আচমকাই জুনিয়র চিকিৎসকদের ধরনাস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবস্থানকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। আন্দোলনকারীদের ইচ্ছেয় তাদের সঙ্গে শনিবারই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য।
বিজ্ঞাপন
৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার পর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চললেও সমাধান সূত্র বের হয়নি। এমনকি দুই তরফের বৈঠক শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই চিকিৎসকদের কাছে এলেন।
ধরনা স্থলে মমতা
পাঁচদিন ধরে সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। নিম্নচাপের জেরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলা সত্ত্বেও তারা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার দুপুরে হঠাৎই তাদের অবস্থানে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বিচারের দাবিতে জোরালো স্লোগান তোলেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগান থামলে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেন জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে। বলেন, ‘‘যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের দাবিগুলি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করব। আমি একা সরকার চালাই না। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি সকলের সঙ্গে আমি আপনাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করব। যদি কেউ দোষী হন, শাস্তি পাবেন।"
চিকিৎসক পড়ুয়ার খুনের ঘটনার পাশাপাশি হাসপাতালের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ বিষয়ে মমতা বলেন, "সিবিআইকে অনুরোধ করব, দ্রুত তদন্ত শেষ করুন। দোষীদের ফাঁসি হোক। কেউ দোষী থাকলে আমি নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব। এটুকু বলতেই আমি এসেছি।''
আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার
১৬ দিন জেরা করার পর সোমবার আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করলো সিবিআই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের পর সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ সামনে আসে। চিকিৎসক খুনের এফআইআর করা নিয়ে দেরির অভিযোগ যেমন আছে, তেমনই আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও আছে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পাঁচদিন পর সিবিআই তদন্ত শুরু করে। গত ১৬ অগাস্ট থেকে দুইদিন বাদ দিয়ে তাকে সমানে জেরা করেছে সিবিআই। এবার তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ছবি: Subrata Goswami/DW
গ্রেপ্তার আরো তিন
সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও আফসার আলী, সুমন হাজরা ও বিপ্লব সিং-কে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। আফসার আলী সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষী। বাকি দুইজন ওষুধের ভেন্ডার। সন্দীপের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্ন
সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টও প্রশ্ন করেছিল। বিচারপতিরা প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তিনি চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা জানার পর ঠিক সময়ে এফআইআর করেননি?
ছবি: Subrata Goswami/DW
ইস্তফার পরেই নিয়োগ
আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর প্রবল জনরোষের মুখে ইস্তফা দেয়ার কথা জানান সন্দীপ ঘোষ। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দেয়, তারা সেখানে তাকে ঢুকতে দেবে না। পরে তাকে স্বাস্থ্য দপ্তরে ওএসডি করা হয়
ছবি: Subrata Goswami/DW
ইস্তফার পরেই নিয়োগ
আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর প্রবল জনরোষের মুখে ইস্তফা দেয়ার কথা জানান সন্দীপ ঘোষ। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দেয়, তারা সেখানে তাকে ঢুকতে দেবে না। পরে তাকে স্বাস্থ্য দপ্তরে ওএসডি করা হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সাবেক ডেপুটি সুপারের অভিযোগ
আরজি করের সাবেক ডেপুটি সুপার আখতার আলী কলকাতা হাইকোর্টে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেখানে তার অভিযোগ, সন্দীপ ঘোষ বেওয়ারিশ মৃতদেহ বেআইনিভাবে বিক্রি করে দেয়া, শিশুপাচার, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য বিক্রি, টেন্ডার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। তাকে ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহকারীরা কমিশন দিত। পড়ুয়াদের পাস করাতেও তিনি লাখ লাখ টাকা নিতেন বলে তার অভিযোগ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সন্দীপের বাড়িতে সিবিআই
সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই জেরার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল। একদিন সকালে সিবিআই কর্মকর্তারা সন্দীপের বাড়িতে তল্লাশি করার জন্য যান। ৭৫ মিনিট পর বাড়ির গেট খোলেন সন্দীপ। ততক্ষণ সিবিআই অফিসাররা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে বাড়ি তল্লাশির পর প্রচুর নথিপত্র পাওয়া গেছে বলে তারা জানিয়েছিলেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বেলেঘাটার বাড়ি
বেলেঘাটায় এই বাড়িতেই থাকেন সন্দীপ ঘোষ। তার প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পাড়ার মানুষজনের সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না সন্দীপ ঘোষ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আইএমএ থেকে সাসপেন্ড
চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন(আইএমএ) সন্দীপ ঘোষকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
9 ছবি1 | 9
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি হয়, প্রধান বিচারপতি সময় বেঁধে দেন মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে আন্দোলনকারীদের কাজে যোগ দিতে হবে নইলে ব্যবস্থা নিতে পারবে রাজ্য সরকার। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। কোনো পদক্ষেপ আপনাদের বিরুদ্ধে করা হবে না। এখন আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এখানে আসিনি। আন্দোলনের সমব্যথী হিসাবে এসেছি। আপনাদের বড় দিদি হয়ে এসেছি। আমাকে সময় দিন।''
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের বিরুদ্ধেও তাদের ক্ষোভ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি সত্যি কেউ দোষী হয়, তারা শাস্তি পাবে। কেউ আমার বন্ধু বা শত্রু নয়। যাঁদের আমার বন্ধু বলছেন, আমি তাদের চিনিই না। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁরা এসেছেন। আমি সাধ্যমতো পদক্ষেপের চেষ্টা করব।''
সমিতি ভাঙার সিদ্ধান্ত
হাসপাতাল ঘিরে যেসব অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে, তাতে আন্দোলনকারীদের নিশানায় রয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতির কর্তারা। শাসক দলের মদতে এই সমিতি নানা অনাচারে যুক্ত বলে অভিযোগ।
জুনিয়র চিকিৎসকদের সামনে মমতার ঘোষণা, "সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে তৈরি করা হবে। তাতে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, পুলিশ সকলের প্রতিনিধি থাকবে। আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতি আমি ভেঙে দিলাম। নতুন করে তা তৈরি করা হবে।''
মুখ্যমন্ত্রীর আগমনকে সদর্থক বলে মনে করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাদের অন্যতম নেতা অনিকেত মাহাতো বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী অভিভাবকের মতো আমাদের কাছে এসেছন। কিন্তু ৩৪ দিন পর কেন এলেন? আমাদের পাঁচ দফা দাবির ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে চাই।"
নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর আন্দোলনকারীরা বৈঠকের ইচ্ছে প্রকাশ করেন রাজ্যের কাছে। তাতে সাড়া দিয়ে এদিন সন্ধ্যা ছটায় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকের সময় স্থির হয়।
গত বৃহস্পতিবার নবান্নে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। ৩২ জন জুনিয়র চিকিৎসক নবান্নের দোরগোড়ায় পৌঁছলেও বৈঠক হয়নি। আন্দোলনকারীরা বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করার দাবি তুললেও রাজ্য তা মানেনি।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি কৌশিক চাকী ডিডাব্লিউকে বলেন, "জুনিয়র চিকিৎসকরা যে দৃঢ়তার সঙ্গে আন্দোলন করছেন, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী তাদের কাছে এসেছন। তবে তিনি স্বগতোক্তির ঢঙে কয়েকটা কথা বলেছেন। আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফা দাবি সম্পর্কে কিছু বলেননি।"
অবশ্যই দোষীরা আছে এবং তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে: প্রাজ্ঞ অনির্বাণ
অল ইন্ডিয়া জয়েন্ট অ্যাকশন ফোরামের সর্বভারতীয় সমন্বয়ক প্রাজ্ঞ অনির্বাণ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যদি কেউ দোষী থাকে। এ ধরনের মন্তব্য করা উচিত হয়নি। যদির কোন অবকাশ নেই। অবশ্যই দোষীরা আছে এবং তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।"
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাস ডিডাব্লিউকে বলেন, "সমিতি ভাঙলেও ঘুঘুর বাসা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। রোগী কল্যাণ সমিতির পরিবর্তে অধ্যক্ষ থাকলেও একই দুর্নীতি হবে। বরং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগঠনগুলির প্রতিনিধি রাখতে হবে কমিটিতে। ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।"
ধৃত বাম নেতা
জুনিয়র চিকিৎসকদের ধরনা চলাকালীন সেখানে হামলার চক্রান্ত করা হয়েছিল। একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে এনে শুক্রবার এমনই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই সংক্রান্ত অভিযোগে সেদিনই গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জীব দাসকে। শনিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করল বাম যুব নেতা কলতান দাশগুপ্তকে।
কুণালের অভিযোগ, "বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের প্রক্রিয়া চলার সময় দু'-তিনটে শিবির হামলা করার ছক কষেছিল।” ফোনের কল রেকর্ডিংয়ে কাদের গলা শোনা গিয়েছে, সে সম্পর্কে ইঙ্গিতপূর্ণ দাবি করেন তিনি।
একজনকে ‘স' এবং অপরজনকে ‘ক' বলে সম্মোধন করেছিলেন কুণাল। তার দাবি, একজন বাম যুব সংগঠন ও অপরজন অতি বাম যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সঞ্জীব ধরা পড়েছিলেন আগেই, অন্যজনকে তা নিয়ে জল্পনা চলছিল।
চক্রান্তের অভিযোগ
নাটকীয়ভাবে এদিন পাকড়াও করা হয় কলতানকে। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার লালবাজারের কাছে রাত জাগেন বাম কর্মীরা। সেখানেই ছিলেন ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান। শনিবার ভোরে তিনি যখন বাড়ি ফিরছেন, সেই সময় তার গাড়ি ঘিরে ধরে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযোগ খারিজ করে ধৃত কলতান বলেন, "গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। মূল আন্দোলন থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।" সিপিএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, "পুলিশের উচিত সবার আগে কুণাল ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা। বামপন্থীদের হেনস্থা করতে কাঁচা চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন তিনি।"
সমাজমাধ্যমে পাল্টা বামেদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন কুণাল। তার প্রশ্ন, "অডিওর একটি কণ্ঠ কি কলতান দাশগুপ্তের নয়?" বিধাননগর পুলিশের দাবি, টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করে অডিও ক্লিপের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। এটা দুই ধৃতের মধ্যে কথোপকথন।
ক্লিপের সত্যতা বা যুব নেতার কণ্ঠস্বর নিয়ে সরাসরি জবাব দেননি সিপিএম নেতারা। সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, "এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে গভীর চক্রান্ত করেছে সরকার। সিবিআই তদন্ত করে দেখুক।"
বিশ্বজুড়ে আরজি কর নিয়ে বিক্ষোভ
শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা ভারত নয়, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ হলো বিশ্বের ২৫টি দেশের ১৩০টি শহরে।
ছবি: Tamal Bhattacharjee
দেশে দেশে বিক্ষোভ
জার্মানি-সহ ইউরোপের নানা দেশের অনেক শহরে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, তাইওয়ান, সাউথ আফ্রিকার শহরগুলিতে। কোনো বিক্ষোভের আকার ছিল বেশ বড়- কোথাও ছোট। কিন্তু আরজি কর কাণ্ড যে প্রবাসী ভারতীয়দের কতটা নাড়িয়ে দিয়েছে, তা আবার সামনে এলো।
ছবি: Munich Ratula Ray
প্রাগে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির সামনে
চেক প্রজাতন্দ্রের প্রাগে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান ভারতীয়রা। প্রচুর ভারতীয় সেখানে সমবেত হন। তাদের হাতে ছিল পোস্টার। তারা ন্যায়ের দাবি করেছেন।
ছবি: Debraj Gangulie
লন্ডনে প্রতিবাদ
লন্ডনেও প্রচুর মানুষ রোববার আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ দেখান। তারাও ন্যায়ের দাবি করেছেন। তাদের অনেকের হাতে ছিল পোস্টার। কয়েকজনের হাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। আরজি করের ঘটনা তাদের যে কতটা নাড়িয়ে দিয়েছে, তা তাদের প্রতিবাদ থেকেই স্পষ্ট।
ছবি: Ratnadeep Ganguli
কোলন ক্যাথিড্রালের সামনে
জার্মানির কোলন শহরের বিখ্যাত ক্যাথিড্রালের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সেখানেও বেশ কিছু মানুষ এসেছিলেন প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবি জানাতে। চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন এবং তার পরবর্তী ঘটনা সকলকে এতটাই নাড়া দিয়েছে যে, বিদেশে থাকলেও তারা নিয়মিত প্রতিবাদ করছেন।
ছবি: Bikram Mukherjee
অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে
অস্ট্রেলিয়ায় রোববার বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষ আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন। তারা বাংলায় পোস্টার লিখে এনেছিলেন। সেখানে লিখেছিলেন, 'গর্জে উঠুক প্রতিবাদ/চুপ করে থাকা অপরাধ'। এর মধ্যে দিয়েই তাদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন তারা।
ছবি: Anirban Datta
অবিলম্বে ব্যবস্থার দাবি
মেলবোর্নের বিক্ষোভে প্রচুর নারী ও কিশোরী ছিলেন। তাদের হাতের পোস্টারে লেখা ছিল, তারা ন্যায়ের দাবিতে, অবিলম্বে অপরাধীর শাস্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
ছবি: Anirban Datta
অস্ট্রেলিয়ার আরেক শহরে বিক্ষোভ
ভারতীয়রা অস্ট্রেলিয়ার এই শহরগুলির নাম জানেন ক্রিকেট ও পর্যটনের সূত্রে। পারথের সেই শহরগুলিতেও আরজি করের ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। ফলে ভারতীয়রা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ছবি: Sushmita Ghosh
অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডেও
অস্ট্রেলিয়ার আরেকটি পরিচিত শহর অ্যাডিলেডেও আরজি কর নিয়ে শোনা গেল সেই স্লোগান, ‘‘ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস।’’ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন শহরের মানুষ একই দাবিতে সোচ্চার হলেন।
ছবি: Sanjay Mengar
নিউজিল্যান্ডেও প্রতিবাদ
নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে রোববার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
সাউথ আফ্রিকার অন্যতম প্রধান শহর জোহানেসবার্গেও আরজি কর নিয়ে ন্যায়ের দাবি উঠলো। এই ঐতিহাসিক শহর অনেক আন্দোলনের সাক্ষী। সেখানকার ভারতীয় ও অন্যরা আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হলেন।
ছবি: Soumyajyoti Das
নরওয়ের রাজধানীতে..
.নরওয়ের সবচেয়ে বড় শহর ও রাজধানী অসলোতেও প্রবাসী ভারতীয়রা প্রতিবাদ করলেন আরজি কর নিয়ে। তাদের প্রায় প্রত্যেকের হাতে ছিল পোস্টার। আরজি কর নিয়ে ন্যায়ের দাবি করা হয়েছে তাতে। দাবি করা হচ্ছে, দ্রুত অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার।
ছবি: Kamalika Lodh Chatterjee
ফ্রাঙ্কফুর্টেও প্রতিবাদ
জার্মানির একাধিক শহরে রোববার বিক্ষোভ হয়। তার মধ্যে ফ্রাঙ্কফুর্টও ছিল। সেখানে প্রবাসী ভারতীয়রা রোববার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
ছবি: Jasomati Mukhopadhyay
ব্রাসেলসে বিক্ষোভে
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ব্রাসেলস আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ শহর। সেখানেও প্রতিবাদ জানালেন প্রবাসী ভারতীয়রা।
ছবি: Samkhya Ghosh
সুইজারল্যান্ডেও বিক্ষোভ
সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর জুরিখেও আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ হলো। রোববার এই প্রতিবাদ দেখালেন প্রচুর নারী।