দর্শক হিসেবে চিড়িয়াখানার অনেক কিছুই সহজে চোখে পড়ে না৷ কিন্তু কর্মী ও কর্মকর্তারা পশুপাখিদের অনেক প্রতারণা ও তাদের ছদ্মবেশ ধরতে পারেন৷ জার্মানির হামবুর্গ শহরের চিড়িয়াখানাও এর ব্যতিক্রম নয়৷
বিজ্ঞাপন
হাগেনবেক চিড়িয়াখানার ট্রপিকাল জগতের সর্বেসর্বা হলেন ড. গিডো ভেস্টহফ৷ তাঁর হেফাজতে এমন সব প্রাণী রয়েছে, যারা ধোঁকা দিতে ওস্তাদ৷ অর্থাৎ তারা যা নয়, সেই রূপ ধারণ করতে পারে৷ তাদের অনেকে এমন ভাব করে, যেন কিছুই জানে না৷ যেমন পাথরের মতো দেখতে ‘মাতা মাতা' প্রজাতির কচ্ছপ৷ কোণে যা শেওলা মনে হচ্ছে, তা আসলে ভিয়েতনামের এক ব্যাং৷ তাই সাফাইয়ের সময় সাবধান থাকতে হয়৷ তা না হলে প্রাণীটির ক্ষতি হতে পারে৷ ড. ভেস্টহফ বলেন, ‘‘অবশ্যই! কিন্তু তারা না নাড়াচাড়া করলে৷ সেটাই তো ক্যামোফ্লাজ বা ছদ্মবেশের আসল চরিত্র৷ দেখতে গাছের শুকনা ডালপাতার মতো৷ তাই পাতাখেকো প্রাণীরাও আগ্রহ দেখাবে না৷ তারা স্থির হয়ে বসে শিকারের অপেক্ষায় থাকে৷ পাশ দিয়ে গেলে ধরে খেয়ে ফেলবে৷''
অ্যামাজন এলাকার প্লান্টহপার পোকাও একই কায়দা করে৷ সে নিজেকে তার পরিবেশের নকল করে ছদ্মবেশ ধারণ করে৷ ফলে তাদের দেখেও আলাদা করে চেনা যায় না৷ এক প্রজাতির নিরীহ শুঁয়োপোকা শত্রু দেখলেই সতর্ক হয়ে পড়ে৷ ক্রুদ্ধ চোখ রাঙিয়ে বুঝিয়ে দেয় সে বড় বিপজ্জনক৷ কি স্নেক সাপও ভোল বদলাতে ওস্তাদ৷ দেখতে কোরাল স্নেকের মতো, রং দেখিয়ে সে সবাইকে সাবধান করে দেয়৷ ড. গিডো ভেস্টহফ বলেন, ‘‘অন্য প্রাণীরা তাকে দেখে ভাবে, ছদ্মবেশের প্রয়োজন নেই? মানে কোথাও একটা গোলমাল রয়েছে৷ এই সাপের আসলে বিষ নেই, কামড়ালে শুধু একটু রক্ত বেরোতে পারে৷''
জার্মানির চিড়িয়াখানার ইতিহাস
প্রতি বছর কোটি কোটি মানুষ জার্মানির চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে৷ একজন দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় গিয়ে এখন যা দেখেন, তা এ রকম ছিল না৷ সময়ে সময়ে বদলেছে ধরণ, সমৃদ্ধ হয়েছে কালে কালে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/K. Hennig
জার্মানির প্রথম চিড়িয়াখানা
প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক মার্টিন হিনরিশ লিশটেনস্টাইন লন্ডনে জুলোজিক্যাল গার্ডেন দেখে এ বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন৷ এরপর তাঁর মধ্যে এ বিষয়ে কিছু একটা করার ইচ্ছা জাগে৷ ১৮৪১ সালে প্রুশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রিডরিশ ভিলহেল্মকে রাজি করান৷ রাজা এক ডিক্রির মাধ্যমে বার্লিনের টিয়ারগার্টেনে ৫৪ একর জমি বরাদ্দ দেন৷ সেখানেই গড়ে ওঠে জার্মানির প্রথম জুলোজিক্যাল গার্ডেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/arkivi
প্রথম প্রাণী
১৮৪৫ সালের মধ্যে দু’টি কোয়াটি, তিনটি সুমেরুর শিয়াল, একটি লাল শিয়াল, দু’টি ব্যাজার, ২৪টি বানর এবং তিনটি সাইবেরিয়ার ভাল্লুক এখানেআনা হয়৷ ১৮৪৬ সালে সিংহ এবং বাঘকে পৃথক ভবনে নিয়ে আসা হয়৷ ১৮৫৭ সালে প্রথম হাতি আনা হয়৷ ১৮৬১ সালে আনা হয় প্রথম জেবরা৷ তবে তখন প্রাণীর মৃত্যুর হার ছিল অত্যন্ত বেশি৷
ছবি: picture alliance/dpa/arkivi
রোল মডেলের ভূমিকায় ভিয়েনা
ভিয়েনার শ্যোনব্রুন চিড়িয়াখানা ছিল একেবারে অন্য রকম৷এ জগতে নানা সংযোজনে তাদের অবদান রয়েছে৷ ১৯০৬ সালে এখানে প্রথম হাতির বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে৷ ৭২৭ প্রজাতির ৩৫শ’ প্রাণী নিয়ে ১৯১৪ সালে এটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম চিড়িয়াখানায় পরিণত হয়৷ এটা বার্লিনের চিড়িয়াখানার রোল মডেল হয়ে দাঁড়ায়৷ এটি বিদ্যমান সবচেয়ে পুরাতন চিড়িয়াখানাগুলোর একটি৷ বলা হয়ে থাকে, ইউরোপের মধ্যে এই চিড়িয়াখানাতেই সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী যায়৷
ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জার্মান ভাষাভাষী দেশগুলোতে বহু চিড়িয়াখানা গড়ে ওঠে৷ তবে এসব চিড়িয়াখানার পূর্বসুরী হিসাবে রয়েল পার্কের কথাই বলা হয়৷ এটাও প্রুশিয়ার রাজপরিবার গড়ে তুলেছে৷ সেখানে রাজা কেবল শিকারই করতেন না, বরং এখানে প্রকৃতি গবেষকদের বসবাস করার অনুমতি দেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P.Pleul
ভবন সংরক্ষণ এবং প্রাণী সুরক্ষা
বার্লিন জুলোজিক্যাল গার্ডেনে অবস্থিত অ্যান্টিলোপ হাউজের মতো অনেক ভবনই ঊনিশ শতকে নির্মাণ করা হয়৷ এর মাধ্যমে এখানে প্রাণীদের জন্য একটা ভিন্ন আবহ আনার চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু এটা যতটা না নান্দনিক করা হয়েছে, নির্মাণের সময় সংশ্লিষ্ট প্রজাতির প্রাণীদের সুবিধার কথা ততটা ভাবা হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb/B. Setnik
শিক্ষা
২০ শতকে এসে জার্মানি জুড়ে অনেক চিড়িয়াখানা হয়৷ মানকি পার্ক, ওশান পার্ক, বার্ড পার্ক প্রভৃতি ক্রেজ জেঁকে বসে৷ এমনকি মানুষ সাফারি পার্কের মাঝে নিজেদের গাড়ি বা বাস নিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পায়৷ ৫০ ও ৬০-এর দশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট শহরগুলোও চিড়িয়াখানা বা প্রাণী পার্ক গড়ে তোলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Leonhardt
গতির ঝড়
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে চিড়িয়াখানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটা উন্মাদনা দেখা দেয়৷ দূর দূর ভূখণ্ডের প্রাণী দেখতে মানুষ আকুল হয়ে উঠে৷ একটা সময়ে এসব চিড়িয়াখানা জীবন্ত ক্লাসরুমে পরিণত হয়৷ কিন্তু প্রাণীদের রাখার ক্ষেত্রে তাদের উপযোগী করে পরিবেশ তৈরির বিষয়টি তখনও অগ্রাধিকারে ছিল না৷ ৭০-এর দশকের পর প্রাণী-মনস্তত্ত্ব নিয়ে নতুন নতুন দিক বের হয়ে আসে৷ তখন চিড়িয়াখানাগুলো তাদের ডিজাইন বদলাতে শুরু করে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/K. Hennig
প্রকৃতিতে ফিরে আসা
চিড়িয়াখানা ডিজাইনে বিস্তৃত পরিসর রাখার বিষয়টি পুরো ব্যাপারটাই বদলে দেয়৷ যেমনটা হয়েছিল হামবুর্গের কার্ল হাগেনবেকে৷ সিংহ বাস করত জিরাফ, হাতি এবং জেব্রার কাছাকাছি৷ চিড়িয়াখানায় অঞ্চলভেদেও বিভক্তি ছিল৷ যেমন, চিড়িয়াখানার আফ্রিকা অঞ্চল৷ ছবিতে উঠে আসা কোলন চিড়িয়াখানার গ্রিনজোনের সব প্রাণী, যারা তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকতে পারে৷
ছবি: DW/Nelioubin
ভবিষ্যতের চিড়িয়াখানা
চিড়িয়াখানার ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা নির্ভর করবে দক্ষ ব্যবস্থাপনার উপর৷ কিছু কিছু চিড়িয়াখানা কিছু প্রাণী রাখা বন্ধ করে দিচ্ছে৷ যেমন, ফ্রাঙ্কফুট চিড়িয়াখানা তাদের হাতির ঘর বন্ধ করে দিচ্ছে৷ শহরের মাঝখানে ২৭ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা এই চিড়িয়াখানা প্রাণীদের পর্যাপ্ত জায়গা দিতে পারছে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
আসছে পান্ডা
চড়ার জন্য গাছ, কৃত্রিম নদী, পছন্দসই গাছ– এ সবই করা হচ্ছে চীনের দুই পান্ডা জিয়াও কুয়িং (ছবিতে) এবং মেং মেং-এর জন্য৷ আগামী ২৪ জুন বিমানের প্রথম শ্রেণির আসনে চড়ে তারা আসছে জার্মানিতে৷ তারা আসার পর বার্লিন জুলোজিক্যাল গার্ডেনে চালু করা হবে পান্ডাপ্লাজা৷ দুই পান্ডার জন্য এত সব আয়োজনই বলে দিচ্ছে, চিড়িয়াখানায় এসব প্রাণীর জীবন পাল্টে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিড়িয়াখানা গবেষণা
চিড়িয়াখানার নতুন নতুন প্রজাতির জন্ম হচ্ছে, যাদেরকে তাদের নিজস্ব পরিবেশে ছেড়ে দেয়া হবে৷ পরিবেশ সংরক্ষণেও তারা কাজ করছে এবং প্রাণীর প্রাকৃতিক বাসস্থান সম্পর্কে দর্শনার্থীদের জানাচ্ছে৷ কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, বিভিন্ন প্রাণীর কিছু কিছু প্রজাতিকে কেবল চিড়িয়াখানায় বাঁচিয়ে রাখা অনৈতিক৷ অবিকৃত প্রাকৃতিক বাসস্থান দেয়া লক্ষ্য হওয়া উচিত৷
জার্মানিতে খেলাধুলার চেয়ে চিড়িয়াখানায় বেশি দর্শনার্থী যায়৷ মানুষ বিনোদনের জন্য এই দিকে বেশি ঝুঁকছে৷ সম্প্রতি কোলন চিড়িয়াখানায় একটা ছোট্ট খামার উদ্বোধন করা হয়েছে৷ সেখানে দর্শনার্থীরা গরু ও ছাগলের যত্ন নিতে পারবেন৷ চিড়িয়াখানা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, কোনো কিছুই এর স্থলাভিসিক্ত হতে পারে না৷ এটা কেবল প্রাণীকে মানুষের সঙ্গে যুক্ত করতেই ভূমিকা রাখছে না৷ বরং বহু বিপন্ন প্রাণীর সংরক্ষণেও কাজ করছে৷
ছবি: Picture-Alliance/dpa/P. Steffen
12 ছবি1 | 12
শুধু দেখতেই সাংঘাতিক৷ কিছু প্রাণী তাদের আচরণের মাধ্যমেও ফাঁকি দেয়৷ যেমন লেজ ঝোলা পাখি৷ মিলনের সময় যখন মাদি পাখি বাসা ছেড়ে উড়ে গেলে পুরুষ পাখি এমন চিৎকার জুড়ে দেয়, যেন শত্রু এসেছে৷ তারপর সে মাদি পাখিকে ধরে বাসায় ফিরিয়ে আনে৷ সঙ্গিনীকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে আড়াল করে রাখে৷
হাগেনবেক চিড়িয়াখানায় বেবুনদের টিলায় বসে টোবিয়াস টারাবা প্রাণীদের ইচ্ছাকৃত প্রতারণা পর্যবেক্ষণ করেন৷ সেখানে ৬ পুরুষ বেবুন তাদের হারেম ও বাচ্চাদের নিয়ে বসবাস করে৷ ছোটরা একটা কৌশল শিখে গেছে৷ অন্য দলের কোনো বেবুনকে সুস্বাদু খাবার খেতে দেখলে তারা আক্রান্ত হবার ভান করে৷ তারপর দলের সর্দারকে ডেকে আনে৷ তাদের ডাক শুনলে মনে হয় তারা বলছে, ‘‘দেখো না বাবা, কী করছে! এমন আর্তনাদ করে তারা৷''
বাবা এসে অন্য বেবুনকে তাড়িয়ে দেয়৷ তখন বাচ্চাটা ফেলে যাওয়া খাবার দখল করে৷ তবে বেবুনের থেকেও ওরাং ওটাং বেশি বুদ্ধিমান৷ চিড়িয়াখানায় তাদের কীর্তিকলাপের অনেক কাহিনি রয়েছে৷ কখনো তারা চাবি চুরি করে মুখে পুরে দেয়৷ পালানোর সুযোগ পেলে সেই চাবির সদ্ব্যবহার করে৷ কেউ না তাকালে চিড়িয়াখানার একটি ওরাং ওটাং চুরির কাজে ওস্তাদ৷ টিনের আড়ালে রাখা ফলের তাল কষ্ট করে বার করার বদলে দলের সর্দার টুয়ান সেটি ভেঙে ফেলেছে৷ স্ক্রু ছিল না দেখেই সে এই কাজে নেমে পড়েছিল৷ সে চোরেদের রাজা, তবে অপরাধ স্বীকারও করে৷
পশু-পাখি যখন কাঁদে
সন্তান মারা গেছে, এই সত্য মানতেই পারছিল না গোরিলা মা৷ মৃত সন্তানকে পিঠে নিয়ে কয়েকদিন ঘুরেছে সে৷ সন্তান বা অন্য কোনো প্রিয়জনের মৃত্যুতে ডলফিন, হাতি, বেবুন, কাক, ভালুক বা মাছের শোক পালনও হৃদয়বিদারক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gentsch
গোরিলার সন্তানশোক
জার্মানির ম্যুনস্টার চিড়িয়াখানায় এক গোরিলার বাচ্চা মারা যাওয়ার পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল৷ মা গোরিলাটিকে সবাই ডাকতো গানা আর তার সন্তানকে ডাকতো ক্লাউডিও নামে৷ ক্লাউডিও মারা গেল৷ সন্তানের মৃত্যু মা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না৷ আগের মতো সন্তানকে পিঠে নিয়েই চলাফেরা করছিল সে৷ চিড়িয়াখানার কর্মীদের কেউ কাছাকাছি গেলেই গানা তেড়ে আসত৷ সন্তানহারা গরিলা মায়ের মন শক্ত হতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gentsch
সন্তানকে সমুদ্রেই সমাধিস্থ করে মা ডলফিন
সন্তান মারা গেলে ডলফিনরাও দিশেহারা হয়ে পড়ে৷ এমনও দেখা গেছে, সদ্য মারা যাওয়া সন্তানকে মুখে নিয়ে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে মা ডলফিন৷ মুখ থেকে পড়ে সন্তানের দেহ যখন তলিয়ে যাচ্ছে, ডুব দিয়ে দিয়ে তাকে অনুসরণ করছে মা৷ বড় কেউ মারা গেলেও ডলফিনরা তাকে ছেড়ে যেতে চায় না৷ মৃতদেহকে অনেকক্ষণ ঘিরে থাকে তারা৷
ছবি: Public Domain
হাতির ‘শোকসভা’
হাতিদের শোকও হৃদয় ছুঁয়ে যায়৷ কোনো হাতি মারা গেলে সঙ্গীরা তার পাশে স্থির দাঁড়িয়ে থাকে৷ দূর থেকে অন্য হাতিরাও এসে যোগ দেয় সেই শোকে৷ প্রিয়জন হারানোর দুঃখ হাতি ভুলতেই পারে না৷ তাই অনেকদিন পরও স্বজনের কঙ্কাল বা দেহাবশেষ ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেন তাদের স্মরণ করে তারা৷
ছবি: picture alliance/WILDLIFE/M. Harvey
সেবায় মন দেয় শোকসন্তপ্ত বেবুন
এক বেবুন মারা গেলে অন্য বেবুনরা দুঃখে এতটাই কাতর হয় যে তাদের স্ট্রেস হরমোনের ঘনত্ব বেড়ে যায়৷ এবং বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, শোকে যখন দিশেহারা অবস্থা, বেবুনরা তখন একে অন্যের গায়ের লোম পরিষ্কার করায় মন দেয়৷ শোক ভোলার কী অদ্ভুত কৌশল!
ছবি: picture alliance/chromorange
পাখিদের মৃত্যুশোক
কোনো কাক মারা গেলে তার মৃতদেহ ঘিরে অন্য কাকদের শোক অনেকেই হয়ত দেখেছেন৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রিয়জনের শোকে কাক নাকি অনেক সময় খাওয়া-দাওয়াই বন্ধ করে দেয়৷ পাখিদের মধ্যে যারা এক সঙ্গী নিয়েই জীবন পার করে দেয়, তারা নাকি সঙ্গীর মৃত্যুর পর না খেয়ে খেয়ে মারাও যায়৷ রাজহাঁস আর কিছু গায়ক পাখি নাকি প্রায়ই প্রিয়জনের মৃত্যুর পর এভাবে মৃত্যুকে বরণ করে নেয়৷
বার্লিনের চিড়িয়াখানার এই বিড়াল আর ভালুকটি যেন ছিল ‘হরিহরাত্মা’৷ একজনের কাছ থেকে আরেকজনকে আলাদাই করা যেত না৷ ভালুকটি মারা যাওয়ার পর তাই আজব এক সমস্যা দেখা দিল৷ দেখা গেল, বিড়ালটি আর ভালুকের খাঁচাটি ছেড়ে যাচ্ছে না৷ কয়েকদিন অবিরাম ‘মিঁউ’ ‘মিঁউ’ করে ডেকে ডেকে বন্ধুর প্রতি শোক জানিয়েছিল সে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Rüsche
মনিবের কবর পাহারা দেয় কুকুর
কুকুরের প্রভুভক্তির অনেক গল্প আছে৷ কুকুর তার মনিবকে এতটাই ভালোবাসে যে মনিব মারা গেলে তার কবরে গিয়ে সে বিলাপ শুরু করে৷ জার্মানির একটি কুকুর তো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও বড় খবর হয়েছিল৷ কুকুরটির নাম কাপিটান৷ তার মনিব আর্জেন্টিনায় মারা যান৷ জার্মান শেফার্ডটি আর্জেন্টিনার ভিলা কার্লোসে মনিবের ওই সমাধিস্থল বহু বছর পাহারা দিয়েছে৷