প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল তৈরি ও অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম ঠিক হলেই প্রধানমন্ত্রী হেনরি ইস্তফা দেবেন।
বিজ্ঞাপন
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসের হত্যার পর থেকে এরিয়েল হেনরি নির্বাচিত না হয়েও প্রধানমন্ত্রীর পদে আছেন।
ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারম্যান ও গায়ানার প্রেসিডেন্ট ইরফান আলী জানিয়েছেন, হেনরির সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন। হেনরি যেভাবে হাইতির সেবা করেছেন, তার জন্য তাকে ধন্যবাদও দিয়েছেন ইরফান আলী।
কিছুদিন ধরে হাইতিতে গ্যাং-ওয়ার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধী গোষ্ঠীগুলি রাস্তায় নেমে পড়েছে। তারা জেল ভেঙে অপরাধীদের নিয়ে পালিয়েছে। তাদের অন্যতম দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রী হেনরিকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন।
আলী জানিয়েছেন, হাইতিকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাত সদস্যের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হবে। তারাই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করবে।
হেনরি এখন পুয়ের্তো রিকোতে আটকা পড়ে আছেন। তিনি অপরাধী গ্যাংগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুঁজতে কেনিয়া গিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, হাইতিতে জাতিসংঘের সমর্থিত আন্তর্জাতিক পুলিশ ও শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়োগ করতে। কিন্তু অপরাধী গোষ্ঠীগুলিয় বাধায় আর দেশে ফিরতে পারেননি।
হাইতিতে জেল ভাঙল হাজার হাজার বন্দি
দেশের প্রধানমন্ত্রীকে গোপন নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজধানীতে ব্যাপক উত্তেজনা। শুরু অপরাধী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষ।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
হাইতিতে জেল ভেঙেছে বন্দিরা
হাইতির প্রধান জেলে রোববার আক্রমণ চালায় একটি গ্যাংয়ের সদস্যরা। ওই জেলে অন্তত তিন হাজার ৬৮৭ জন বন্দি ছিল বলে মানবাধিকার সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। এখন জেলে আছে শখানেক বন্দি। বাকিরা পালিয়েছে।
ছবি: Odelyn Joseph/AP/picture alliance
তিনজনের মৃত্যু
হামলাকারীরা জেলে আক্রমণ চালানোর পর পরাস্ত হয় জেলের গার্ড এবং পুলিশ। সংঘর্ষে অন্তত তিনজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ছবি: Odelyn Joseph/AP/picture alliance
প্রতক্ষ্যদর্শীদের বয়ান
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জেলের ভিতর এবং বাইরে রীতিমতো যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। ঘটনার পর দেখা যায়, জেলের সদর দরজা খোলা। বাইরে ভিড় জমান বন্দিদের আত্মীয়রা।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
ঘটনার দায় স্বীকার
ঘটনার পর দায় স্বীকার করেছেন হাইতির একটি শক্তিশালী গ্যাংয়ের প্রধান জিমি চেরিজিয়ার। এর আগে পুলিশ অফিসার ছিলেন তিনি। জিমি জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করা।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
প্রধানমন্ত্রীর ভবনের সামনে আগুন
রাজাধানীর রাস্তাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি গ্যাংয়ের লড়াই বন্ধের জন্য কেনিয়ার সাহায্য চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হেনরি। সেখান থেকে ফেরার সময়েই এই ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রীকে গোপন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
হাইতি সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই জেলে হত্যাকারী, ধর্ষণকারীদের মতো অপরাধীদের রাখা হয়েছিল। তাদের অধিকাংশই পালিয়েছে। ১৮ জন কলম্বিয়ার সেনা এখনো জেলে আছেন। ২০২১ সালে হাইতির প্রেসিডেন্টকে হত্যার অপরাধে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ছবি: Andrew Kasuku/AP Photo/picture alliance
হেনরি যা বলেছিলেন
প্রধানমন্ত্রী হেনরি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্টের হত্যার পর ক্ষমতা দখল করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সে পথে তিনি হাটেননি।
ছবি: Odelyn Joseph/AP Photo/picture alliance
হাইতির পরিস্থিতি
গ্যাংয়ের লড়াইয়ে জর্জরিত হাইতি। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কেনিয়ার কাছ থেকে এর আগেও সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করেছে হাইতির সরকার, কিন্তু লাভ হয়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তারক্ষীরাও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমর্থ হচ্ছে না।
ছবি: Ralph Tedy Erol/REUTERS
8 ছবি1 | 8
ক্যারিকমের বৈঠকে
ক্যারিকম হলো ক্যারিবিয়ান আঞ্চলিক ট্রেড ব্লক। সোমবার তারা হাইতি নিয়ে জামাইকাতে জরুরি বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকে ক্যানাডা, ফ্রান্স, জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব ব্লিংকেন উপস্থিত ছিলেন।
সেখানেই হাইতিতে প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল গঠন ও অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পক্ষে মতপ্রকাশ করা হয়। ব্লিংকেন জানিয়েছেন, অ্যামেরিকা হাইতিতে বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েনের জন্য ১০ কোটি ডলার সাহায্য দেবে। এছাড়া হাইতির মানুষের জন্য তিন কোটি তিরিশ লাখ ডলারের মানবিক সাহায্য করা হবে।
হাইতির অবস্থা
হাইতিতে এখন অপরাধী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পুলিশের লড়াই চলছে। অপরাধী গোষ্ঠীগুলি রাজধানীর এলাকা দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর আগে হাইতিতে নির্বাচনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু হেনরি তাতে রাজি হননি। তিনি যুক্তি দেন, পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূল নয়।
গত সপ্তাহ থেকে হাইতিতে সহিংসতা চরমে ওঠে। হাইতিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। রাতে কারফিউও জারি করা হয়েছে।