রক্ষণশীল মুসলিম দেশ পাকিস্তানে চলতি বছরের জুনে হিজড়াদের বিয়ের বৈধতা দিয়ে একটি ফতোয়া জারি করেছে সে'দেশের আলেম সমাজ৷ এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে৷
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তানের হিজড়াদের দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণার কথা৷ পাশাপাশি তাদের মধ্যে বিয়ের বৈধতার বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে৷ লাহোরের তানজিম ইত্তেহাদ-ই-উম্মত নামের স্বল্পপরিচিত একটি ধর্মীয় সংগঠনের ৫০ জন আলেম গত জুন মাসে ফতোয়া জারি করেন৷ ফতোয়ায় বলা হয়, ইসলাম ধর্মানুযায়ী, যেসব হিজড়ার দেহে নারী বা পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ‘দৃশ্যমান চিহ্ন' দেখা যাবে, তারা তাদের বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করতে পারবে৷ কিন্তু যাদের শরীরে উভয় লিঙ্গের ‘দৃশ্যমান চিহ্ন' থাকবে তারা বিয়ে করতে পারবে না৷ তবে এ শারীরিক লক্ষণ বা চিহ্নগুলো কী, তা ফতোয়ায় সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি৷
‘নাউ দিস নিউজ' তাদের ফেসবুক পাতায় ভিডিওটি শেয়ার করার পর ১৬ লাখ বার দেখা হয়েছে৷ শেয়ার হয়েছে অন্তত ১৩ হাজার বার৷
ফতোয়াটি মানার ব্যাপারে অবশ্য কোনো আইনি বাধ্যবাধ্যকতা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম৷ পাকিস্তানের হিজড়া অধিকার আন্দোলন কর্মীরা এ ফতোয়াকে ‘ভালো পদক্ষেপ' হিসাবে সতর্কতার সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছেন৷ কারণ, তাঁরা বলছেন, এ বিষয়ে মানুষের মনোভাব এখনও বদলায়নি৷
হিজড়াদের নিয়ে অজ্ঞতার কারণে অনেকেই হিজড়া বিয়েকে সমলিঙ্গের বিয়ে ভেবে এ নিয়ে অভিযোগ তোলে৷
বিশ্বের বেশ কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হলেও, তারা বৈষম্যের শিকার হন৷ ছবিঘরে থাকছে এমনই আটটি দেশের কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তুরস্ক
১৮৫৮ সালে অটোমান সাম্রাজ্য সমকামিতাকে বৈধতা দেয়৷ এরপর তুরস্ক স্বাধীন হলে সেই আইন বলবৎ রাখে৷ তবে সে দেশের সংবিধানে সমকামীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা না থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে যেমন তেমনি সামাজিকভাবেও সমকামীদের এখনও বৈষম্যের শিকার হতে হয়৷
ছবি: picture-alliance/abaca/H. O. Sandal
মালি
পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির সংবিধানে সমকামী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়নি৷ তবে দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ সমকামিতা পছন্দ করে না৷ তাই বৈধ হলেও মালির সমকামীরা বেশ ভালোই বৈষম্যের শিকার হন৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Saget
জর্ডান
১৯৫১ সালে দেশটিতে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হয়৷ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশের তুলনায় সেখানকার সমকামীরা বেশ ভালোই আছে৷ সরকারও আইন করে সমকামীদের ‘অনার কিলিং’-এর হাত থেকে রক্ষা করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
ইন্দোনেশিয়া
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস এই দেশটিতে৷ সেখানকার আইনে সমকামিতাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়নি৷ ২০০৩ সালে একবার সেরকম উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Rudianto
আলবেনিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে সমকামিতা বৈধ৷ এমনকি আইন করে সমকামীদের বৈষম্যের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷
ছবি: SWR/DW
বাহরাইন
১৯৭৬ সালে সেখানে সমকামিতাকে আইনগত বৈধতা দেয়৷ তবে দেশটিতে এখনও প্রকাশ্যে ছেলেরা মেয়েদের, কিংবা মেয়েরা ছেলেদের পোশাক পরতে পারে না৷
ছবি: Getty Images
ফিলিস্তিন (পশ্চিম তীর)
পশ্চিম তীরের জর্ডান অংশে ১৯৫১ সাল থেকে সমকামিতা বৈধ৷ তবে গাজাতে নয়৷ মজার ব্যাপার হচ্ছে, গাজায় যে আইনের কারণে সমকামিতা নিষিদ্ধ সেটা বলবৎ হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে৷
ছবি: Shadi Hatem
ইরাক
দেশটি সমকামিতাকে বৈধতা দিলেও বিষয়টি এখনও সেখানে ‘ট্যাবু’ হয়েই আছে৷