1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাসপাতালে হাতকড়া এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন

২ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের দুটি ছবি বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে৷

হাতরড়া পরা এক ব্যক্তি (প্রতীকী ছবি)
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কারাবন্দি হলেও হাসপাতালে একজন বয়স্ক অসুস্থ মানুষকে হাতকড়া পরানো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। (প্রতীকী ছবি)ছবি: Marvin Recinos/AFP/Getty Images

ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেও হাতকড়া পরানো হয়েছে তাকে৷ নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন মারা গেছেন, তবু থামছে না বিতর্ক ও সমালোচনা৷

আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কারাবন্দি হলেও হাসপাতালে একজন বয়স্ক অসুস্থ মানুষকে হাতকড়া পরানো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

কারা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেও নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে হাতকড়া পরানোর কথা স্বীকার করেছে৷ তবে তাদের দাবি, মৃত্যুর আগে যখন ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ছিলেন তখন তার হাতে হাতকড়া ছিল না।

মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নূরুল মজিদ মারা যান। কারাকর্তৃপক্ষ জানিয়েছে , গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ছিলেন।

কারা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নূরুল মজিদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ ছিল। সর্বশেষ তিনি ডায়রিয়া এবং এ-সংক্রান্ত পরবর্তী জটিলতায় ভুগছিলেন। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, "প্রায় এক মাস আগে নূরুল মজিদ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলে তাকে আবার কারা হাসপাতলে নিয়ে আসা হয়। তিনি কিছুটা অসুস্থ বোধ করছিলেন। এ কারণে তাকে নতুন করে বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো হয়েছিল। তবে আইসিইউতে সিট খালি না থাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।”

কারা অধিদপ্তরের সহকারি মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও উন্নয়ন) জান্নাত-উল-ফরহাদ বলেন, "তিনি একজন বয়স্ক মানুষ। নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেপ্টেম্বরে তাকে পাঁচ-ছয়বার কারাগার থেকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। আলোচিত হাতকড়া পরানো ছবিটি তখনকার কোনো একদিনের হতে পারে।”

তিনি বলেন, "নূরুল মজিদ আইসিইউতে মারা গেছেন। আইসিইউতে নেয়ার আগে শরীরে কোনো স্বর্ণালংকার বা ধাতব কিছু চিকিৎসকরা রাখতে দেন না। ফলে আইসিইউতে তার হাতকড়া ছিল না।”

"নিয়ম অনুযায়ী জেলখানার বাইরে কোনো আসামিকে নেয়া হলে হাতকড়া পরাতে হয়। দুর্ধর্ষ আসামি হলে থাকে ডান্ডাবেড়ি, যদি আসামির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় চিকিৎসক বলেন হাতকড়া খুলে রাখতে হবে, কেবল তখন খোলা যায়। নিয়ম অনুযায়ী, নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দিকে চিকিৎসার সময় হাতকড়া পরিয়ে তা বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখতে হয়,” দাবি তার।

আইন কী বলে?

পুলিশ প্রবিধানের ৩৩০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বা তদন্তস্থলে পাঠানোর জন্য পুলিশ বন্দিকে পালানো রোধে যা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি কড়াকড়ি উচিত নয়। হাতকড়া বা দড়ির ব্যবহার প্রায় ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ও অমর্যাদাকর। এতে আরো বলা হয়েছে, বয়স বা দুর্বলতার কারণে যাদের নিরাপত্তা রক্ষা করা সহজ ও নিরাপদ, তাদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা উচিত  না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, "সিআরপিসিতে সরাসরি হাতকড়ার কথা বলা নাই। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ হাতকড়া ব্যবহার করতে পারে। একই বিষয়ে পুলিশ রেগুলেশনেও একই ধরনের কথা বলা হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা প্রিজনার্স অ্যাক্ট এবং জেলকোড এই দুই জায়গায় অসুস্থ অবস্থায় হাতকড়া পরানোর বিধান নাই। ফলে, অসুস্থ আসামিকে হাতকড়া পারানো যাবে না।”

"আর ২০১৮ সালে একইরকম একটি ঘটনায় অসুস্থ আসামিকে হাতকড়া পরানোর পর  হাইকোর্ট একটি রুল দেয়। তাতে বলা হয়, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে থাকা অবস্থায় হ্যান্ডকাফ পরানো যাবে না। আসামি হলেও তার মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে,"  বলেন তিান।

তার কথা, " ফলে, সাবেক শিল্পমন্ত্রীর ক্ষেত্রে যা করা হয়েছে, তা আইন , সংবিধান ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তাকে যদি আইসিইউর বাইরে হাসপাতালের বেডেও হ্যান্ডকাফ পরানো হয়ে থাকে, তা-ও আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তার মতো একজন বয়স্ক মানুষকে হাসপাতালে নেয়া হলো চরম অসুস্থ অবস্থায়। সেখানেও পুলিশ পাহারা ছিল। ফলে তার ক্ষেত্রে পালিয়ে যাওয়া বা অনিরাপদ মনে করার কোনো কারণ ছিল না।”

আদালতের নির্দেশ

২০১৭ সালের ২৬ মে ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনি হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সেই ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ প্রায় ৪২ জনকে আটক করে পুলিশ। নাজমুল অসুস্থ থাকায় আশুলিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে তাকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হাসপাতালে হাতকড়া পরিয়ে  বিছানার সঙ্গে আটকে রাখা হয়। এমনকি খাবার সময় নাজমুল তার হাতকড়া খুলে রাখার অনুরোধ জানালেও পুলিশ সে অনুরোধ শোনেনি।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনা হলে আদালত তখন রুল দেন। ২০১৮ সালে রায়ে আদালত হাতকড়া পরানোর ক্ষেত্রে পিআরবির বিধান মেনে চলার নির্দেশ দেন। আদালত বলেন, এই বিধানের বাইরে গিয়ে কাউকে হাতকড়া পরালে তা হবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার করা যাবে না মর্মে হাইকোর্ট রায় দেয়।

আর ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আসামিদের ডাণ্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর বিষয়ে নীতিমালা করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়। রিটটির এখনো নিস্পত্তি হয়নি।

ওই সময়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমকে মায়ের জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়। তিনি নিজেই মায়ের জানাজা পড়ান। সেই সময় অনুরোধের পরও তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খুলে দেয়নি পুলিশ। সেই ঘটনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আদালত ওই রুল দেন।

মানবাধিকার কর্মী ও কারা কর্মর্তারা যা বলছেন

সাবেক ডিআইজি প্রিজন মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, " আসলে কখন হ্যান্ডকাফ পরানো যাবে  আর কখন যাবে না তা কারাবিধিতে স্পষ্ট করে বলা নাই। বিষয়টি নির্ভর করে নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয়তার ওপর।  সাবেক শিল্পমন্ত্রীর ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, তাকে হাসপাতালে হাতকড়া না পরালেও হতো। কারণ, তাকে বাইরে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হলেও সেখানে  নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ ছিল। তিনি বয়স্ক এবং অসুস্থ। ফলে তিনি যে পালাবেন না বা পলাতে পারবেন না তা বুঝতে কারুর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আসলে এটা মানবিকতা এবং বোঝার বিষয়। আর মানবাধিকারও বুঝতে হবে।  মানবাধিকার সবার জন্য।” " ওয়ান ইলেভেনের সময় অনেক সিনিয়র রাজনীতিবিদের কোমরে দড়ি বেঁধে  আদালতে নেয়ার প্রশ্নে আমি বাধা দিয়েছিলাম। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলাম, তারা পালাবেন না। তারা পালাননি,” বলেন তিনি।

আর মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, " নূরুল মজিদের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এখানে সংবিধান, আইন ও উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

তার কথা, " আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো আসামির সঙ্গে নিষ্ঠুর বা অমানবিক আচরণ করা যায় না। সেখানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল মজিদ হুমায়ূনের সঙ্গে যেটা ঘটেছে, তার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটি মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন। একজন আসামি, যিনি মৃত্যুশয্যায়, তার হাতেও হাতকড়া পরিয়ে রাখতে হবে!”

কারা হেফাজতে মৃত্যু

সাবেক শিল্পমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল মজিদকে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলাশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নরসিংদী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। গত বছরের চার আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় একটি হত্যা মামলার আসামি হিসাবে তিনি গ্রেপ্তার হন। তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার হালিম ডয়চে ভেলেকে জানান, "গ্রেপ্তারের সময় তিনি সুস্থ ছিলেন। তারপর কয়েকবার তাকে যখন নরসিংদীর আদালতে হাজির করা হয়, তখনও তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছিল না। শুধু প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের মাধ্যমে তাকে হাজির দেখানো হচ্ছিল। এই সময়ে আমরা তার সঙ্গে দেখাও করতে পারিনি। আমরা হাসপাতালেও তার সাথে দেখা করার সুযোগ পাইনি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর খবর পাই।” " তার হাতে হাসপাতালে যে হাতকড়া ছবিতে দেখেছি তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন,” বলেন তিনি।

তার ভাই মামুন মাহমুদও একই কথা জানিয়ে বলেন, "আমরা তো তার সাথে দেখা করতে পারছিলাম না। তিনি কেমন ছিলেন, কী অবস্থায় ছিলেন তা জানতাম না। আর মৃত্যুর পর কারা লাশ গ্রহণ করেছে, তা-ও জানি না। এলাকাবাসী জানাজা দিয়ে দাফন করেছে। আর ছবি দেখেছি যে, হাসপাতালে তার হাতে হাতকড়া ছিল। আমরা তাকে তো হাসপাতালে দেখতে যেতে পারিনি।”

অ্যাডভোকেট খন্দকার হালিম বলেন, " ঢাকায় এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় একটি আইনজীবী প্যানেল গত বছরের ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী এমপি ও নেতা-কর্মী যারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তাদের মামলাগুলো পরিচালনার চেষ্টা করছি। গত কয়েকমাস ধরে তাদের আর আদালতে হাজির করা হচ্ছে না নিরাপত্তার কথা বলে। তাদের অনলাইনে বা প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের মাধ্যমে হাজির করা হয়। কাউকে জেল হাজত পর্যন্ত আনা হলেও কোর্টে তোলা হয় না। ফলে তাদের শারীরিক অবস্থা জানতে পারছি না। এরই মধ্যে কারা হেফাজতে আরো কয়েকজন মারা গেছেন।”

গত বছর ১১ নভেম্বর থেকে চলতি ১১ মার্চ পর্যন্ত চার মাসে বগুড়া কারাগারে বন্দি থাকা পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়। তাদের অধিকাংশই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করে কারা কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যান জেলার গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মতিন ওরফে মিঠু (৬৫)। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ওরফে ঝুনু (৫৭) ২৬ নভেম্বর কারাবন্দি অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলে কারাকর্তৃপক্ষ দাবি করে। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ২৫ নভেম্বর মারা যান শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ (৬৭)। ১১ নভেম্বর কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে রতন (৫৮)। ১১ মার্চ  বগুড়া জেলা কারাগারে বন্দি এমদাদুল হক ওরফে ভট্টু (৫২) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে অসুস্থ বোধ করলে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলে ন," ৫ আগস্টের পর কারাগারে আটক আওয়ামী লীগ নেতাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রতিটি মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হৃদরোগসহ নানা ধরনের রোগের কথা বলা হলেও তাদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ আছে। এই মৃত্যুগুলোর পিছনে নির্যাতনের একটা ইতিহাস থাকার সম্ভাবনা আছে।” তার কথা, "আমরা বিগত সরকারগুলোর সময়েও এই ধরনের হৃদরোগে মৃত্যুর কথা শুনেছি। হৃদরোগে, হাসপাতালে নেয়ার পথে বা অন্য কোনো কারণে । পুলিশ বা কারা হেফাজতে ওইসব মৃত্যু প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।”

আর আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন," হেফাজতে প্রতিটি মৃত্যুরই আইনগত তদন্ত হওয়ার বিধান আছে। হেফাজতে মৃত্যুর ব্যাপারে যাদের হেফাজতে মৃত্যু হবে, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। আর যদি কোনো রোগে মারা যান, তাহলে তার সঠিক চিকিৎসা হয়েছে কিনা তারও তদন্ত হওয়া দরকার।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ