জার্মানিতে গণতন্ত্র বিকাশের জন্য আবার একটি নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে ম্যার্কেল সরকারের অংশীদার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দল৷
বিজ্ঞাপন
যুবভিত্তিক কাজকর্মে উদার, উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা আক্রমণের মুখে পড়ছে জানিয়েছে জার্মানির নাগরিক গোষ্ঠীগুলো৷
চরম দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রকল্পগুলোর জন্য স্থিতিশীল তহবিলের দাবি ৬০টি নাগরিক গোষ্ঠীর৷ জার্মান সমাজকে দুর্বল করার জন্য জার্মানিতে চরম দক্ষিণপন্থিদেরপ্রচেষ্টা ব্যর্থ করার লক্ষ্যে জার্মানির ফেডারেল সংসদ বুন্ডেসটাগ একটা আইন পাস করেছে ৷ আইনটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন এসপিডি দলের প্রধান জাসকিয়া এসকেন৷ তিনি বলেন, ‘‘উগ্র দক্ষিণপন্থিরা প্রকাশ্যে কিভাবে আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে, আমরা তা দেখছি৷’’ এসপিডি বা সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সদস্য পরিবার কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী ফ্রান্সিসকা গিফে এবং আইনমন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেক্ট গণতন্ত্র বিকাশের জন্য একটি বিল মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেন৷ তবে ম্যার্কেলের মন্ত্রীসভার রক্ষণশীল সদস্যরা সে বিলটি পাসের বিরোধিতা করছেন৷ বুধবার মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের আগে বার্লিনভিত্তিক সংবাদপত্র তাজকে এসকেন বলেন, ‘‘এই বিরোধিতা আমাদের বোধগম্য নয়, তবে তা বিপজ্জনক৷’’
গত ফেব্রুয়ারিতে হানাউ শহরে সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডের পর বর্ণবাদবিরোধী একটি খসড়া আইন প্রণয়নের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের শত্রুদের মোকাবেলা করতে আমাদের দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে৷’’ সেপ্টেম্বর মাসে পার্লামেন্টে, জার্মানির গণতন্ত্রের বিকাশে বর্তমান এসপিডি দলের মতো একই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে বিরোধী সবুজদল ব্যর্থ হয়৷
প্রায় ৬০টি নাগরিক গোষ্ঠী সাম্প্রতিক এক চিঠিতে তাজ পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কেলের মহাজোট সরকারকে সতর্ক করে দেয়৷ নাগরিক গোষ্ঠীগুলোর মতে, তাদের যুবভিত্তিক কাজকর্মে উদার, উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা আক্রমণের মুখে পড়ছে৷
২০২১ সালের প্রথম কোর্য়াটারে মন্ত্রিসভা কমিটির ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানান ম্যার্কেল সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন জাইবার্ট গত শুক্রবার৷
এনএস/কেএম (এএফপি, কেএনএ, ইপিডি)
২০ ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...
জার্মানিতে নিরাপত্তা শঙ্কায় মুসলিমরা
জার্মানির হেসে রাজ্যের হানাও শহরে দক্ষিণপন্থি সন্ত্রাসীর গুলিতে নয় জন মারা গেছেন৷ দু’দিন আগেই নাশকতার পরিকল্পপনা করা কয়েকজন দক্ষিণপন্থিকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ মুসলিম সমাজ সরকারের কাছে নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Probst
বারে গুলি
১৯ ফেব্রুয়ারি জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে হানাও শহরের একাধিক স্থানে হামলায় নয়জন প্রাণ হারান৷ পরে হামলাকারী ও তার মা-কে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
ছবি: Reuters/R. Orlowski
নিরাপত্তা শঙ্কায় মুসলিমরা
ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জার্মানিতে মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মহাসচিব আবদাসসামাদ এল ইয়াজিদি বলেন, মুসলিমরা ‘খুবই অনিরাপদ’ বোধ করছেন৷ তিনি বলেন, দক্ষিণপন্থার এমন উত্থান আগে কখনো দেখা যায়নি৷
ছবি: imago images/IPON
দেশজুড়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা
এই ঘটনার দু’দিন আগে জার্মান পুলিশ দেশটির ছয় রাজ্যে ১৩টি স্থানে অভিযান চালিয়ে এক ডজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে৷ অভিযোগ রয়েছে, এরা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আশ্রয়প্রার্থী ও মুসলিমদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন৷ তারা চেয়েছিলেন জার্মানিতে একটি গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Stein
নাশকতা পরিকল্পনার মূল হোতা পাঁচ উগ্র ডানপন্থি
জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ ঘটনার তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার মূল হোতা ছিলেন পাঁচ জন উগ্র ডানপন্থি সন্ত্রাসী৷ বাকিরা এদের অর্থ জোগাচ্ছিলেন৷ এদের সবাই জার্মান ও পুরুষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Deck
অস্ত্রের খোঁজে
যে ছয় রাজ্যে অভিযান চালানো হয় তা হলো: বাডেন-ভ্যুটেমব্যার্গ, বাভেরিয়া, লোয়ার স্যাক্সনি, নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়া, রাইনল্যান্ড-পালাটিনাটে এবং স্যাক্সনি-আনহাল্ট৷ দলটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তৈরি করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ পুলিশ সম্ভাব্য হামলায় ব্যবহার করার অস্ত্রেরও খোঁজ করছে৷ জার্মান গণমাধ্যম জানিয়েছে, তারা হাতে তৈরি অস্ত্র ও হামলার আইডিয়া সম্বলিত ছবি পরস্পরের সঙ্গে শেয়ার করেছেন৷
ছবি: Getty Images/T. Lohnes
মসজিদে নিরাপত্তা চান মুসলিমরা
ডানপন্থি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পর মুসলিমরা মসজিদগুলোকে সুরক্ষিত করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ জার্মান মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে আইজিএমজি-র চেয়ার আইমান মাজিয়েক পত্রিকা ড্যের স্পিগেলকে বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রের ভাবা উচিত৷’’ যেসব জায়গায় আগেও হামলা হয়েছে সেগুলোতে, বিশেষ করে পুলিশের উপস্থিতি জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি৷
ছবি: Imago Images/M. Schüler
বছরে একশ’ হামলা
জার্মানির বিভিন্ন মসজিদে বছরে প্রায় একশ’ হামলার ঘটনা নিবন্ধিত হয় বলে জানিয়েছে দেশটির মসজিদগুলোর সবচেয়ে বড় অ্যাসোসিয়েশন ডিটিব৷ গত কয়েক সপ্তাহে উনা, হাগেন, এসেন ও বিয়েলফেল্ডের মসজিদগুলোতে বোমা হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
উগ্র ডানপন্থার উত্থান
গত জুনে ভাল্টার ল্যুবকে নামের এক রাজনীতিককে হত্যা এবং হালেতে একটি সিনাগগে হামলার ঘটনায় জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে সবার টনক নড়েছে৷ সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে বেশ কিছু পোস্টও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে৷