অচেতন না করে জবাই হওয়া প্রাণীর মাংসে ‘অর্গানিক' ট্যাগ লাগানো যাবে না বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ-র শীর্ষ আদালত৷ ফলে হালাল মাংসকে আর ‘অর্গানিক' বলা যাবে না৷
ছবি: picture-alliance/maxppp/J. PELAEZ
বিজ্ঞাপন
‘ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস' বা ইসিজে মঙ্গলবার এক রায়ে জানিয়েছে, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী জবাই হওয়া প্রাণীর মাংসে অর্গানিক ট্যাগ লাগানো যাবে না৷
ইসিজে বলছে, ইইউর অর্গানিক মানদণ্ডে প্রাণীর কল্যাণের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব পায়৷ কিন্তু ধর্মীয় রীতিতে জবাই করলে সেই মানদণ্ড বজায় থাকে না৷
ধর্মীয় রীতিতে সাধারণত কোনো প্রাণীকে অচেতন না করে এক ঝটকায় জবাই করা হয়৷ ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রাণীটি অচেতন হয়ে পড়ে৷ ধর্মচর্চার স্বাধীনতা আইনে এটি সিদ্ধ হলেও অ্যানেস্থেসিয়ার ব্যবস্থা না থাকায় প্রাণী অনেক বেশি কষ্ট পায়, যা অর্গানিক মানদণ্ডের সঙ্গে যায় না, বলে মনে করছে আদালত৷
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের সংস্থা ওএবি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কসাইখানায় প্রাণীদের কল্যাণ ও অধিকার নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে৷ ইউরোপের বাজারে যে সব মাংসদ্রব্য হালাল নামে বিক্রি হয়, তাদের গায়ে ‘অর্গানিক' তকমা লাগানোর বিরোধিতায় নেমেছিল তারা৷ তাদের আন্দোলনেরই ফসল এই রায়৷
মুসলিম পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় ১০টি ভ্রমণ স্থান
পর্যটন সংস্থা ‘ক্রিসেন্ট’ সম্প্রতি মুসলিম পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য কয়েকটি স্থানের কথা উল্লেখ করেছে যেখানে হালাল খাবার ও নামাজ আদায়ের স্থান রয়েছে৷
ছবি: DW/S. Dege
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুব্যবস্থা রয়েছে৷ আছে হালাল খাবারের দোকান, পাশাপাশি রয়েছে নামাজ পড়ার স্থান৷ সিডনি, মেলবোর্ন বা গোল্ড কোস্ট সব শহরেই পাবেন এসব সুব্যবস্থা৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
ভারত
ইসলামি রাষ্ট্র না হলেও ভারতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা অনেক৷ মুসলিম পর্যটকরা দেশটির শ্রীনগরের হযরতবল মাজারে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন৷ বিশ্বাস করা হয় সেখানে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাথার চুল রয়েছে৷
ছবি: Fotolia/Tepfenhart
হংকং
হংকং এ বিশাল আকারের ৬টি মসজিদ রয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্টেশনের কাছে রয়েছে জামিয়া মসজিদ৷ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানে ৪৪টি রেস্তোরাঁ, খাদ্যদ্রব্যের দোকান এবং পিৎজা ও কাবাব হাউজ রয়েছে, যেগুলো হালাল৷
ছবি: A.Ogle/AFP/Getty Images
তানজানিয়া
তানজানিয়ার সেরেঙ্গেটি জাতীয় উদ্যান এবং জানজিবার দ্বীপ পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ৷ আফ্রিকার এই দেশটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে অতি জনপ্রিয়, কারণ এখানে রয়েছে অনেক মসজিদ এবং হালাল খাবারের দোকান৷
জার্মানি
জার্মানিতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করছে তুর্কীরা৷ এ কারণে বড় মসজিদ বা কাবাবের দোকান খুঁজে পাওয়াটা জার্মানিতে খুব একটা মুশকিল নয়৷
ছবি: DW/S. Dege
বসনিয়া হার্ৎসেগোভিনা
সার্বিয়া যুদ্ধে যেসব মুসলিম স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, সেসব স্থান পরিদর্শন করতে বসনিয়ায় যান অনেক মুসলিম পর্যটক৷ মুসলিম পর্যটকদের জন্য বিশেষ বিশেষ প্যাকেজ দিয়ে থাকে সেখানকার ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো৷
ছবি: World Music Centre
থাইল্যান্ড
সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে ঢুকলেই আপনি নামাজের স্থান খুঁজে পাবেন৷ যদিও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীর সংখ্যা সেখানে বেশি, তবুও থাইল্যান্ড মুসলিম পর্যটকদের পছন্দের স্থান হিসেবে পরিচিত৷ কেবল রাজধানী ব্যাংককে রয়েছে ১০০টি মসজিদ৷
ছবি: picture-alliance/ZB
দক্ষিণ আফ্রিকা
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ১.৫ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ এ কারণে খুব সহজেই সেখানকার বড় বড় শহরগুলোতে হালাল খাবারের দোকান এবং মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুর এমন একটি অমুসলিম দেশ, যেটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়৷ হালাল খাবার, পানীয়, নামাজের স্থান- এই তিনটির বিচারে সিঙ্গাপুর মুসলিম পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য বলে মনে করা হয়৷
ছবি: Reuters
যুক্তরাজ্য
ব্রিটেনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি৷ এ কারণে দেশটিতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷ প্রধান শহরগুলোতে মসজিদ খুঁজে পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়৷ বার্মিংহামে ১৫০টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে৷
ছবি: picture alliance / dpa
10 ছবি1 | 10
হালাল-বিতর্কে ক্ষুব্ধ ইহুদিরাও
ইসিজের রায়ের চরম বিরোধিতা করেছে ইউরোপের ইহুদি সংগঠন ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ জিউস'৷ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ইওসেফ শুস্টার বলেন, ‘‘এই রায় ইহুদিবিরোধী৷ ইহুদিমতে পবিত্র মাংস, যাকে ‘কোশার' বলা হয়, তাতেও প্রাণীকে অচেতন করার কোনো নিয়ম নেই৷ এতে করে ইউরোপে ইহুদি জীবনযাপন বিষয়ে মানুষের অজ্ঞতাই প্রমাণিত হচ্ছে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘সৌভাগ্যবশত ইউরোপে বিশাল সংখ্যায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ রয়েছেন, যাঁরা প্রাণীকে অজ্ঞান করা আর হালালের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখেন না৷ তাঁদের কাছে জবাই হতে চলা প্রাণীর স্থিতি ও মুসলমান কসাইয়ের উপস্থিতিই গুরুত্বপূর্ণ৷''
তবে ইউরোপের একাধিক প্রাণীকল্যাণ বিষয়ক সংগঠন এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷