যুক্তরাজ্যের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান৷ যুক্তরাজ্য ওই এলাকায় ‘উত্তেজনা বাড়াচ্ছে' অভিযোগ করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, ‘‘যুক্তরাজ্যের দাবির কোনো ভিত্তি নেই৷''
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্য সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, হরমুজ প্রণালী পার হওয়ার সময় ব্রিটিশ একটি তেলবাহী ট্যাংকারকে থামিয়ে দেওয়া এবং গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা চালায় ইরানি বাহিনী৷ কিন্তু ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে তাদের সতর্ক করা হয়৷
তখন ইরানের তিনটি নৌ জাহাজ থেকে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজকে সরে যেতে বলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে৷
‘‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করে তিনটি ইরানি জাহাজ হরমুজ প্রণালীতে বাণিজ্যিক ট্যাংকার ‘ব্রিটিশ হেরিটেজ'-এর গতিরোধের চেষ্টা চালায়,'' বলা হয় সরকারি বিবৃতিতে৷
এতে বলা হয়, ‘‘ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএস মনট্রোস এসে তেলের ট্যাংকার ও ইরানি জাহাজগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে এসে অবস্থান নেয় এবং ইরানি নৌ জাহাজকে সরে যেতে বলে৷''
এ ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্রিটেন বলছে, ‘‘আমরা ওই এলাকায় উত্তেজনা কমিয়ে আনার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি৷''
ব্রিটেনের এমন দাবির পর ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ ‘‘গত ২৪ ঘন্টায় বিদেশি কোনো জাহাজের সঙ্গে আমাদের এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ এমনকি ব্রিটিশ জাহাজের সঙ্গেও নয়,'' বলা হয় তাদের বিবৃতিতে৷
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
বিরোধের কারণ
জুন মাসে হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলের ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন মিত্র দেশ৷ সে সময় ব্রিটেন বলেছিল, ওই হামলার জন্য ইরান ‘প্রায় নিশ্চিতভাবে' দায়ী৷
এরপর গত সপ্তাহে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সহায়তায় জিব্রাল্টারে ইরানের একটি তেলবাহী ট্যাংকার আটক করা হয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধ অমান্য করে ইরান থেকে সিরিয়ায় ওই ট্যাংকার যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করে ব্রিটেন৷
ওই ট্যাংকার ছেড়ে না দিলে ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকারও আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল ইরান৷ ট্যাংকার আটককে দস্যুবৃত্তির সঙ্গে তুলনা করেছিল ইরান৷
ইরানের এমন হুমকির পর হরমুজ প্রণালী থেকে তেলবাহী ট্যাংকার পার করতে নৌবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে যুক্তরাজ্য৷ এর মধ্যে বুধবারের ঘটনাটি ঘটার কথা বললো দেশটি৷