কংগ্রেসের ছয়জন বিধায়ক এখন বিজেপি-র সঙ্গে। তিন নির্দলও বিজেপি-কে সমর্থন করছেন। ইস্তফা দিয়েছেন প্রভাবশালী মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভা নির্বাচন ছিল। হিমাচলে ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়কসংখ্যা ৪০। বিজেপি-র ২৫ জন বিধায়ক আছে। তিনজন নির্দল বিধায়ক আগে কংগ্রেসের সরকারকে সমর্থন করছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার কংগ্রেসের ছয়জন ও তিন নির্দল বিধায়ক বিজেপি-র প্রার্থীকে ভোট দেন। এই বিধায়কদের বিজেপি পরে হেলিকপ্টারে করে পাঁচকুলায় নিয়ে যায়। বুধবার ছয় কংগ্রেসি ও তিন নির্দল বিধায়ক অবশ্য আবার সিমলায় পৌঁছেছেন।
কংগ্রেসের সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়ে প্রয়াত সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং-এর ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু-র প্রবল সমালোচনা করেছেন। বিক্রমাদিত্য সিং ও তার মা প্রতিভা সিং গোড়া থেকেই সুখবিন্দরকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চাননি।
বিজেপির দাবি
রাজ্যসভা নির্বাচনে জেতার পরই বিজেপি দাবি তুলেছে, সুখবিন্দর সিং সুখুকে পদত্যাগ করতে হবে। তাদের কাছে সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা আছে। তাদের সরকার বানাতে দিতে হবে।
তারা দাবি করেছে, অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে বিধানসভায় আস্থা ভোট নিতে হবে।
স্পিকারের সিদ্ধান্ত
বিধানসভার স্পিকার ইতিমধ্যে ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে বিধানসভা থেকে বহিষ্কার করেছেন। তারা স্পিকারের চেম্বারে গিয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন, অসদাচরণ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর হস্তক্ষেপে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট হচ্ছে। ১৭টি আসনে লড়বে কংগ্রেস।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Deep
কেন প্রিঙ্কাকাকে হস্তক্ষেপ করতে হলো?
সমাজবাদী পার্টি(সপা) প্রথমে ১১টি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে চাইছিল। তখন অবশ্য ঠিক ছিল, জয়ন্ত চৌধুরীর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদল তাদের সঙ্গে জোট করে লড়বে। কিন্তু জয়ন্ত চৌধুরী বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলান। এরপর কংগ্রেসকে ১৫টি আসন ছাড়তে রাজি হন সপা নেতা অখিলেশ যাদব। কিছু আসন নিয়ে দড়ি টানাটানি চলতে থাকে। আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন আসরে নামেন প্রিয়াঙ্কা।
ছবি: Reuters/A. Dave
অখিলেশকে ফোন
সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবকে ফোন করেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি জানান, কংগ্রেস ১৭টি আসন নিয়ে লড়তে রাজি। প্রিয়াঙ্কা অখিলেশকে অনুরোধ করেন, কংগ্রেসকে প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারাণসী আসনটি ছেড়ে দিতে। অখিলেশ রাজি হয়ে যান। প্রিয়াঙ্কা বলেন, শ্রাবস্তীর মতো আসনের দাবি কংগ্রেস ছেড়ে দিচ্ছে।
ছবি: Samiratmaj Mishra/DW
রাহুলের যাত্রায় যোগ দেবেন
অখিলেশও কংগ্রেস নেতাদের জানিয়েছেন, তিনি রাহুল গান্ধীর যাত্রায় যোগ দেবেন। ২৪ তারিখ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে যাত্রা করবেন রাহুল। কংগ্রেস নেতা অজয় রাই জানিয়েছেন, সমাজবাদী পার্টিকে রাহুলের রুট ম্যাপ দিয়ে দেয়া হয়েছে। এবার অখিলেশ ঠিক করবেন, তিনি কোথায় যোগ দেবেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কে কটা আসনে লড়বে?
উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি লড়বে ৬২টি আসনে এবং কংগ্রেস লড়বে ১৭টি আসনে। কংগ্রেস লড়বে রায়বেরিলি, আমেঠি, কানপুর, ফতেপুর সিক্রি, বনসগাঁও, সাহারানপুর, প্রয়াগরাজ, মহারাজগঞ্জ, বারাণসী, আমরোলা, ঝাঁসি, গাজিয়াবাদ, মথুরা, সীতাপুর, বারাবাঙ্কি ও দেওরিয়াতে। উপরের ছবিটি বারাণসীর।
ছবি: Pawan Kumar/REUTERS
প্রিয়াঙ্কা কি রায়বেরিলিতে লড়বেন?
রায়বেরিলি থেকে সোনিয়া গান্ধী লড়তেন। কিন্তু স্বাস্থ্য়ের কারণে তিনি আর লোকসভায় লড়বেন না। তিনি রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার জায়গায় লড়তে পারেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাহুলের বোন এখনো নির্বাচনে লড়েননি। তবে তিনি দীর্ঘদিন হয়ে রায়বেরিলিতে মায়ের হয়ে নির্বাচন পরিচালনার কাজ করেছেন। এবার তার লড়ার সম্ভাবনা প্রবল।
ছবি: Getty Images/AFP/A. Deep
এই জোটের ফলে কী হবে?
উত্তরপ্রদেশে যাদব ভোটদাতার সংখ্যা প্রায় ১১ শতাংশ। মুসলিম ভোটদাতা আছেন ১৯ শতাংশ। যাদবদের মধ্যে সমাজবাদী পার্টির প্রভাব রয়েছে। সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস একসঙ্গে লড়লে মুসলিম ভোটের সিংহভাগ তাদের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া কংগ্রেসের কাছে এখনো অনগ্রসর, উচ্চবর্ণ, দলিত মিলিয়ে সাত শতাংশের মতো ভোট রয়েছে। সমাজবাদী পার্টির কছেও যাদব ছাড়া কিছু অনগ্রসর ভোট আছে।
ছবি: DW/F.Freed
দিল্লিতে কংগ্রেস-আপ সমঝোতা?
রাজধানী দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনে কংগ্রেস ও আপের মধ্য়ে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে বলে সূত্র জানাচ্ছে। আপ চারটি ও কংগ্রেস তিনটি আসনে লড়বে। মাঝখানে আপ জানিয়েছিল, তারা একাই লড়বে। কিন্তু পরে আবার আলোচনা শুরু হয় এবং সমঝোতা নিয়ে মতৈক্য হয়েছে বলে কংগ্রেস ও আপ নেতাদের দাবি।
ছবি: DW/S. Kumar
গুজরাটে আপকে আসন?
গুজরাটে আপকে দুইটি আসন ছাড়তে পারে কংগ্রেস। হরিয়ানাতেও একটি আসন ছাড়া নিয়ে কথা চলছে। গোয়াতেও আপের সঙ্গে আসন সমঝোতা করা নিয়ে কথা বলছে কংগ্রেস। চণ্ডীগড় আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিতে পারে আপ। তবে পাঞ্জাবে এখনো পর্যন্ত আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা এগোয়নি।
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
এখন বিধানসভা ডেকে ভোটাভুটি করলে ওই বিজেপি বিধায়করা ভোট দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে ২৭ জন বিধায়কের সমর্থন থাকলেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি-র সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর জানিয়েছেন, স্পিকার সংবিধান-বিরোধী কাজ করেছেন।
স্পিকার কংগ্রেসের ছয় বিধায়ককে নোটিশ দিয়ে জানতে চেয়েছেন, দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুসারে কেন তাদের বিধায়কপদ খারিজ হবে না?
খাড়গে তাদের বলেছেন, সব বিধায়কের সঙ্গে কথা বলুন। ক্রস ভোটিং এখন অতীত। এখন অপারেশন লোটাসকে ব্যর্থ করতে কী পদক্ষেপ দরকার তা তারা খাড়গেকে জানাবেন।
কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি একই কাজ কর্ণাটকেও করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেই কাজে সফল হয়নি।
কর্ণাটকে উল্টে বিজেপি-র এক বিধায়ক কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। একজন ভোটদানে বিরত ছিলেন। ফলে কর্ণাটকে বিজেপি-র ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে কংগ্রেস। তাদের তিনজন প্রার্থীর জেতার কথা ছিল। তিনজনই জিতেছেন। কর্ণাটকে ভোট শেষ হওয়ার পরই ডি কে শিবকুমারকে হিমাচলে পাঠিয়েছেন খাড়গে।