1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাবলের উত্তরসূরি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

৭ আগস্ট ২০২০

জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারনা পালটে দিয়েছে হাবল টেলিস্কোপ৷ এবার তার উত্তরসূরি হিসেবে আসছে ‘দ্য জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ'৷ ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তৈরি এই টেলিস্কোপ আগামী বছরই কাজ শুরু করতে পারে৷

30 Jahre  Hubble Weltraumteleskop
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA/ESA/J. Olmsted/STScI/Cover Images

হাবলকে বসানো আছে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে সাড়ে পাঁচশ কিলোমিটার উঁচুতে৷ আর জেমস ওয়েবকে স্থাপন করা হবে পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে!

এখন পর্যন্ত বানানো জটিলতম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির মধ্যে একটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ৷ দশ বিলিয়ন ডলার খরচ হওয়ায় অন্যতম ব্যয়বহুলও৷ জেমস ওয়েব কাজ করবে ইনফ্রারেড আলো দিয়ে৷ আর হাবল প্রধানত কাজ করছে ‘ভিজিবল লাইট স্পেকট্রাম'-এ

হাইডেলব্যার্গের মাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তৈরির সঙ্গে জড়িত৷ ইনফ্রারেড আলো দিয়ে কাজ করার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ আছে বলে মনে করেন অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট ক্লাউস ইয়েগার৷ তিনি বলেন, ‘‘তারা গঠিত হওয়ার জায়গা, ধূলিকণায় ঢেকে যাওয়া আলো - এসব পরিস্থিতি দেখতে ইনফ্রারেড আলোর প্রয়োজন৷ তরঙ্গদৈর্ঘ্য বড় হওয়ায় ইনফ্রারেড ক্লাউডের মধ্যে ঢুকতে পারে৷ আরেকটি কারণ হচ্ছে, মহাবিশ্বের আকার বাড়ছে, অনেক দূরের গ্যালাক্সির আলোর রং লালের দিকে ঝুঁকছে- যা ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা যাবে৷''

হাবলের মতোই জেমস ওয়েবও জ্যোতির্বিদ্যাকে এগিয়ে নেবে৷ তবে ইনফ্রারেড দিয়ে কাজ করবে বলে জেমস ওয়েব ঠান্ডা রাখতে বিশেষ নকশা অনুসরণ করা হচ্ছে৷

একটি টেনিস কোর্টের সমান সানশেড দিয়ে তাপরশ্মি দূরে রাখার চেষ্টা চলছে৷ কিন্তু একটা রকেটে এত বড় শেড ধরবে না৷ তাই এমন এক জটিল অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে, যা শুধু মহাকাশে মেলা হবে৷ খুবই জটিল চ্যালেঞ্জ৷ ক্লাউস ইয়েগার বলেন, ‘‘মহাকাশে সব কাজ ঠিকঠাক মতো হতে হবে৷ তাই খুব সতর্ক থাকতে হচ্ছে৷ আশা করছি, যেন ২০২১ সালের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে৷''

জটিলতার কারণে মাঝেমধ্যেই কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে৷ হাবলে একটা আয়না আছে৷ জেমস ওয়েবে থাকবে ১৮টি৷ এগুলো মহাকাশে একটি আরেকটির সঙ্গে জোড়া লাগবে৷ তখন এর আকার হাবলের আয়নার তিনগুণ হবে৷ সবকিছু ঠিক হতে হবে৷ কারণ হাবলের মতো পরে আর মেরামতের সুযোগ থাকবে না৷ ইয়েগার জানান, ‘‘অর্বিটে হাবল টেলিস্কোপ পাঠানোর পর শুরুতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, যা পরে মেরামত করা গেছে৷ কিন্তু জেমস ওয়েবের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হবে না৷ কারণ এটি পৃথিবী থেকে এত দূরে পাঠানো হবে যে মেরামত করার উপায় থাকবে না৷''

পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে এটি বসানো হবে৷ পৃথিবীর অর্বিটের চেয়ে সেখানেই, জেমস ওয়েবকে সূর্যের তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা করা বেশি সম্ভব হবে৷ ফলে ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি চর্চার দারুণ এক জায়গা হবে সেটি৷

ততদিন পর্যন্ত জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হয়ে থাকবে হাবল টেলিস্কোপ৷ রুয়র ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট রাল্ফ-ইয়ুর্গেন ডেটমার বলছেন, ‘‘৩০ বছর আসলেই অনেক সময়৷ শুরুতে এতটা প্রত্যাশা ছিল না৷ এতদিন বেশ ভালো সময়ই কেটেছে৷ তবে এখন হাবলকে বন্ধ করে দেবার চেষ্টা চলছে ভেবে দুঃখ লাগছে৷ কিন্তু হাবলের উত্তরসূরিই হচ্ছে ভবিষ্যৎ৷ আরও বেশি বিজ্ঞান চর্চার জন্য এটি দরকার৷ হাবলকে দিয়ে আমরা যা করার চিন্তা করেছিলাম তার প্রায় সবই আমরা করেছি৷''

অবশ্য, হাবল হয়ত এখনও আমাদের জন্য অবাক করা আরও কিছু বিষয় নিয়ে অপেক্ষা করছে৷ কারণ সব ঠিক থাকলে আরও কয়েক বছর কাজ করতে পারবে হাবল৷

গত ৩০ বছরে হাবল আমাদের এমন কিছু দেখিয়েছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি৷ সামনে যে আরও কী দেখাবে, কে জানে!

টমাস হিলেব্রান্ডট/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ