রাশিয়ার সঙ্গে ‘অনৈতিক', সন্দেহজনক সম্পর্কের একাধিক অভিযোগ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তিকে৷ পদচ্যুত প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবার ‘আসল ঘটনা' ফাঁস করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন৷
বিজ্ঞাপন
গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও সংসদের বিশেষ কমিটি ট্রাম্প টিম-এর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে৷ বলা বাহুল্য, প্রশাসনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন সব গুরুতর অভিযোগ নিয়ে চরম অস্বস্তিতে ভুগছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ সেই টিমেরই একজনের ‘রাজসাক্ষী' হবার সম্ভাবনার ফলে এবার তাঁর দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে গেল৷ মাইকেল ফ্লিনের আইনজীবী এই মর্মে একটি বিবৃতি দিয়েছেন৷
অর্থাৎ আইনি রক্ষাকবচ পেলে তিনি ‘রাজসাক্ষী' হতে রাজি৷ এ নিয়ে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করছেন৷ দুই পক্ষের মধ্যে রফা হলে রাশিয়ার ভূমিকা সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মাত্র কয়েক দিন কাটাতে পেরেছিলেন মাইকেল ফ্লিন৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অন্যদের মতো তিনিও ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন এবং বিষয়টি পুরোপুরি স্বীকার করেননি৷ কিন্তু প্রক্রিয়াগত কারণ দেখিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়৷ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল পেন্সকে তিনি সত্যি কথা বলেননি বলে ট্রাম্প তাঁকে সরিয়ে দেন৷ ফ্লিন এতকাল নীরব থাকার পর মুখ খুলেছেন৷
রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আচরণ সন্দেহ আরও উসকে দিচ্ছে৷ স্পষ্ট অবস্থান নেবার বদলে তাঁরা নানাভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠছে৷
ট্রাম্পের প্রথম সাতদিনের নির্বাহী আদেশ ও নির্দেশ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের সাতদিনের মধ্যেই ডজন খানেক নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার মধ্যে ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার’ ও ‘মেমোরান্ডাম’, দুই’ই আছে৷
ছবি: Reuters/K. Lamarque
অভিবাসন
শুক্রবারের একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প সাতটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেন ও সিরীয় উদ্বাস্তু গ্রহণ অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখেন৷
ছবি: Picture-Alliance/AP Photo/K. Willens
ওবামাকেয়ার
শপথগ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প তাঁর প্রথম এক্সিকিউটিভ অর্ডারে স্বাক্ষর করেন৷ আদেশটির ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল ওবামার ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’-এর ‘‘অনাবশ্যক অর্থনৈতিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক বোঝা’’ হ্রাস করা৷
ছবি: Getty Images/A. Wong
মেক্সিকো সীমান্তে প্রাকার
বুধবার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি পরিদর্শন করার অবকাশে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি (মন্ত্রীকে) ‘‘অবিলম্বে দক্ষিণ সীমান্ত বরাবর একটি প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা, নকশা ও নির্মাণকার্য শুরু করার’’ যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Torres
‘স্যাঙ্কচুয়ারি সিটিজ’
বুধবার ট্রাম্প আরো একটি এক্সিকিউটিভ অর্ডার স্বাক্ষর করেন, যা অনুযায়ী যে সব ‘অভয়াশ্রমের’ শহর বেআইনি অভিবাসীদের নথিবদ্ধ বা বহিষ্কার করে না, তাদের ফেডারাল অনুদান বাতিল করা হবে৷
ছবি: AP
দু’টি তেলের পাইপলাইনের অনুমতি
তাঁর কর্মকালের দ্বিতীয় দিনেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’টি আদেশের মাধ্যমে দু’টি বিতর্কিত পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন৷ কি-স্টোন এক্সএল পাইপলাইনটি যাবে ক্যানাডা থেকে গাল্ফ কোস্টে মার্কিন রিফাইনারিগুলি অবধি: প্রেসিডেন্ট ওবামা ২০১৫ সালে এই পাইপলাইন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখেন৷ ডাকোটা অ্যাক্সেস পাইপলাইনটি ইন্ডিয়ান উপজাতিদের এলাকার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে ব্যাপক বিক্ষোভের অবতারণা ঘটে৷
ছবি: REUTERS/L. Jackson
গর্ভপাত সংক্রান্ত ‘গ্লোবাল গ্যাগ রুল’
‘বিশ্বের মুখ চেপে ধরার নীতি’ হিসেবে পরিচিত এই নীতি প্রথম বাস্তবায়িত হয় ১৯৮৪ সালে, প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের আমলে৷ মেক্সিকো সিটি পলিসি নামেও পরিচিত এই নীতি অনুযায়ী যে সব বিদেশি এনজিও গর্ভপাত সংক্রান্ত পরামর্শ বা সাহায্য দেয়, তাদের ফেডারাল সাহায্য না পাবার কথা৷ ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা পুনরায় সক্রিয় করেছেন৷
ছবি: AP
টিটিপ থেকে পশ্চাদপসারণ
তাঁর কর্মকালের তৃতীয় দিনে (সোমবার) ট্রাম্প একটি মেমোরান্ডামের মাধ্যমে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিকে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্য চুক্তি থেকে স্থায়ীভাবে পশ্চাদপসারণ করার নির্দেশ দেন৷