অমিয় দাশ ভালো আছেন৷ চাইলে কত সামান্যতে ভালো থাকা যায়! হতদরিদ্র মানুষটির কাছে ভালো থাকার মানে, পরিবারে সবার জন্য অন্নের সংস্থান করতে পারা, সবাইকে সুস্থ দেখা আর ‘হিন্দু হওয়ার কারণে’ কোনো হামলার শিকার না হওয়া৷
বিজ্ঞাপন
[No title]
২০১৩ সালে এই সুখগুলোই উধাও হয়েছিল খুলনার কয়রার কাঁচামাল ব্যবসায়ী অমিয় দাশের জীবন থেকে৷ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসির আদেশ দেয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালিয়েছিল জামায়াত-শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা৷ হামলা চালিয়েছিল সংখ্যালঘুদের ঘরে-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে-উপাসনালয়ে৷ অমিয় দাশের পরিবারও তখন দেখেছে প্রতিবাদের নামে কিছু মানুষের পৈশাচিক বর্বরতা৷ জামায়াত-শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা পিটিয়ে আহত করেছিল অমিয় দাশের বৃদ্ধা মাকে৷ সবকিছু লুটপাট করে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দুধের শিশুটিকেও চেয়েছিল আগুনে ছুড়ে মারতে৷ সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন অমিয় দাশের স্ত্রী৷ তাঁর ওপরও চলে নির্যাতন৷ চোখের সামনে ঘর, আসবাবপত্র পুড়ছে, শিশু, শিশুর মা, মাতামহ ব্যথায়, প্রাণভয়ে কাঁদছে; হামলাকারীরা তাঁদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলে, ‘‘শুয়োরের বাচ্চারা পূজা মারাস! পূজা করাচ্ছি তোদের!'' সাহসি এক মুসলিম প্রতিবেশী এগিয়ে না এলে অমিয় দাশের পরিবারের সেদিন কী হতো, বলা কঠিন৷ হয়ত অমিয় আর তাঁর বাবা বাড়ি ফিরে আরো ভয়াবহ বর্বরতার চিহ্ন দেখতেন, আরো ভয়ংকর দুঃস্বপ্নই হয়ত এখনো তাড়া করত তাঁদের৷
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়াকে ঘিরে যশোরের অভয়নগর উপজেলার মালোপাড়ায় ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার পাশাপাশি লুটপাটও করা হয়৷
ছবি: DW
নেই নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া
যশোরের অভয়নগরের চাপাতলী গ্রামের প্রবেশপথে পুলিশের সতর্ক অবস্থান৷ গত ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের দিন এই গ্রামের নিম্নবর্ণের হিন্দু অধ্যুষিত মালোপাড়ায় বসবাসরতদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে৷ আক্রান্তরা জানান, ঘটনাস্থলের মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে থানার অবস্থান হলেও অনেক ফোন করেও সে সময়ে পুলিশ কিংবা কোনো নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া মেলেনি৷
ছবি: DW
‘নদী ঠাকুর’
দুর্বৃত্তদের হামালায় লণ্ডভণ্ড মায়া রানি বিশ্বাসের একমাত্র মাথা গোঁজার ছোট্ট নিবাস৷ সেদিন হামলা শুরু হলে পাশের বুড়ি ভৈরব নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ওপারে উঠে প্রাণে বেঁচে যান বিধবা এই নারী৷ তাঁর ভাষায় ‘নদী ঠাকুর’ সেদিন না থাকলে জানটা হয়ত থাকতো না৷
ছবি: DW
প্রাণ বাঁচাতে নদীতে
নিজের ঘরের ভাঙা আসবাব, টেলিভিশনের পাশে মালোপাড়ার গৃহবধু উজ্জ্বলা বিশ্বাস৷ হামলাকারীদের ভয়াবহ রূপ সামান্য দেখেছিলেন তিনি৷ প্রাণ বাঁচাতে তিনিও ঝাঁপ দেন বুড়ি ভৈরবে৷ হামলার সময়ে তাঁর মনে হয়েছিল যে ভগবান সেদিন পাশে ছিলেন না৷
ছবি: DW
বই-পত্র পুড়িয়ে দিয়েছে
কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের বই-পত্র, এমনকি সার্টিফিকেটও পুড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা৷
ছবি: DW
সুন্দর স্বপ্নে চির
হামলাকারীদের ভেঙে দেয়া আয়নায় কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের প্রতিবিম্ব৷ বাড়ির দেয়ালে টাঙানো এই ভাঙা আয়নার মতোই মঙ্গলার সুন্দর স্বপ্নেও চির ধরিয়েছে হামলাকারীরা৷ মঙ্গলার আক্ষেপ, তাঁর বই-পত্র আর সার্টিফিকেট কী দোষ করলো?
ছবি: DW
আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয়
হামলার ছয় দিন পরে এঁরা ফিরছেন বাড়িতে৷ হামলার সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা৷
ছবি: DW
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী
৮৬ বছর বয়সি মৃত্যুঞ্জয় সরকার সেদিনের হামলার প্রত্যক্ষদর্শী৷ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও দেশ ছাড়েননি তিনি৷ কিন্তু হামলার পর তাঁর মনে হচ্ছিল যে, সে সময়ে ছেড়ে যাওয়াটাই উচিত ছিল তাঁর৷
ছবি: DW
গাছও রেহাই পায়নি
বাড়ি-ঘরের পাশাপাশি মালোপাড়ার গাছও জ্বালিয়ে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: DW
পলাতক জামায়াত নেতা
মালোপাড়ায় হামলার পরে চাপাতলী গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বালিয়াডাঙ্গায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল আজিজের বাড়ি ভাঙচুর করে যৌথবাহিনী৷ ঘটনার আগে থেকেই পলাতক রয়েছেন এ জামায়াত নেতা৷
ছবি: DW
আক্রান্তদের অভিযোগ
জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুল ওহাব৷ মালোপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য জামায়াত শিবির ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলকেও দায়ী করেছেন অনেকে৷ সাবেক এই সাংসদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছেন৷ সেখানে নতুন প্রার্থী হিসেবে রণজিৎ রায় মনোনয়ন পাওয়ায় এই দুই জনের সমর্থকদের মাঝে বেশ উত্তেজনা ছিল পুরো নির্বাচনের সময়টায়৷
ছবি: DW
গণধর্ষণ
যশোরের আরেক ভয়াল জনপদ মনিরামপুর উপজেলার হাজরাইল গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা অনারতী দাস৷ ৭ জানুয়ারি রাতে তাঁর সামনেই অস্ত্রের মুখে একদল দুবৃত্ত গণধর্ষণ করে পুত্রবধু মনিমালা দাস আর ভাতিজি রূপালী দাসকে৷
ছবি: DW
ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী
কার্তিক দাসকেও সেদিন রাতে সেই ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী হতে হয়েছিল৷ দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার নিম্নবর্ণের হিন্দু মনিমালা দাসের শ্বশুর ও রূপালী দাসের চাচা তিনি৷
ছবি: DW
বাড়িঘর ছেড়েছেন
দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া পরিবার দুটি আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়েছেন৷
ছবি: DW
শুধুই আতঙ্ক
দাসপাড়ার এক নারী৷ দাসপাড়ার নারীদের এখন নির্ঘুম রাত কাটে আতঙ্কে৷
ছবি: DW
14 ছবি1 | 14
মায়ের কথায় অমিয় তাঁর বাবাকে নিয়ে সেদিন বাড়ির পাশের ক্ষেতে আত্মগোপন করেছিলেন৷ হামলার আশঙ্কা দেখা দিলে সব পরিবার আগেভাগে পুরুষ ও ‘সোমত্ত' মেয়েদেরই সবসময় নিরাপদ স্থানে পাঠানোর চেষ্টা করে৷ আশা করা হয়, মধ্য বয়সি নারী, বৃদ্ধা এবং শিশুদের ওপর কেউ হামলা চালাবে না৷ চক্ষুলজ্জা বলে তো একটা কিছু আছে, পাষাণেরও তো বিবেক বলে কিছু থাকে! জামায়াত শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের সে'সবও ছিল না৷
ভিটে-মাটি পুড়িয়ে দেয়ায় বেশ কিছু দিন গোয়াল ঘরে থাকতে হয় পরিবারটিকে৷ স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের ‘বড় সাহেবরা' অনেক অঙ্গীকার করেছিলেন৷ অমিয় আশা করেছিলেন, শিগগিরই হয়ত ঘরটা গুছিয়ে আগের মতো ব্যবসা শুরু করবেন৷ কিন্তু হামলার তিন মাস পরে আবার কথা বলে জেনেছিলাম, প্রায় সর্বস্ব হারানোর ‘ক্ষতিপূরণ' হিসেবে অমিয় মাত্র আড়াই হাজার টাকা পেয়েছেন৷ এলাকাবাসীর কৃপায় ততদিনে অবশ্য গোয়াল ঘর ছেড়ে একটি ঘরে সবাই মিলে থাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন৷ বাড়ির চালে তখনো আধপোড়া টিন৷ সরকারি সাহায্যের টিন এসেছে, কিন্তু পাচ্ছিলেন না৷ দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারে সেই হতাশার কথাই জানিয়েছিলেন অমিয়৷
[No title]
আড়াই বছর পর গত ২৯ জানুয়ারি আবার টেলিফোনে কথা হলো৷ খুলনায় তখন শীতের সন্ধ্যা৷ সামান্য পুঁজির কাঁচা মালের দোকানে বসেই কথা বললেন অমিয়৷ তাঁর কথায় দু'টি বিষয়ে বেশ স্বস্তি প্রকাশ পেল৷ বৃদ্ধা মা জামায়াত-শিবির কর্মীদের পিটুনিজনিত শারীরিক অক্ষমতা কাটিয়ে উঠেছেন, এখন তিনি সুস্থ৷ সেই ভয়াল দিনে স্কুলের দিক থেকে ছুটে এসেই লোকগুলো তাণ্ডব চালিয়েছিল বলে অমিয়র স্কুল পড়ুয়া বড় মেয়েটি ভয়ে আর স্কুলেই যেতে চাইতো না৷ ওর মনে হতো, বাড়ি এসেই ওরা এমন করেছে, স্কুলের পথে একা পেলে হয়ত ওকে মেরেই ফেলবে৷ অনেক বুঝিয়ে মেয়েকে একসময় স্কুলে পাঠাতে পেরেছেন অমিয়৷ মেয়েটি এখন নিয়মিত স্কুলে যায়৷ দিনে আর দশটি কিশোরীর মতোই স্বাভাবিক, কিন্তু রাতে ফিরে আসে আতঙ্ক৷ প্রায় রাতেই কাঁদতে কাঁদতে উঠে বসে মেয়েটি৷ মনের আতঙ্ক আসলে যায়নি৷ তবুও অমিয় খুশি, মেয়ে এখন স্কুলে তো যায়!
অমিয় দাশ সাক্ষাৎকার ১
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার জন্য দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বা অন্য কোনো যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির আদেশের তথাকথিত প্রতিবাদের ছুতোর দরকার হয় না৷ কোনোরকমে একটা গুজব ছড়িয়ে দিয়েও হামলা চালানো যায় সর্বদলীয় বলে বলীয়ান হয়ে৷ প্রায় সব নির্বাচনের আগে-পরেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পোড়ানো হয় ঘর-বাড়ি-মন্দির, নারী-শিশুর ওপরেও চলে নানান মাত্রার নির্যাতন৷
অমিয় দাশের কাছে তাই দু'টো বিষয় জানা খুব জরুরি ছিল; এক, গত তিন বছরে আর কোনো হামলা হয়েছে কিনা; দুই, এ সময়ে কয়রায় কোনো নির্বাচন হয়েছে কিনা৷ দু'টি প্রশ্নের উত্তরেই ‘না' বললেন অমিয়৷ হামলা হয়নি – এটা খুবই স্বস্তিদায়ক খবর৷ কিন্তু তিন বছরে কোনো নির্বাচনও হয়নি কয়রায়? হয়েছে তো! এই কিছুদিন আগে স্থানীয় নির্বাচনও তো হয়েছে সেখানে!
অমিয় হয় সেই নির্বাচনের কথা ভুলে গেছেন, নয়ত নির্বাচন তাঁর কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলায়, কিংবা ‘রাজনীতি' আরো আতঙ্কের হয়ে ওঠায় নির্বাচনভাবনা থেকে সচেতনভাবেই হয়ত দূরে রেখেছেন নিজেকে৷ হামলার কারণে বা হামলার ভয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যুগ যুগ ধরে নিজেদের দূরেই সরিয়ে নিয়েছে৷ শুধু নির্বাচন থেকে নয়, দেশ থেকেও৷ মোট জনসংখ্যায় সংখ্যালঘুর হার কম কমতে প্রায় চল্লিশ ভাগ থেকে দশ ভাগে নেমেছে৷
‘অতিথি পাখি' শীতে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আসে বাংলাদেশে৷ অনেকেরই আর ফেরা হয় না৷ তবু আসে৷ অন্যদিকে ছয় ঋতুর আদরে-শাসনে বাংলাদেশে বাঁচতে শেখা ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বাঁচার তাগিদেই নীরবে দেশ ছাড়ে৷ আর ফেরে না৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিবছর যেসব দেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে আছে তার তালিকা প্রকাশ করে৷ ছবিঘরে ২০১৫ সালের জুলাইতে প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদনের তথ্য থাকছে৷
ছবি: DW
প্রথম: সিরিয়া
সুন্নিপ্রধান দেশ সিরিয়ায় শিয়া, বিশেষ করে আলাউইট সম্প্রদায়ের লোকজন সহ খ্রিষ্টান, কুর্দ, ফিলিস্তিনি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হুমকির মুখে রয়েছে৷ আইএস, হিজবুল্লাহ ছাড়াও সিরিয়ার শাসকপন্থি গ্রুপ সাবিহা এ সব হুমকির অন্যতম কারণ৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ হুমকি বলতে গণহত্যা, রাজনৈতিক হত্যা ও সহিংস দমননীতি বুঝিয়েছে৷
ছবি: Reuters/SANA
দ্বিতীয়: সোমালিয়া
সরকারের সঙ্গে আল-শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর সংঘাত এখনও চলছে৷ আর এর শিকার হচ্ছে বান্টু (বেশিরভাগ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী) ও বেনাদিরি (বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী) গোষ্ঠীর মানুষজন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Warsame
তৃতীয়: সুদান
দেশটির দারফুর অঞ্চলে বসবাসকারী নন-আরব মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর খার্তুম সরকারের নিপীড়নের অভিযোগে দু’টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ২০০৩ সালে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ সেটি এখনও চলছে৷ ফলে দারফুরে বসবাসকারী ফুর, জাঘাওয়া, মাসালিট সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষদের জীবন সংকটে রয়েছে৷
ছবি: GetttyImages/AFP/C. Lomodon
চতুর্থ: আফগানিস্তান
বিদেশি সৈন্য চলে যাবার পর সেখানে আবারও তালেবানের শক্তি বেড়েছে৷ ফলে হাজারা, পশতুন, তাজিক, উজবেক, তুর্কমেন, বেলুচি সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষের উপর নির্যাতনের আশঙ্কা বাড়ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Aref Karimi
পঞ্চম: ইরাক
দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত৷ তারপরও সেখানে শিয়া গোষ্ঠীর লোকজনের জীবন বিপদমুক্ত নয়৷ সংকটে রয়েছে সুন্নি, কুর্দ, তুর্কমেন, খ্রিষ্টান, ইয়াজিদি, শাবাক, বাহাই, ফিলিস্তনি সহ অন্যান্যদের জীবনও৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
ষষ্ঠ: ডিআর কঙ্গো
স্থানীয় মায়ি-মায়ি মিলিশিয়া, উগান্ডা ও রুয়ান্ডার বিদ্রোহী এবং কাতাঙ্গান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কারণে মানুষের প্রাণ যাওয়া অব্যাহত আছে৷ ফলে সংকটে আছে হেমা, লেন্ডু, হুতু, লুবা, লুন্ডা, টুটসি, বাটওয়া সহ আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর জনগণ৷
বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের হামলায় সংকটে রয়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন৷ এছাড়া কচিন, কারেনি, কারেন, মন, রাখাইন, শান, চিন এবং ওয়া জাতির জনগণও ভালো নেই সেখানে৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশ, ভারতের অবস্থান
‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’-এর তালিকায় বাংলাদেশ ৪১তম আর ভারত ৫৪তম অবস্থানে আছে৷ বাংলাদেশে আহমদিয়া, হিন্দু সহ অন্য ধর্মাবলম্বীরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতির লোকেদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ আর ভারতে আসামিজ, বোড়ো, নাগা, ত্রিপুরা সহ অন্যান্য উপজাতি এবং কাশ্মিরী, শিখ, মুসলিম ও দলিতরা হুমকির মুখে আছে৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷