হাইতিতে হাসপাতালে হামলা, ২ সাংবাদিক, ১ পুলিশ সদস্য নিহত
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে একটি হাসপাতালে গ্যাং সদস্যদের হামলায় দুইজন সাংবাদিক এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার হাইতির সবচেয়ে বড় ‘স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ হাইতি হাসপাতাল' পুনরায় চালু হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাং সদস্যদের হামলার কারণে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ তখন হাসপাতালটি বড়দিনে পুনরায় চালু করার ঘোষণা দেয়। মঙ্গলবার নতুন করে যাত্রা শুরুর আনুষ্ঠানিকতা চলার সময়েই গ্যাং সদস্যরা আবার হামলা চালায়।
হাইতির অনলাইন মিডিয়া কালেকটিভ-এর মুখপাত্র রোবাস্ট ডিমানচে বলেন, ‘ভিভ আনসাম' নামে পরিচিত একটি গ্যাংয়ের হামলায় সাংবাদিক মার্কেনজি নাথু এবং জিমি জিন নিহত হন। অন্য গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকরা স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাইতিতে জেল ভাঙল হাজার হাজার বন্দি
দেশের প্রধানমন্ত্রীকে গোপন নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজধানীতে ব্যাপক উত্তেজনা। শুরু অপরাধী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষ।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
হাইতিতে জেল ভেঙেছে বন্দিরা
হাইতির প্রধান জেলে রোববার আক্রমণ চালায় একটি গ্যাংয়ের সদস্যরা। ওই জেলে অন্তত তিন হাজার ৬৮৭ জন বন্দি ছিল বলে মানবাধিকার সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। এখন জেলে আছে শখানেক বন্দি। বাকিরা পালিয়েছে।
ছবি: Odelyn Joseph/AP/picture alliance
তিনজনের মৃত্যু
হামলাকারীরা জেলে আক্রমণ চালানোর পর পরাস্ত হয় জেলের গার্ড এবং পুলিশ। সংঘর্ষে অন্তত তিনজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ছবি: Odelyn Joseph/AP/picture alliance
প্রতক্ষ্যদর্শীদের বয়ান
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জেলের ভিতর এবং বাইরে রীতিমতো যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। ঘটনার পর দেখা যায়, জেলের সদর দরজা খোলা। বাইরে ভিড় জমান বন্দিদের আত্মীয়রা।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
ঘটনার দায় স্বীকার
ঘটনার পর দায় স্বীকার করেছেন হাইতির একটি শক্তিশালী গ্যাংয়ের প্রধান জিমি চেরিজিয়ার। এর আগে পুলিশ অফিসার ছিলেন তিনি। জিমি জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করা।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
প্রধানমন্ত্রীর ভবনের সামনে আগুন
রাজাধানীর রাস্তাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি গ্যাংয়ের লড়াই বন্ধের জন্য কেনিয়ার সাহায্য চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হেনরি। সেখান থেকে ফেরার সময়েই এই ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রীকে গোপন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
হাইতি সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই জেলে হত্যাকারী, ধর্ষণকারীদের মতো অপরাধীদের রাখা হয়েছিল। তাদের অধিকাংশই পালিয়েছে। ১৮ জন কলম্বিয়ার সেনা এখনো জেলে আছেন। ২০২১ সালে হাইতির প্রেসিডেন্টকে হত্যার অপরাধে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ছবি: Andrew Kasuku/AP Photo/picture alliance
হেনরি যা বলেছিলেন
প্রধানমন্ত্রী হেনরি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্টের হত্যার পর ক্ষমতা দখল করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সে পথে তিনি হাটেননি।
ছবি: Odelyn Joseph/AP Photo/picture alliance
হাইতির পরিস্থিতি
গ্যাংয়ের লড়াইয়ে জর্জরিত হাইতি। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কেনিয়ার কাছ থেকে এর আগেও সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করেছে হাইতির সরকার, কিন্তু লাভ হয়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তারক্ষীরাও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমর্থ হচ্ছে না।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
8 ছবি1 | 8
হাইতির সাংবাদিক সমিতি ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসবাদ' আখ্যা দিয়ে আরো সাতজন সাংবাদিক আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। এদিকে হাইতির পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, এ হামলায় একজন পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সামাজিক মাধ্যমে হাসপাতালে আহত মানুষদের ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
লাইভ স্ট্রিম করা ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালে লুকিয়ে থাকা মানুষদের ওপরও গুলি বর্ষণ করা হচ্ছে৷ তাদের কেউ কেউ রক্তাক্ত ছিলেন।
হাইতির তত্ত্বাবধায়ক শাসক পরিষদের প্রেসিডেন্ট, লেসলি ভলতেয়ার এই হামলাকে ‘অগ্রহণযোগ্য' উল্লেখ করে বলেন, "আমরা ভুক্তভোগী পরিবার এবং বিশেষ করে পুলিশ ও সাংবাদিকদের প্রতি সমবেদনা জানাই। এই হামলার যথাযথ প্রতিকার করা হবে।"
রাজধানীর প্রায় ৮৫% এলাকাই এখন বিভিন্ন গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণে। এর আগে তারা বিমানবন্দর, কারাগার এবং ক্লিনিকেও হামলা চালায়।
ভুডু হাইতিতে একটি স্বীকৃত ধর্ম। জাতিসংঘ এবং স্থানীয় একটি এনজিও জানায়, ডিসেম্বরের শুরুতে গ্যাং সদস্যরা প্রায় ২০০ ভুডু ধর্মাবলম্বী মানুষকে হত্যা করেছে।