বাড়ছে বাউলের জনপ্রিয়তা
১৩ ডিসেম্বর ২০১৪
এবার আরেকটি ঘটনা৷ নভেম্বর মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়৷ তদন্তকারীরা হত্যার কারণ উদঘাটনে কাজ করছেন৷ তবে অধ্যাপকের ছেলে ও সহকর্মীদের ধারণা বাউল সাধনা করার কারণেই হয়ত তাঁকে খুন করা হয়েছে৷ নিহত এই অধ্যাপক বাউল দর্শন নিয়ে সাপ্তাহিক আলোচনায় নিয়মিত অংশ নিতেন৷ এছাড়া তিনি ক্যাম্পাসে মুখ ঢাকা বোরকা পরা নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলে জানা যায়৷
দুটো ঘটনারই শিকার বাউল সমাজ৷ এর পরও বাউল দর্শনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে বলে দাবি বাউল সমাজের নেতাদের৷ ৩৫ বছরের মোহাম্মদ আয়নুদ্দীন, যিনি নিজেকে একজন বাউল অনুরাগী মনে করেন, তিনি এএফপিকে বলেন, ‘‘হামলা ও প্রতিদিনকার হয়রানির পরও বেশি বেশি লোক বাউল দর্শনের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন৷''
সপ্তদশ শতকে আবির্ভাব হওয়া বাউল দর্শনকে জনপ্রিয় করেন লালন শাহ৷ ধর্মীয় সহনশীলতার কথা সমৃদ্ধ তাঁর গানগুলো অনেক কবি ও গুনিজনের জন্য ছিল উৎসাহমূলক৷ হিন্দুবাদ ও সুফিবাদের মিশ্রণ বাউল দর্শনের মূল কথা হলো মানবতা৷
নতুন বাউলের কথা
৭০ বছর বয়সি দম্পতি আফতাব ও সালেহা৷ সম্প্রতি লালনের মাজারে তাঁদের দেখা পান এএফপি-র সাংবাদিক৷ ঢাকায় এই দম্পতি ভালো একটি রেস্টুরেন্টের মালিক ছিলেন৷ সেটার দায়িত্ব সন্তানদের কাছে দিয়ে দু'জনে বাউল হয়ে গেছেন৷ শেষ বয়সটা তাঁরা সারা দেশ ঘুরে গান গেয়ে বেড়াতে চান৷
সাত বছর আগে বাউল হন বানাত আলী ফকির৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে তাঁদের ধর্ম হবে মানবতা৷ তাঁরা মুসলমান, হিন্দু কিংবা খ্রিষ্টান হবেন না৷''
লালন শাহ মাজারের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আলী ফকির বলেন, ‘‘আগে মাত্র কয়েকশ মানুষ মাজারে আসতো৷ কিন্তু এখন সংখ্যাটা প্রতিদিন বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে দুই থেকে পাঁচ হাজারে৷ বাউলরা মানবতার কথা বলে৷ মানুষ আর জাতের মধ্যে কোনো বিভাজন করে না৷''
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি)