হজযাত্রা শুরুর ১০ দিন আগে সরকারি ও বেসরকারি দুই ব্যবস্থাপনাতেই খরচ আরো ৫৯ হাজার টাকা বাড়ানো হলো।
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের প্রতিবেদন অনুসারে, সৌদি আরবের অংশের ‘খরচ বেড়ে যাওয়ার' কারণেই বাংলাদেশের হজযাত্রীদের এই বাড়তি টাকা দিতে বলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়েছেন।
৫৯ হাজার টাকা খরচ বাড়ার ফলে সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর খরচ বেড়ে হচ্ছে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ টাকা। প্যাকেজ-২ এ খরচ পড়বে জনপ্রতি ৫ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, "আগের ঘোষণায় সৌদি আরব অংশের মূল্য অনুমান করে ধরা হয়েছিল। এখন সৌদি সরকার তাদের অংশ জানিয়েছে। এ কারণে হজের মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।"
কোভিড মহামারীর সংক্রমণ কমে আসায় দু বছর বাদে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন এবার হজে যেতে পারবেন এবার। গত ১১ মে সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের বলেছিলেন, সরকারিভাবে হজে যেতে প্রথম প্যাকেজে এ খরচ হবে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা।
বিভিন্ন দেশ থেকে হজে যাওয়ার খরচ
বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে একজন হজ যাত্রীকে এবার সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা খরচ করতে হবে৷ এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার হজ যাত্রীরা মাত্র দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ বাংলাদেশি টাকা খরচ করে হজ করতে পারবেন৷ বাকিটা সরকার ভর্তুকি দিবে৷
ছবি: dapd
বাংলাদেশ
এবার সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা ৷ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানএসব তথ্য জানান৷
ছবি: bdnews24.com
ভারত
আনন্দবাজার পত্রিকা ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে হজে যেতে জনপ্রতি খরচ হয়েছিল প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি টাকা৷ তবে ঐ সময় পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটি ২০২১ সালের হজের খরচ অনেক বাড়িয়ে চার লাখ ২৩ হাজার ৫৭১ টাকা নির্ধারণ করেছিল৷ আর এবছর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত খরচের হিসাব জানানো হয়নি৷ ২০১৮ সালে ভারতে হজ ভর্তুকি বন্ধ করে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye
পাকিস্তান
এখনও চূড়ান্ত খরচ জানানো হয়নি৷ তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ উমর বাট গত শনিবার জানান, এবার জনপ্রতি খরচ তিন লাখ ১১ হাজার ৭৪২ বাংলাদেশি টাকা থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশি টাকা হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Saudi Press Agency
ইন্দোনেশিয়া
এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ বাংলাদেশি টাকা (৩,৯৮,৮৬,০০৯ ইন্দোনেশীয় রুপি) দিতে হবে বলে গত ১৪ এপ্রিল জানান দেশটির ধর্মমন্ত্রী ইয়াকুত ছলিল৷ যদিও মুসল্লি প্রতি খরচ হবে চার লাখ ৮৮ হাজার ২৬০ টাকা৷ বাকি টাকাটা ‘হজ ফাণ্ড ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ বা বিপিকেএইচ এর মাধ্যমে ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার৷ বিস্তারিত জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: REUTERS
মালয়েশিয়া
গত ২২ এপ্রিল হজে যাওয়ার খরচ ঘোষণা করা হয়৷ বি৪০ গ্রুপের (যে পরিবারের মাসিক আয় সাড়ে ৯৬ হাজার টাকার কম) মুসল্লিদের জন্য খরচ দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ আর যাদের আয় বেশি তাদের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ধর্ম বিভাগের মন্ত্রী ইদ্রিস আহমাদ সম্প্রতি জানান, প্রতিবছর হজ ভর্তুকি হিসেবে সরকার প্রায় ছয়শ থেকে আটশ কোটি টাকা খরচ করে থাকে৷
ছবি: REUTERS
আসিয়ানে সর্বনিম্ন খরচ ইন্দোনেশিয়ায়?
২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী লুকমান হাকিম দাবি করেছিলেন, আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে সবচেয়ে কম টাকা খরচ করতে হয়৷ ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে হজে যাওয়ার খরচ উল্লেখ করে তিনি এই দাবি করেছিলেন৷ ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture alliance/dpa/M. Naamani
6 ছবি1 | 6
এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য জনপ্রতি খরচ ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫০ টাকা ঠিক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ৪১০ সৌদি রিয়ালের সম পরিমাণ ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা আলাদাভাবে সঙ্গে নিতে হবে। এর আগে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বছরের জন্য হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হলেও কোভিড মহামারীর কারণে ওই বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি।
২০২০ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রথম প্যাকেজে সর্বমোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয়টিতে তিন লাখ ৬০ হাজার এবং প্যাকেজ-৩ এ তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়। আর বেসরকারি প্যাকেজে তিন লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার ৮ জুলাই হজ হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে এবার হজ ফ্লাইট ৩১ মে শুরুর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সৌদি আরবে প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় ৫ জুন তা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।