাবৎ – অকল্পনীয়৷ এবং তারা এই সব স্বাধীনতা সুরক্ষিত করতে চান৷ চীনে যে নিপীড়ন বেড়েই চলেছে, সেন্সর প্রথা আরো জোরদার করা হয়েছে – বর্তমানে হংকং থেকে আসা যাবতীয় খবর আটকে দেওয়া হচ্ছে – এ সবই হংকংবাসীদের ভীতি আরো বাড়াচ্ছে৷ আর যতোদিন সম্ভব, হংকংবাসীরা তাদের বাকস্বাধীনতা ও জনসমাবেশের স্বাধীনতার সুযোগ নিতে চান৷ শি জিনপিং বারংবার ‘‘চীনের স্বপ্নের'' কথা বলেন৷ হংকংবাসীরা সে স্বপ্ন দেখছেন না৷

সংবাদভাষ্য: মাটিয়াস ফন হাইন/এসি

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ