হাইতি ফিরলেন নির্বাসিত স্বৈর শাসক ‘বেবি ডক’
১৭ জানুয়ারি ২০১১‘বেবি ডক' কেন হঠাৎ করে দেশে ফিরে এসেছেন তা এখনও সুস্পষ্ট না হলেও বিমানবন্দরে নেমেই তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি সহযোগিতা করতে এসেছি৷'' এছাড়া দুভালিয়ে'র সঙ্গী ভেরোনিক রয় জানিয়েছেন যে, আজ সোমবার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন ৫৯ বছর বয়সি বেবি ডক৷ রয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সাবেক এই স্বৈর শাসক এতোদিন পর নিজ দেশে ফিরে কীভাবে হাঁটু গেড়ে বসেন এবং দেশের মাটিতে চুমু দেন৷ একইসময় দুভালিয়ে বলেন, ‘‘আমার দেশ হাইতি, দেসালিন'এর এই দেশ৷'' হাইতির স্বাধীনতার নায়ক জঁ-জাক দেসালিন'এর কথা স্মরণ করেন তিনি৷ ফরাসি শাসকদের তাড়িয়ে দেসালিন দেশকে স্বাধীন করেছিলেন৷ এরপর নিজেই সম্রাট হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন৷
রয় আরো জানান, প্রায় এক বছর আগে হাইতিতে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পই তাঁদেরকে দেশে ফিরে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে৷ বেবি ডক দেশে ফেরায় তাঁর বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করেন নি দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জঁ-মাক্স বেলেরিভ৷ তবে তিনি বলেন যে, দুভালিয়ে ‘‘একজন হাইতিয়ান এবং তিনি যে কোন নাগরিকের মতো স্বাধীনভাবে দেশে ফিরতে পারেন৷''
উল্লেখ্য, নিষ্ঠুর স্বৈর শাসক পিতা ফ্রঁসোয়া দুভালিয়ে মারা যাবার পর ১৯৭১ সালে ক্ষমতায় আসন বেবি ডক৷ তাঁর পিতা পরিচিত ছিলেন ‘পাপা ডক' হিসেবে৷ দেশে ১৫ বছর অপশাসন চালান বেবি ডক৷ এরপর ১৯৮৬ সালে তীব্র বিক্ষোভের মাঝে ক্ষমতা ছেড়ে ফ্রান্সে নির্বাসিত হয়েছিলেন এই নিষ্ঠুর স্বৈর শাসক৷
যাহোক বিমানবন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে ক্যারিবে হোটেলে পৌঁছান বেবি ডক৷ এসময় হোটেল চত্বরে অপেক্ষমাণ শত শত সমর্থক তাঁকে স্বাগত জানান৷ এমনকি ২৫ বছর বয়সি রোনাল্ড ব্রেভিল উচ্ছ্বাসের সাথে বললেন, ‘‘দুভালিয়ে আবার ফিরে এসেছেন৷ ফলে এবার আমাদের দেশ আবার তার আসল গরিমা ফিরে পাবে৷ আমরা খুশি যে, দেশের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে তিনি আবার এখানে এসেছেন৷'' তবে এই তরুণ হাইতিয়ান খুব বেশি কিছু না জানলেও বেবি ডকের ফিরে আসার সাথে সাথে প্রবীণ প্রজন্মের চোখে ভেসে উঠেছে দুভালিয়ে পরিবারের ২৮ বছরের নির্মম স্বৈর শাসনের চিত্র৷ সেসময়ের ‘তঁতঁ মাকুত' নামের গোপন পুলিশের নির্যাতনের কাহিনী আজও ভোলেননি ভুক্তভোগীরা৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন