করোনাকে দূরে রাখার জন্য হাত ধোয়ার বিকল্প নেই৷ তবে অতিরিক্ত হাত ধোয়ার ফলে হাতের ত্বক হয়ে যাচ্ছে শুষ্ক, রুক্ষ আর খসখসে৷ সুতরাং হাত ধোয়ার পরে অবশ্যই ক্রিম লাগিয়ে নিন৷
বিজ্ঞাপন
শীতকালে হাত খসখসে হয়ে যায়, অনেক সময় ফেটেও যায়৷ এরকম হাত কেবল অস্বস্তিকরই নয়, এটি বেদনাদায়কও হতে পারে৷ এমনটা এখন অতিরিক্ত হাত ধোয়ার কারণেও হতে পারে৷
করোনা ভাইরাসকে দূরে রাখতে সর্বত্র বেশি বেশি হাত ধোয়ার কথা বলা হচ্ছে৷ এখন এত বেশি হাত ধোয়ার ফলে হাতের ত্বক যেমন শুষ্ক হতে পারে, তেমনি হাতে অতিরিক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারেও ত্বকের চুলকানি, জ্বালা বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে৷ আমাদের চারিপাশে অসংখ্য জীবাণু রয়েছে, যা ফাটা বা শুষ্ক হাত দিয়ে ধরার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে থাকে৷
আমাদের দেহ ফ্যাট উত্পাদন করতে প্রায় চার সপ্তাহ সময় নেয়, সুতরাং যদি কোনো ক্রিম ব্যবহার না করে সারাক্ষণ শুধু হাত ধোয়া হয়, তাহলে হাতের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ হাত ধোয়ার পরে ফ্যাটযুক্ত ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা সকলের জন্যই জরুরি৷
করোনা: এসব গুজবে কান দেবেন না
পুরো বিশ্বে নভেল করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে গুজবের শেষ নেই৷ বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনই কয়েকটি গুজবের জবাব দিয়েছে৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
১. ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে করোনা ছড়ায়?
রেডিও তরঙ্গ বা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোন ভাইরাস ছড়ায় না৷ এমন অনেক দেশেই করোনা’র সংক্রমণ হয়েছে, যাদের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
২. রোদের তাপ কি করোনা প্রতিরোধ করে?
তাপমাত্রা যত বেশিই হোক না কেনো, যেকোন তাপমাত্রায় আপনি সংক্রমিত হতে পারেন৷ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা আছে এমন অনেক দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. van den Bergh
৩. একবার সংক্রমণ, সারাজীবনের সংক্রমণ?
করোনা আক্রান্ত যেকোন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন৷ আপনার লক্ষণ চিনতে হবে এবং সেই বুঝে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে৷ আপনার যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে ডাক্তারকে ফোন দিন৷
ছবি: AFP/B.R. Smith
৪. ১০ সেকেন্ডের নাই ভরসা
অনেকে মনে করেন কোনো ধরনের কষ্ট বা কাশি ছাড়া ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস আটকে রাখতে পারলে তার করোনা নেই৷ এই ধারণা ভুল৷ করোনা ভাইরাসের খুব সাধারণ একটি লক্ষণ হল শুকনো কাশি, ক্লান্তি এবং জ্বর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে ভয়াবহ ধরনের নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়৷ আপনার উচিত এসব লক্ষণ থাকলে আগে পরীক্ষা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Campodonico
৫. মদে মুক্তি?
বেশি বেশি মদ বা অ্যালকোহল খেলে করোনা প্রতিরোধ হয় না বরং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J.-P. Muller
৬. তীব্র শীতে করোনা মরে?
এটা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই যে তীব্র শীত বা বরফে করোনা ভাইরাস টিকে থাকতে পারে না৷ কারণ বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেনো আপনার শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
ছবি: picture-alliance/AA/A. Ozdil
৭. হ্যান্ড ড্রায়ার করোনা মারে?
না৷ হাত শুকানোর যে মেশিন, করোনা ভাইরাসের উপর তার কোন প্রভাব নেই৷ আপনার যা করণীয় তা হল: বার বার সবান পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া৷ এরপর টিসু, তোয়ালা বা গরম ড্রায়ার দিয়ে হাত শুকাতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/NIAID-RML
৮. নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন কি করোনায় কার্যকর?
না৷ নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন যেমন: নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি ভ্যাকসিন করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়৷ এই ভাইরাস একেবারে নতুন এবং ভিন্ন ধরনের, যার জন্য চাই আলাদা ভ্যাকসিন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করছেন৷
ছবি: Reuters/B. Guan
৯. নাকের ড্রপ কি সংক্রমণ থেকে বাঁচায়?
না৷ এমন কোন তথ্য-প্রমাণ এখনো মেলেনি যে নিয়মিত স্যালাইন পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়৷
ছবি: Imago Images/Panthermedia/A. Guillem
১০. করোনা প্রতিরোধে বিশেষ কোন ওষুধ?
করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ নেই৷ কেবল লক্ষণ অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
10 ছবি1 | 10
অনেক ডাক্তার বলছেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশকের চেয়ে হাত ধোয়ার সময় সাবান ব্যবহার কারাই ভালো ৷ তবে যারা অসুস্থ বা যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তাদের জীবাণুনাশক ব্যবহার করা উচিত৷
মানুষের বয়স যত বাড়ে, ত্বক তত কম আদ্রতা সংরক্ষণ করতে পারে৷ তাদের শরীরের নিজস্ব ফ্যাট উতপাদনও কমে যায়৷ তাই তাদের ঘনঘন হাতে ক্রিম লাগানো উচিত৷
নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন হাতের ক্রিম
আমাদের নানী-দাদীরা যেমন করতেন, সেরকম আপনিও ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন হাতের ক্রিম ৷
গোলাপ জল, তাজা টমেটোর রস, তাজা লেবুর রস এবং সমপরিমাণ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন ৷ এবার তৈরি হয়ে গেল প্রাকৃতিক হ্যান্ড ক্রিম ৷ এখন হাতে যত বেশি ক্রিম ব্যবহার করবেন, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ততটাই মঙ্গল ৷