হাজার হাজার উদ্বাস্তু মানুষ এখনো খোলা আকাশের নীচে
১৫ এপ্রিল ২০১০হাজার হাজার উদ্বাস্তু মানুষ এখনও বাস করছেন খোলা আকাশের নীচে৷
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উঁচু এবং গভীর খানাখন্দ আর পর্বতে ঘেরা কিংহাই প্রদেশে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে প্রচন্ড ঠান্ডা এবং বরফ শীতল হাওয়ার কবলে পড়েছেন ঘরহারা মানুষজন এবং উদ্ধারকর্মীরা৷
সরকারি হিসাবে জানানো হয়েছে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১৭ জনে৷ আহত প্রায় ১০ হাজার৷ তিনশ'রও বেশি মানুষের কোন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় রাতে সেখানে নেমে আসছে ভুতুড়ে অন্ধকার৷ হাসপাতালগুলোতে নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসার সরঞ্জাম৷
ভূমিকম্পে উদ্বাস্তু মানুষদের জন্য এখন সবচেয়ে আগে প্রয়োজন তাঁবু, খাবার এবং ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য ভারী যন্ত্রাপতি৷ ত্রাণ পণ্য নিয়ে সেনাবাহিনীর যে কনভয় এগিয়ে আসছে সেটা পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
স্থানীয় বিমানবন্দর সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় সেখানে ত্রাণবাহী কোন বিমান নামতে পারছে না৷ অন্যদিকে, নিকটস্থ বিমানবন্দরও বেশ দূরে, তাই ভরসা হেলিকপ্টার কিংবা স্থলপথ৷
সেনাবাহিনীর যে সব উদ্ধারকর্মী সেখানে পৌঁছেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন, তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার কাজ চললেও দুগর্ম পাহাড়ি এলাকায় এখনও যেতে পারেনি উদ্ধারকারীরা৷ রাস্তাঘাটের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ইউশু নগর৷ উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তোলা হচ্ছে চাপা পড়া মানুষদের৷ উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা, প্রয়োজনীয় ভারী সরঞ্জাম তোলা যাবে না উঁচু পাহাড়ি এলাকায়, ফলে সমস্যা আরও বাড়বে৷
চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও ইতিমধ্যে সেই এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ তিনি উদ্ধারকাজে আরও গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন৷
এদিকে, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবিলায় চীনকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে জাপান, রাশিয়া ও ফ্রান্স৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি ঐ ভূমিকম্পে নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক