ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনোয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলের সেনা। তিনি বাড়িতে আছেন কিনা জানা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, ''গতকালই আমি বলেছিলাম, গাজা ভূখণ্ডের যে কোনো জায়গায় আমাদের সেনা পৌঁছাতে পারবে। আজ আমাদের সেনা সিনোয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে। হতেই পারে তিনি ওখানে নেই। তিনি পালিয়েও যেতে পারেন। তবে আজ না হয় কাল, তাকে ধরা হবেই।''
সিনোয়ারের বাড়ি দক্ষিণ গাজায় খান ইউনিস শহরে বলে জানা গেছে। বুধবার সেখানে ইসরায়েলের সেনা খুবই তৎপর ছিল। ইসরায়েলের ধারণা, হামাসের নেতারা এখন দক্ষিণ গাজায় আছেন। কারণ, প্রথমদিকে লড়াইটা উত্তর গাজায় সীমাবদ্ধ ছিল। তারা তখন দক্ষিণ গাজায় চলে এসেছেন।
সিনোয়ার দুই দশকের বেশি সময় ইসরায়েলের জেলে ছিলেন। দুই ইসরায়েলি সেনা ও তাদের চারজন ফিলিস্তিনি সঙ্গীকে খুন করার দায়ে তার শাস্তি হয়েছিল।
২০১১ সালে ইসরায়েলের সেনা জিলাদ শালিটের মুক্তির বিনিময়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তার মধ্যে সিনোয়ারও ছিল। ২০১৭ সালে সিনোয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হন।
জাতিসংঘের প্রধানের বক্তব্য
জাতিসংঘের প্রধান আন্তেনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, গাজার কোনো এলাকাই আর নিরাপদ নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গুতেরেস বলেছেন, ''গাজায় পুরো মানবিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে। ফিলিস্তিন তো বটেই, গোটা অঞ্চলের শান্তি ও সুরক্ষার উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।''
গুতেরেস জানিয়েছেন, ''এই পরিস্থিতি যে কোনো মূল্যে এড়াতে হবে।'' ২০১৭ থেকে গুতেরেস জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের পদে আছেন। এই প্রথম তিনি জাতিসংঘের চার্টারের আর্টিকেল ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সামনে গাজার বিষয়টি নিয়ে এলেন।
গুতেরেস বলেছেন, বর্তমানে গাজায় যে পরিস্থিতি রয়েছে, তাতে মানবিক ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। যুদ্ধবিরতি হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
হামাসের সুড়ঙ্গে ইসরায়েলের আক্রমণ
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজার ভিতরে ঢুকে হামাস সুড়ঙ্গে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি দক্ষিণে পালাচ্ছেন।
ছবি: Ammar Awad/REUTERS
পালাচ্ছে মানুষ
ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, উত্তর গাজা থেকে অন্তত ৫০হাজার বেসামরিক মানুষ দক্ষিণ গাজার দিকে পালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনা তাদের পালাতে সাহায্য করেছে। ফোন করে, লিফলেট দিয়ে তাদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছে।
ছবি: Belal Khaled/AA/picture alliance
সুড়ঙ্গের সন্ধানে সেনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনা। হামাসের সুড়ঙ্গ খুঁজে বার করে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, হামাস যা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি।
ছবি: Israeli Defense Forces/Handout via REUTERS
রকেট প্রস্তুকারকের মৃত্যু
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ রকেট প্রস্তুতকারক ব্যক্তি ইসরায়েলের সেনার হাতে নিহত হয়েছেন।
ছবি: Abed Khaled/AP Photo/picture alliance
উত্তর গাজায় ক্ষমতা হারিয়েছে হামাস
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজায় হামাস তার ক্ষমতা হারিয়েছে। এখনো দক্ষিণ গাজায় তারা লড়াই চালাচ্ছে। এবং সে কারণেই হাজার হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে চলে যাচ্ছে। উত্তরের দখল কার্যত এখন ইসরায়েলের সেনার হাতে।
ছবি: Israel Defense Forces/Handout via REUTERS
১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস
ইসরায়েলের সেনার দাবি, তারা উত্তর গাজায় হামাসের ১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে। সুড়ঙ্গ অর্থাৎ, মাটির নিচে বাংকার। ইসরায়েলের দাবি, বেসামরিক বাড়ি, হাসপাতালের নিচে বাংকার বানিয়ে হামাস নিজেদের 'সন্ত্রাসী' কাজকর্ম চালাতো। সে কারণেই হামাসকে আক্রমণের সময় বহু বেসামরিক ভবনে আক্রমণ চালাতে হচ্ছে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
বাংকারের কাঠামো
ইসরায়েলের দাবি, বাংকার গুলি ২ মিটার উঁচু এবং এক মিটার চওড়া। তার ভিতর জলের লাইন, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা সবই করা আছে। ফলে চাইলে মানুষ সেখানে টানা কিছুদিন থাকতে পারে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
জি-৭ এর আবেদন
জি-৭ দেশগুলি ইসরায়েলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সংঘাত-বিরতির জন্য। অ্যামেরিকার মতো তারাও বলেছে, যুদ্ধবিরতি না হোক, কৌশলগত বিরতি দিক ইসরায়েল। যাতে ওই সময়ে বেসামরিক মানুষ অন্তত ঘর থেকে পালাতে পারেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা কৌশলগত বিরতি দিচ্ছে।
ছবি: Jack Guez/AFP
ইটালির হাসপাতাল জাহাজ
ইটালি গাজার কাছে সমুদ্রে একটি হাসপাতালের পরিকাঠামো যুক্ত জাহাজ পাঠিয়েছে। আহত বেসামিরক ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ওই জাহাজ পাঠানো হয়েছে।
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
জি৭ নেতাদের আবেদন
গ্রুপ অফ সেভেন বা জি৭ নেতারা বুধবার একটি ভিডিও বৈঠক করেছেন। তাদের মত হলো, গাজায় সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেয়া। এর জন্য সংঘর্ষবিরতি প্রয়োজন।
তারা ইরানের কাছেও আবেদন জানিয়ে বলেছে, তারা যেন হেজবোল্লাহ বা হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন না করে।