হিজাব পরে ভোট দেওয়া যাবে না, জানিয়েছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। তবে পরে তার জন্য তারা দুঃখপ্রকাশ করে শহরের প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পশ্চিমপ্রান্তের শহর ব্যার্গহেইম। নির্বাচনের দিন সেখানেই একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠে। হিজাব পরে এক নারী ভোট দিতে গেলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য শহরের প্রশাসন জানিয়েছে, ওই নারীকে বাধা দেওয়া উচিত হয়নি। তাকে ভোট দিতেও দেওয়া হয়।
হিজাব ছাড়া হাঁটলেই ‘বিপ্লব’!
নারীর মাথায় নেই হিজাব৷ এমন দিন যে আসবে ইরানে, তা এতদিন ছিল কল্পনাতীত৷ বদলালো কি রাস্তাঘাটের চিত্র, দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/Ap Photo/E. Noroozi
নীতিপুলিশি চলবে...
ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায় বহাল আছে নীতিপুলিশ, যাদের কাজই হিজাবহীন নারীদের গ্রেপ্তার করা৷ ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর আইন প্রণয়ন করে ঠিক করা হয় নারীদের পোশাকনীতি৷ সেই নীতির খেলাপ হলেই গ্রেপ্তার করা হবে হিজাব না-পরা নারীদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Taherkenareh
পরিবর্তন আসবেই?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী দমকলকর্মী সংবাদসংস্থা এপিকে জানান, ‘‘আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এই আইনের কারণে আমি ভীত৷ পুলিশ আমাদের পেছনে লেগে থাকলেও আমাদের থামাতে পারবে না৷ কারণ পরিবর্তন আসবেই৷’’
ছবি: picture-alliance/Ap Photo/E. Noroozi
মধ্যপন্থার হিজাব
আইন বনাম স্বাধীনতা- এই দোটানায় সরকারের মতোই বাঁধা পড়েছেন ইরানের নারীরাও৷ বের করেছেন অভিনব উপায়৷ গোটা মাথা ঢাকা হিজাবের বদলে ‘ক্যাসুয়াল হিজাব’ বেছে নেন৷ এই হিজাবের বৈশিষ্ট্য এই যে সেটা পড়লে চুলের অল্প অংশই ঢাকা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/Ap Photo/E. Noroozi
বাজারের হিজাব
তেহরানের বৃহত্তম বাজার ‘গ্র্যান্ড বাজার’-এও আজকাল বেশি বেক্রি হচ্ছে এই ‘ক্যাসুয়াল হিজাব’, জানাচ্ছে এপি৷ নানারঙের এই আপোষের হিজাব পাওয়া যাচ্ছে তেহরানসহ অন্যান্য শহরেও৷ এপি তার প্রতিবেদনে এটাও জানিয়েছে যে বাজারের বেশিরভাগ ক্রেতা নারীই পরেছিলেন ক্যাসুয়াল হিজাব৷ খুব কম নারীদের গায়ে ছিল নিকাব বা চাদর৷
ছবি: picture-alliance/Ap Photo/E. Noroozi
হিজাব ছাড়া কতজন?
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নয় দিনে আনুমানিক প্রায় ২৪জন নারীকে রাস্তায় দেখা গেছে কোনো রকমের হিজাব ছাড়াই৷ ২০১৮ সালের একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ইরানের মোট ১৩ শতাংশ নারীই সম্পূর্ণ হিজাব পরেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Salemi
ভবিষ্যতে বদলাবে কি এই আইন?
কট্টরপন্থিরা ইরানে শক্তিশালী হলেও সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে নারীদের চয়নক্ষমতার পারদ৷ ১৯৮০ সালে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী হিজাবের পক্ষে থাকলেও বর্তমানে সেই সংখ্যা এসে নেমেছে ৪৫ শতাংশে৷ ফলে ভবিষ্যতে যে একেবারেই বদলাবে না ইরানে নারীদের হিজাব-ব্যবস্থা, তা নিশ্চিতভাবে এখনই বলা যাচ্ছে না৷
ছবি: picture-alliance/Ap Photo/E. Noroozi
6 ছবি1 | 6
ওই নারীরঅভিযোগ, হিজাব পরে মুখ ঢেকে তিনি ভোট দিতে গেছিলেন। ভোটগ্রহণ কর্মীরা তাকে জানান, হিজাব পরে ভোট দেওয়ার নিয়ম নেই। তাকে হিজাব খুলে মুখ দেখিয়ে ভোট দিতে হবে। ভোটগ্রহণ কর্মীদের বক্তব্য ছিল, জার্মানির ভোট দেয়ার আইন অনুযায়ী, ভোটদাতাকে তার পরিচয় স্পষ্ট করতে হবে। কিন্তু হিজাব পরলে মুখ কাপড়ের আড়ালে থেকে যায়। পরিচয় স্পষ্ট হয় না। সে কারণেই ওই ২১ বছরের তরুণীকে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই নারীর সঙ্গে ভোটকর্মীদের কথাবার্তা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে চলে আসে। টেলিভিশন চ্যানেলেও দেখানো হয়। অভিযোগ ওঠে ভোটকর্মীরা বৈষম্য করেছেন। তাদের কথাবার্তায় ইসলামোফোবিয়া ধরা পড়েছে।
ওই নারী এরপর প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ শুনে প্রশাসন জানায়, ওই তরুণী ভোট দিতে পারবেন। এরপর তিনি গিয়ে ভোট দিয়ে আসেন। প্রশাসন জানিয়েছে, হিজাব পরে ভোট দেয়ায় জার্মানিতে কোনো আপত্তি নেই। বোরখা পরে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি তোলা যায়। কারণ, বোরখায় মুখ দেখা যায় না। কিন্তু হিজাবের ক্ষেত্রে সে সমস্যা নেই।
ওই নারীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে বলেও শহরের প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তবে ইসলামোফোবিয়া থেকে ওই নারীকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা অস্বীকার করেছে প্রশাসন।