1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিম-বিদ্বেষী পেগিডা নেতার পদত্যাগ

২২ জানুয়ারি ২০১৫

জার্মানিতে যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোও ‘অপরাধ'৷ এমন দেশে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যুদ্ধাপরাধের হোতা আডলফ হিটলারের আদলে সেল্ফি পোস্ট করেছিলেন পেগিডার প্রধান লুৎস বাখমান৷ পরিণামে পদত্যাগ করতে হয়েছে তাঁকে৷

Lutz Bachmann als Hitler
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Brandt

প্রধানত মুসলিম বিরোধী সংগঠন পেগিডার নেতা লুৎস বাখমান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নাৎসি মহাগুরু আডলফ হিটলারের আদলে একটা সেল্ফি পোস্ট করেছিলেন ২০১২ সালে৷ জার্মানির সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র ‘বিল্ড' বুধবার সেই ছবিটি প্রকাশ করে৷ এর ফলে সাম্প্রতিক কালে অভিবাসী, বিশেষ করে মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শহরে শহরে সমাবেশ শুরু করা সংগঠন পেগিডার প্রতিষ্ঠাতা বাখমানের বিরুদ্ধে সব মহলেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ নিজের প্রতিষ্ঠা করা সংগঠন পেগিডাও শেষ পর্যন্ত তাঁর পাশে থাকেনি৷

লুৎস বাখমান প্রথমে দাবি করেছিলেন, ছবিটি তিনি ফেসবুকে দিয়েছিলেন ঠাট্টা করে, তখন হিটলারকে নিয়ে একটি হাস্যরসাত্মক বই প্রকাশিত হয়েছিল বলেই নাকি এমন ছবি দিয়ে মজা করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু টুথব্রাশের মতো গোঁফ আর ছোট করে ছাঁটা চুলে হিটলার সাজার কারণে তাঁর আর শেষ রক্ষা হয়নি৷ ফেসবুকে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ‘গুপরেপোকা' এবং ‘জন্তু' হিসেবে বর্ণনা করায় পুরো বিষয়টিকে কৌতুক হিসেবে চালিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে যায়৷ পেগিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লুৎস বাখমান পদত্যাগ করেছেন৷

পেগিডার বিরুদ্ধেও নেমেছে মানুষছবি: REUTERS/Hannibal Hanschke

পদত্যাগ করার পরও হিটলারকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা এবং রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার দায় এড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন না লুৎস বাখমান৷ ড্রেসডেনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পেগিডা নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য পুরো বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করে দেখবেন৷ এ ঘটনায় জার্মান সরকারও ক্ষুব্ধ৷ বিল্ড পত্রিকাকে ডেপুটি চ্যান্সেলর সিগমার গাব্রিয়েল বলেছেন, ‘‘ কোনো রাজনীতিবিদ যদি হিটলার সেজে পোজ দেয়, তাহলে বুঝতে হবে হয় সে পুরোপুরি নির্বোধ, নয় তো সে নাৎসি৷'' বুধবারই পুরো বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে লুৎস বাখমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমার এসব পোস্ট-এর জন্য যেসব নাগরিক কষ্ট পেয়েছেন তাঁদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি৷ ওই সময় বুদ্ধি-বিবেচনা না খাটিয়েই কথাগুলো লিখেছিলাম, আজকের দিনে হলে তা কখনোই আমি লিখতাম না৷ ''

ড্রেসডেনভিত্তিক সংগঠন পেগিডা, জার্মান ভাষা থেকে অনুবাদ করলে এর নামের অর্থ দাঁড়ায় ‘পশ্চিমের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার দেশপ্রেমিক ইউরোপীয়রা'৷ গত কিছুদিন ধরে প্রতি বুধবার তারা সমাবেশ করে আসছিল৷ কিন্তু পেগিডা-প্রধানকে উগ্র ইসলামপন্থিরা হত্যার হুমকি দেয়ায় এই বুধবার ড্রেসডেনে কোনো সমাবেশ হয়নি৷ এদিন সবচেয়ে বড় সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল লাইপসিশ শহরে৷ ১৯৮৯ সালে ওই শহর থেকে দানা বাঁধা প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখেই তখনকার পূর্ব জার্মানির কমিউনিস্ট সরকারের পতন হয়েছিল৷ এবার সেখানে পেগিডা সমর্থকরা মাঠে নেমেছে ‘লেগিডা' নামে৷ তবে সমর্থন করলেও পেগিডার ১৯ দফা কর্মসূচির প্রস্তাবে তারা সাক্ষর করেনি৷ ফলে দেখা দিয়েছে পেগিডা-লেগিডা বিরোধ৷

বুধবার আনুমানিক ১৫ হাজার সমর্থক নিয়ে মিছিল করেছে লেগিডা৷ সংবাদ মাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী পেগিডার সব সমাবেশ মোটামুটি শান্ত হলেও লেগিডা সমর্থকদের অনেক আক্রমণাত্মক রূপে দেখা গেছে৷ ড্রেসডেন থেকে ১১৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের এই শহরটিতে অবশ্য তারা সেদিন বড় বাধার মুখেও পড়েছে৷ পুলিশ নির্দিষ্ট কিছু সড়কে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছিল তাদের৷ মিছিল শুরুর পর ২০ হাজার মানুষের একটি পেগিডা-বিরোধী মিছিলও রাস্তায় নামে৷ রেল স্টেশনের কাছে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে৷ সংঘর্ষে সংবাদকর্মী সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে৷

এসিবি/এসবি (এপি,এএফপি,রয়টার্স,ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ