গত ১০ দিন ধরে ক্রমাগত হেঁচকি তুলছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। অপারেশন হতে পারে, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিজ্ঞাপন
অসুস্থ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। বুধবার তাকে প্রথম নিয়ে যাওয়া হয় দেশের একটি সেনা হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে পাঠানো হয় সাও পাওলোর অন্য একটি হাসপাতালে। চিকিৎসকের নির্দেশেই এ কাজ করা হয়েছে বলে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন। বলা হয়েছে, গত ১০ দিন ধরে ক্রমাগত হেঁচকি উঠছে প্রেসিডেন্টের। দাঁতের একটি চিকিৎসার পরেই তার এই সমস্যা শুরু হয়। পরীক্ষা করে চিকিৎসকদের ধারণা, তার পাকস্থলীতে একটি ব্লক আছে। তার থেকেই এই ঘটনা ঘটছে। প্রয়োজনে অপারেশন করা হতে পারে।
করোনায় কাবু সরকার প্রধানরা
বিশ্বের ক্ষমতাধর অনেক ব্যক্তিই করোনার কাছে হেরে গেছেন৷ এই তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে৷ সবশেষ এই দলে যোগ দিয়েছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷
ছবি: Olivier Matthys/AP Photo/picture alliance
সোফি গ্রেগরি ট্রুডো
গত মার্চে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো৷ এরপর ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে ছিলেন জাস্টিন ট্রুডো নিজেও৷ তবে তিনি বা তিন সন্তানের কেউ করোনা সংক্রমিত হননি৷
ছবি: Reuters/P. Doyle
প্রিন্স দ্বিতীয় আলবার্ট
মোনাকোর প্রিন্স দ্বিতীয় আলবার্ট রাজ পরিবার এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি৷ মার্চে তার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/MediaPunch/D. Van Tine
বরিস জনসন
শুরুতে করোনাকে পাত্তা না দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ প্রধান বিশ্ব নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন৷ শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে এপ্রিলের শুরুতে তাকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়৷
ছবি: Photoshot/picture-alliance
মিখাইল মিশোস্টেন
এপ্রিলের শেষে করোনা শনাক্ত হয়েছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশোস্টেন৷ ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে৷ তার অবর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন আন্দ্রেই বেলোসোভ৷
ছবি: Reuters/Sputnik/E. Shtukina
নুনো গোমেজ নাবিয়াম
এপ্রিলেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন গিনি-বিসাউ এর প্রধানমন্ত্রী নুনো গোমেজ নাবিয়াম৷ তার মন্ত্রীসভার তিন সদস্যেরও কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল সেসময়৷
ছবি: DW/B. Darame
হুয়ান অর্লান্দো হার্নান্দেজ
জুনে নিউমোনিয়ার লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট হুয়ান অর্লান্দো হার্নান্দেজ৷ পরবর্তীতে করোনা শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়৷ করোনার টিকায় বিশ্বের সবার সমান অধিকার নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন তিনি৷
ছবি: AFP/O. Sierra
নিকোল পাশেনিয়ান
পুরো পরিবারসহ জুনে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশেনিয়ান৷ তবে আক্রান্তের খবর প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যেই ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন বলে ফেসবুকে ঘোষণা দেন তিনি ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Druzhinin
জেইর বলসোনারো
শুরুর দিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো করোনা সংকটকে ‘উদ্ভট কল্পনা’ এবং সাধারণ ফ্লু হিসেবে অভিহিত করেছেন৷ পরবর্তীতে দেশটি মারাত্মকভাবে করোনা আক্রান্ত হয়৷ জুলাইতে এসে বলসোনারো নিজেই করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন৷
ছবি: Youtube/TV BrasilGov
আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো
করোনা প্রতিরোধে যেসব দেশের সরকার তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি তার একটি বেলারুশ৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো করোনা মহামারিকে মানসিক সমস্যা হিসেবে অভিহিত করেছিলেন৷ করোনা প্রতিরোধে ভদকা পানেরও পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি৷ জুলাইর শেষ দিকে নিজে করোনা আক্রান্ত বলে ঘোষণা দেন লুকাশেঙ্কো৷ জানান, কোভিড পজিটিভ হলেও তার তেমন কোন লক্ষণ নেই৷
ছবি: picture-alliance/Russian Look/V. Listsyn
আলেখান্দো গিয়ামাত্তে
সেপ্টেম্বরে গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট আলেখান্দো গিয়ামাত্তের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়৷ এরপর গোটা মন্ত্রীসভার সদস্যদের করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দেন তিনি৷ যার মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রীরও করোনা ধরা পড়ে৷
ছবি: Johan Ordonez/AFP
ডনাল্ড ট্রাম্প
দুই অক্টোবর নিজের ও ফাস্ট লেডি মেলানিয়ার করোনা পজেটিভের খবর দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে৷ শুরু থেকেই করোনা ভাইরাসের হুমকিকে খাটো করে দেখানোর জন্য সমালোচিত হয়ে আসছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
ছবি: Carlos Barria/Reuters
এমানুয়েল মাক্রোঁ
১৭ ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ তার কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়৷ তাদের তথ্য অনুযায়ী, মাক্রোঁ সাত দিনের আইসোলেশনে রয়েছেন৷ তার বেশ কিছু বিদেশ সফর ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে৷ লেবানন সফরও রয়েছে বাতিল হয়ে যাওয়া সফরের তালিকায়৷
ছবি: Olivier Matthys/AP Photo/picture alliance
12 ছবি1 | 12
২০১৮ সালে একটি অনুষ্ঠানে বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর এক সমর্থক বলসোনারোকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করেছিল। প্রেসিডেন্টের পেটে ছুরি চালানো হয়েছিল। যে চিকিৎসক তখন তার চিকিৎসা করেছিলেন, তিনিই এখন দেখছেন। ওই ছুরিকাঘাতের পর বলসোনারোর একাধিক পেটের সমস্যা হয়েছে। একাধিকবার চিকিৎসাও করাতে হয়েছে। সাম্প্রতিক সমস্যাও ওই ঘটনার জন্য বলে মনে করা হচ্ছে।
বলসোনারো নিজেও টুইট করেছেন। সেখানে ২০১৮ সালের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিরোধী বামশক্তিকে এক হাত নিয়েছেন। তার বক্তব্য, রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে পারেনি বলেই বামপন্থিরা তাকে আঘাত করার চেষ্টা করেছিল। যার ফল এখনো ভুগতে হচ্ছে তাকে।
গত কয়েকদিনে বার বারই হেঁচকি তুলতে দেখা গেছে বলসোনারোকে। সম্প্রতি এক সভায় কথা বলার সময় বার বার হেঁচকি ওঠে তার। তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। একটি রেডিও-র অনুষ্ঠানেও একই ঘটনা ঘটে।
আগামী বছর ব্রাজিলের নির্বাচন। সমীক্ষা বলছে, বলসোনারোকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন বিরোধী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। করোনাকালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট যেভাবে প্যানডেমিককে উপেক্ষা করেছেন, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ জনগণ। অ্যামেরিকার পর ব্রাজিলেই সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছেন। কিন্তু টিকাকরণ নিয়ে মাথা ঘামাননি প্রেসিডেন্ট।