শব্দের থেকেও দ্রুত মিসাইল পরীক্ষার দাবি করলো উত্তর কোরিয়া। তাদের দাবি, মঙ্গলবার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল।
বিজ্ঞাপন
পিয়ংইয়ংয়ের সরকারি মিডিয়া সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির রিপোর্ট বলছে, মঙ্গলবার হাইপারসনিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে তাদের এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনার তরফে মঙ্গলবার এই মিসাইল পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। তবে সেটা কী ধরনের মিসাইল তা তারা জানায়নি। কতদূর এটা উড়েছিল, সেটাও তারা জানায়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই তার দেশের বিশেষজ্ঞদের এই বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন।
হাইপারসনিক মিসাইল
হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের থেকে পাঁচগুণ দ্রুতবেগে যায় এবং তা টের পাওয়া শক্ত। তাই এই মিসাইলকে ধ্বংস করার কাজটাও কঠিন। .
উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিশাল গুরুত্ব আছে। প্রশ্ন উঠছে, উত্তর কোরিয়া কি পরমাণু অস্ত্র বহন করার ক্ষমতার কথা বলছে? রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পরীক্ষার সময় ইঞ্জিন কেমন কাজ করছে, জ্বালানি ব্যবস্থা ঠিক আছে কি না, এই বিষয়গুলি দেখা হয়েছে। এই প্রথম উত্তর কোরিয়া জ্বালানির ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ব্যবস্থায় যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাকে ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বালানি ভরতে হবে না, মিসাইল তৈরির সময়ই তাতে জ্বলানি ভরা থাকবে।
উত্তর কোরিয়ায় অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷ এছাড়া এবার প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইলও ছিল না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্যারেড
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
করোনার চিহ্ন
আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া করোনা শনাক্তের কোনো তথ্য দেয়নি৷ তবে সংক্রমণ রোধে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়াসহ কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল৷ প্যারেডে যারা অংশ নিয়েছেন তারা হ্যাজম্যাট স্যুট (হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালস স্যুট) পরেছিলেন৷ মুখে ছিল মেডিকেল-গ্রেড মাস্ক৷
ছবি: KCNA via REUTERS
তবে দর্শকরা মাস্ক পরেননি
প্যারেডে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের অনেকে মাস্ক পরলেও প্যারেডের দর্শকরা মাস্ক পরেননি৷ এমনকি কিম জং উনের খুব কাছে অনেককে মাস্কহীন অবস্থায় দেখা গেছে৷ মাস্ক ছাড়াই তাদের উনকে ছুঁতে এবং হাত মেলাতে দেখা গেছে৷
ছবি: KCNA/REUTERS
ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না
এবারের প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না৷ যদিও গত অক্টোবরে এক প্যারাডে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়েছিল৷ এছাড়া সেসময় কিম জং উন তার বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ক্ষমতা সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছিলেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনেকদিন পর ‘রেড গার্ডসের’ উপস্থিতি
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর চীনা বাহিনী উত্তর কোরিয়া ছেড়ে যাওয়ার পর ‘ওয়ার্কার-পিজেন্ট রেড গার্ডস’ নামে একটি জননিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল৷ ২০১৩ সালের পর এবার আবার তারা প্যারেডে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
সৌলের নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন বলছেন, প্যারেডে ব্যালিস্টিক মিসাইল না থাকা এবং রেড গার্ডসের উপস্থিতির অর্থ হচ্ছে কিম জং উন অভ্যন্তরীণ ইস্যু যেমন করোনা, অর্থনীতি, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বিষয় দেখাতে চেয়েছেন৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতে আলোচনায় ভালো অবস্থানে থাকতে চাওয়ার লক্ষ্যে হয়ত ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়নি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
আলোচনা বন্ধ আছে
উত্তর কোরিয়া যেন পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করে সেই লক্ষ্যে আলোচনা ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ আছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন কূটনীতির মাধ্যমে এ ব্যাপারে সফলতা পেতে চান৷ গত জুলাই মাসে আন্তঃকোরীয় হটলাইন চালু হওয়ার পর আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল৷ তবে গতমাসে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ মহড়া শুরুর পর উত্তর কোরিয়া আর ফোন ধরছে না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
7 ছবি1 | 7
রিপোর্ট বলছে, মিসাইল পরীক্ষার সময় উত্তর কোরিয়ার মার্শাল পাক জং চোন উপস্থিত ছিলেন। তবে কিম জং উন ছিলেন কি না, তা তারা জানায়নি।
অ্যামেরিকার পরেই
মঙ্গলবার অ্যামেরিকা জানিয়েছিল, তারা হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা করেছে। মার্কিন সেনার হাতে এই মিসাইল দেয়া হবে। রাশিয়া, চীন এবং অন্য কিছু দেশও এই মিসাইল তৈরি করছে।
মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়াও পারমাণবিক ব্যালেস্টিক মিসাইল ছোড়া যায় এমন সাবমেরিনের পরীক্ষা করেছে।