‘হলোকাস্টের স্মৃতি জাগিয়ে রাখা সব জার্মান সরকারের দায়িত্ব’
১৯ আগস্ট ২০২২![ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও জার্মান চ্যান্সেলর](https://static.dw.com/image/62857996_800.webp)
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মঙ্গলবার বার্লিনে বিতর্কিত মন্তব্য করে শুধু নিজে সমালোচনার মুখে পড়েননি, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসকেও বেশ বেকায়দায় ফেলেছেন৷ ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের নিপীড়নকে হলোকাস্ট বা নাৎসি আমলের ইহুদি নিধন যজ্ঞের সঙ্গে তুলনা করে আব্বাস জার্মানি, ইসরায়েল তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সমালোচিত হচ্ছেন৷ তার সেই মন্তব্যের পর মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলন আচমকা বন্ধ না করে জার্মান চ্যান্সেলরের অবিলম্বে প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন সমালোচকরা৷
সেই ঘটনার পর শলৎস একাধিক মঞ্চে আব্বাসের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেও ক্ষোভ প্রশমিত করতে পারছেন না৷ বৃহস্পতিবার তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন৷ তিনি বার্লিনে আব্বাসের হলোকাস্ট সংক্রান্ত মন্তব্যকে ব্যক্তিগতভাবে ও জার্মানির মানুষের কাছে অসহনীয় ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করেন৷ জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট দুই নেতার আলোচনার কিছু অংশ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন৷ শলৎস লাপিদকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, হলোকাস্টের দুঃসহ স্মৃতি জাগিয়ে রাখা জার্মানির প্রত্যেকটি সরকারের দায়িত্ব৷ লাপিদ অদূর ভবিষ্যতে বার্লিন সফর করবেন, এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে৷
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দফতর দুই নেতার সংলাপ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, যে লাপিদ শলৎসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ শুধু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফিরে আসা এক ইহুদি পরিবারের সন্তান হিসেবেও তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসরায়েল ও জার্মানির মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করার অঙ্গীকার করেন দুই নেতা৷ দুই নেতার মধ্যে ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে৷
এদিকে বার্লিন পুলিশের এক মুখপাত্র ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, যে ঘৃণা ছড়ানোর প্রচেষ্টার সন্দেহে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে৷ বার্লিন রাজ্য পুলিশের এক বিশেষজ্ঞ বিভাগ সেই প্রক্রিয়া চালাচ্ছে৷ তবে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে আব্বাস সরকারি সফরে জার্মানিতে আসায় তার সম্ভবত বিশেষ আইনি রক্ষাকবচ ছিল৷ মিশায়েল কুবিসিয়েল নামের এক আইন বিশেষজ্ঞ জার্মানির ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, যে এ ক্ষেত্রে সরকারি সফর আইনের চোখে মূল বিবেচ্য বিষয় নয়৷ আব্বাস কোনো রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে বার্লিনে এসেছিলেন কিনা, তার উপর আইনি প্রক্রিয়া নির্ভর করছে৷ এ ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনকে আদৌ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা যায় কিনা, সেটাও একটা প্রশ্ন বটে, বলেন তিনি৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)