হংকং নিয়ে দুটি নতুন আইন পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বুধবার তাতে স্বাক্ষর করেছেন৷ এই আইনের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন৷ প্রতিউত্তর দেয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা৷
বিজ্ঞাপন
হংকংয়ের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেখানে যথাযথ স্বায়ত্তশাসন আছে কিনা তা দেখবে যুক্তরাষ্ট্র৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অন্তত বছরে একবার এই বিষয়ে সনদ দিবে৷ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ওয়াশিংটন হংকংয়ের উপর অবরোধও আরোপ করতে পারবে৷ এমনই একটি আইন পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রে৷
মার্কিন কংগ্রেসে ব্যাপক সমর্থন পাওয়া এই বিলে বুধবার স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ৷
এখানেই শেষ নয়৷ হংকংয়ের কাছে অস্ত্র বিক্রির বিধিনিষেধ সংক্রান্ত আরেকটি বিলও সই করেছেন ট্রাম্প৷ এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে টিয়ারগ্যাস, পিপার স্প্রে, রাবার বুলেট, স্টেন গানসহ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করতে পারবে না৷
বিশ্বের কোন দেশের মানুষের কত সম্পদ
শীর্ষ ধনীদের সংখ্যায় প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে চীন৷ ক্রেডিট সুইসের প্রকাশিত গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১৯ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে৷ মাথাপিছু সম্পদের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম৷
ছবি: Fotolia/Nejron Photo
বিশ্বে সম্পদের পরিমান বেড়েছে
গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১৯ অনুযায়ী গত এক বছরে বিশ্বে মানুষের ধন-সম্পদের পরিমাণ দুই দশমিক ছয় ভাগ বেড়েছে, ডলারের হিসাবে দাড়িয়েছে ৩৬০ ট্রিলিয়নে৷ পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ ছুয়েছে রেকর্ড ৭০ হাজার ৮৫০ ডলারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Goya
এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপ
বিশ্বে সম্পদ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে মূলত যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপের দেশগুলো৷ তাদের আয় বেড়েছে যথাক্রমে তিন দশমিক আট ট্রিলিয়ন, এক দশমিক নয় ট্রিলিয়ন এবং এক দশমিক এক ট্রিলিয়ন ডলার৷
ছবি: AFP
মাথাপিছু সম্পদে শীর্ষে সুইজারল্যান্ড
পূর্ণবয়স্কদের মাথাপিছু সম্পদের দিক থেকে শীর্ষে আছে সুইজারল্যান্ড৷ ১৭ হাজার ৭৯০ ডলার বেড়ে তাদের মাথাপিছু সম্পদের পরিমান দাড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫৩ ডলারে৷ এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্র, তাদের মাথাপিছু সম্পদ চার লাখ ৩২ হাজার ৩৬৫ ডলার৷ আর অস্ট্রেলিয়ার মানুষের মাথাপিছু সম্পদ তিন লাখ ৮৬ হাজার ৫৮ ডলার৷
ছবি: AP
মিলিওনেয়ারের সংখ্যা বাড়ছে
বিশ্বে মিলিওনেয়ার বা ১০ লাখ ডলার সম্পদের মালিকের সংখ্যা এখন চার কোটি ৬৮ লাখ৷ এই তালিকায় চলতি বছর নতুন যুক্ত হয়েছেন ১১ লাখ৷ এর মধ্যে ছয় লাখ ৭৫ হাজার নতুন মিলিওনেয়ার যোগ করেছে একা যুক্তরাষ্ট্রই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অতি ধনী যারা
বিশ্বে ৫৫ হাজার ৯২০ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি ১০ কোটি ডলার বা তার বেশি সম্পদের মালিক৷ চার হাজার ৮৩০ জনের কাছে ৫০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ আছে৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS.com
যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে চীন
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভাগ ধনীর তালিকায় এ বছর প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে চীন৷ এই তালিকায় এশিয়ার দেশটির মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি আর যুক্তরাষ্ট্রের আছে নয় কোটি ৯০ লাখ৷
ছবি: Reuters/A. Song
সম্পদের প্রকট বৈষম্য
প্রতিবেদন অনুযায়ী নীচের ৯০ ভাগ মানুষের কাছে আছে মাত্র ১৮ ভাগ সম্পদ৷ নীচের দিক থেকে ৫৬ দশমিক ৬ ভাগ মানুষের কাছে আছে এক দশমিক আট ভাগ বা ১০ হাজার ডলারেরও কম সম্পদ৷ অন্যদিকে ৪৪ ভাগ সম্পদ দখলে শীর্ষ এক ভাগেরও কম (দশমিক নয় ভাগ) ধনীর কাছে৷
ছবি: Hoopand Lashkarinejad
বাংলাদেশেও সম্পদ বাড়ছে
গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড় সম্পদের পরিমান এখন ছয় হাজার ৬৪৩ ডলার৷ যা ২০০০ সালে ছিল মাত্র এক হাজার ৮২ ডলার৷ বাংলাদেশে মোট সম্পদের পরিমাণ ৬৯৭ বিলিয়ন ডলার৷ যা বৈশ্বিক সম্পদের দশমিক দুই ভাগ৷
ছবি: bdnews24.com
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ৫ম
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রাপ্তবয়স্কদের মাথাপিছু সম্পদের দিক থেকে শীর্ষে আছে মালদ্বীপ (২৩ হাজার ২৯৭ ডলার)৷ এরপরই আছে শ্রীলঙ্কা (২০ হাজার ৬২৮ ডলার), ভারত (১৪ হাজার ৫৬৯ ডলার), ভূটান (আট হাজার ২৫৯ ডলার), বাংলাদেশ (ছয় হাজার ৬৪৩ ডলার), পাকিস্তান (চার হাজার ৯৮ ডলার) ও নেপাল (৩ হাজার ৮৭০ ডলার)৷
ছবি: AP
বাড়ছে মাথাপিছু ঋণ
২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাথাপিছু ঋণ ছিল মাত্র ২০ ডলার৷ যা ২০১৯ সালে বেড়ে দাড়িয়েছে ২৮৯ ডলার৷
ছবি: DW
10 ছবি1 | 10
এই আইন পাসের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি বাধাগ্রস্থ হতে পারে৷ সেজন্য তেমন একটা আগ্রহ ছিল না ডনাল্ড ট্রাম্পের৷ তবে কংগ্রেসের কাছে এক্ষেত্রে নতি স্বীকার করতে হয়েছে তাকে৷ ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি এবং হংকংয়ে জনগণের প্রতি সম্মান রেখেই তিনি বিলগুলো স্বাক্ষর করেছেন৷ আর এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে চীন ও হংকংয়ের নেতারা যাতে একসাথে বসে বিরোধ মেটান এবং দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন৷
তবে ট্রাম্প যতই আশ্বস্ত করার চেষ্টা করুন না কেন বিষয়টি ভালোভাবে দেখছে না চীন৷ এই আইনকে চীনের অভ্যন্তরীন বিষয়ে ভয়ানক হস্তক্ষেপ এবং নির্লজ্জ কতৃত্বপরায়ন আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি৷
‘‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে ইচ্ছামতো আচরণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি, নয়তো চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে,’’ জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ পরবর্তীতে দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে টেরি ব্রানস্টাডকেও তলব করেছে তারা ৷
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হংকংও৷ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আইন সহিংস বিক্ষোভকারীদের ভুল বার্তা দেবে বলে উল্লেখ করেছে তারা৷ একে অভ্যন্তরীণ বিষয়ের উপর স্পষ্ট হস্তক্ষেপ হিসেবেও অভিহিত করেছে সেখানকার সরকার৷