1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধূমপান বিরোধী আইন

৮ মে ২০১২

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অধূমপায়ীদের সুরক্ষা সংক্রান্ত আইন কঠোর হওয়ার পর থেকে জার্মানিতে হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে৷ তবে ধূমপান বিরোধী আইনের ক্ষেত্রে জার্মানি এখনও বেশ পিছিয়ে আছে৷

Bildtitel: Cannabis Bildbeschreibung: Ein Cannabis rauchender Mann Schlagwörter: Cannabis, Hanf, Joint, Rauschgift Herkunft: DW Eigendreh
ছবি: DW

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, অসংখ্য সমীক্ষার মাধ্যমে এই তথ্য প্রমাণিত হয়েছে৷ এবার জার্মানির স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষক রাইনার হানেভিংকেল ও তাঁর মার্কিন সহকর্মী জেমস সার্জেন্ট প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, ধূমপান সংক্রান্ত আইন কড়া হলে হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটা কমে আসবে৷

হাসপাতালে হৃদরোগীর সংখ্যা কম

গবেষকরা স্বাস্থ্য বিমা প্রতিষ্ঠান ডিএকে'র ৩০ লক্ষ ৭০ হাজার সদস্যের তথ্য উপাত্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে লক্ষ্য করেছেন যে, জার্মানির রেস্তোরাঁ ও পাবগুলিতে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে হৃদরোগের হার কম বেশি একই রকম ছিল৷ কিন্তু ২০০৭/২০০৮ সাল নাগাদ ধূমপানের ওপর কড়াকড়ি করে আইন প্রবর্তন করার পর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে জার্মানিতে হার্ট অ্যাটাকের হার ৮.৬ শতাংশ কমে গেছে৷ এমনকি অ্যাঞ্জিনা পেক্টোরিস বা ক্ষণস্থায়ী বুকের ব্যথার হার ১৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে৷

ধূমপান রোধে ধীর গতি

জার্মানিতে রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলিতে ধূমপান সীমিতকরণের ব্যাপারে বহুদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছিল৷ অন্যান্য দেশে ধূমপান বিরোধী আইন চালু হওয়ার বহুদিন পরেও এই দেশটিতে এ নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে তর্কাতর্কি তুঙ্গে উঠেছে৷ অবশেষে জার্মানির কোনো কোনো অঙ্গ রাজ্য ধূমপান সীমিতকরণের আইন চালু করে৷ এই পথ অনুসরণ করে অন্যান্য অঙ্গরাজ্যগুলিও৷ তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রমী কিছু ব্যবস্থাও রাখা হয়৷ এর ফলে এ ক্ষেত্রে এক ধরনের বিশৃঙ্খলারও সৃষ্টি হয়৷ এক এক অঙ্গ রাজ্য এক এক ধরনের নীতিমালা প্রণয়ন করতে থাকে৷ অবশেষে ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতের হস্তক্ষেপে এক্ষেত্রে কিছুটা শৃঙ্খলা আসে৷ অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যেই ডিসকোথেক, বার, কফি হাউস ও রেস্তোরাঁগুলিকে ধূমপানের ব্যাপারে আংশিক অনুমতি দেয়া হয় এবং শর্ত দেয়া হয় যে, ধূমপানের জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করতে হবে তাদের৷ শুধুমাত্র দুটি অঙ্গরাজ্য – বাভারিয়া ও জারলান্ড রেস্তোরাঁ ও পানশালায় ধূমপানের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷

বাভারিয়ার রাজনীতিকরা অবশ্য সহজে এ ব্যাপারে নরম হননি৷ এক গণভোটের মাধ্যমে বাভারিয়াবাসীরা ধূমপান রোধে কঠোর আইন প্রণয়নে রাজ্য সরকারকে বাধ্য করে৷

অমূলক আশঙ্কা

ইতিমধ্যে অবশ্য ধূমপান করতে দেয়া না হলে খদ্দেরও তেমন পাওয়া যাবে না, বার ও রেস্তোরাঁর মালিকদের এই আশঙ্কা অনেকটাই দূর হয়েছে৷ বরং আগের চেয়ে তাদের বিক্রি বেড়ে গেছে৷

গবেষক হাইনেভিংকেল আশা করেন, ধূমপান রোধক আইনের ফলে অন্যান্য অসুখ বিসুখের হারও কমে যাবে, যা লক্ষ্য করা যাবে পরিসংখ্যানেও৷ সব অঙ্গরাজ্যই যদি বাভারিয়া ও জারলান্ডের পথ অনুসরণ করে ধূমপান বিরোধী আইন কঠোর করতো, তা হলে হৃদরোগের হার আরো কমে যেত৷ অন্যান্য দেশের সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ধূমপানের ব্যাপারে কঠোর আইন কানুন চালু করার পর হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছে৷

তামাক শিল্প সমিতির প্রতিরোধ

স্বাভাবিকভাবে তামাক শিল্প সমিতি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই ধরনের আশাবাদের ব্যাপারে সন্দিহান৷ জার্মান সিগারেট সমিতির মুখপাত্র পেটার ক্যোনিগ্সফেল্ড এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘শুধু ধূমপান নিষিদ্ধ করার ফলেই যে রোগ ব্যাধির হার কমেছে, তা মনে করা ঠিক নয়৷ হার্ট অ্যাটাক এমন কোনো রোগ নয়, যা শুধু একটি মাত্র কারণেই ঘটে থাকে৷''

তাঁর মতে হৃদরোগ কমে যাওয়ার আর একটি প্রধান কারণ হল, জার্মানরা আগের চেয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিয়েছেন বেশি৷ খাওয়া দাওয়া করেন চিন্তা ভাবনা করে, খেলাধুলায়ও আগ্রহী হচ্ছেন৷ জার্মান তামাক শিল্প সমিতির ফ্রান্স পেটার মার্কস মনে করেন, হৃদরোগ কম হওয়ার আর একটি কারণ হল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে সূক্ষ্ম ধুলিকণার পরিমাণ হ্রাস পাওয়া৷

অন্যদিকে ধূমপান বিরোধী আইন সরাসরি হৃদরোগ কমাতে সাহায্য করছে বলে মনে করে অধূমপায়ী রক্ষা সমিতি৷ একটি জরিপে জানা গেছে, জার্মানির ৮০ শতাংশ মানুষ ধূমপান নিষিদ্ধকরণকে ভাল মনে করেন৷ ‘ধূমপান থেকে মুক্ত কর' প্রতিষ্ঠানটির আন্ড্রেয়াস সাইলিংগার দাবি করেন, অধূমপায়ী সুরক্ষা নীতিমালা সারা জার্মানিব্যাপী একই রকম হওয়া উচিত৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এক্ষেত্রে আইন কানুন আরো শক্ত হওয়া প্রয়োজন৷ অন্যান্য অঙ্গ রাজ্যের তুলনায় বাভারিয়ার অবস্থা ভাল হলেও একেবারে নিখুঁত নয়৷''

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ