সব দেশের জন্যই হেট স্পিচ কম-বেশি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ চলতি বছরের শুরু থেকে জার্মানিতে একটি আইন কার্যকর হয়েছে৷ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো জার্মানির এই আইনের কার্যকারিতার দিকে নজর রাখছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির আইনটি সংক্ষেপে ‘নেৎসডিজি' নামে পরিচিত৷ এই আইন বলছে, সামাজিক মাধ্যমগুলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ ও আপত্তিকর কন্টেন্ট না মুছলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫০০ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা করা হবে৷ অবশ্য বিশেষ ক্ষেত্রে কন্টেন্ট মোছার সময়সীমা এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে৷ এই আইনের আওতায় হেট স্পিচ ছড়ানো ব্যক্তির পরিচয় জানাতে বাধ্য সামাজিক মাধ্যমগুলো৷
২০১৫ সালে ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নামলে অনলাইনে বিদেশিদের বিরুদ্ধে হেট স্পিচ বেড়ে যাওয়ায় জার্মানি এমন আইন প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়৷
আইনটি কার্যকর হওয়ার প্রায় তিন মাস হতে চলেছে৷ এখন পর্যন্ত সেটি সফল বলে মনে করছে সরকার৷ কারণ জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আপত্তিকর কন্টেন্ট না মোছা সংক্রান্ত মাত্র ২০৫টি অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছে বিচার মন্ত্রণালয়৷ অথচ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বছরে প্রায় ২৫ হাজার অভিযোগ আশা করেছিলেন৷
ঐতিহাসিক হেট স্পিচ
পৃথিবী জুড়ে রাজনৈতিক নেতারা হেট স্পিচে মেতেছেন৷ তবে রাজনৈতিক ইতিহাসে হেট স্পিচ নতুন কিছু নয়৷ নানা সময়ে নানা নামে নানা কায়দায় হেট স্পিচ চালু ছিল৷ ছবিঘরে তারই কিছু উদাহরণ দেওয়া গেল৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media Co. Ltd
ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিশ্ব রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি হেট স্পিচের জন্য নাম কিনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ একবার নয়, বার বার হেট স্পিচ দিয়েছেন৷ তাঁর টার্গেট হয়েছেন কখনো মুসলিমরা আবার কখনো আফ্রিকার মানুষেরা৷ একদা তিনি বলেছিলেন, মুসলিমদের দেশে ঢোকা বন্ধ করে দেবেন তিনি৷ আর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মানুষদের বিষয়ে বলেছিলেন, তাঁরা ‘শিটহোল’ দেশ থেকে এসেছেন৷ যা নিয়ে প্রভূত সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Harnik
খেয়ার্ট ভিল্ডার্স
গোটা ইউরোপেই এখন অতি দক্ষিণপন্থিদের বারবাড়ন্ত৷ হল্যান্ডে এখনো দক্ষিণপন্থিরা সেভাবে থাবা বসাতে না পারলেও ডাচ নেতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্স সংসদে দাঁড়িয়ে যে বক্তৃতা করেছিলেন তা ডাচ ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কের দিন৷ ভিল্ডার্স বলেছিলেন, ইসলাম একটি খারাপ বিষয়৷ ইসলামের জন্য হল্যান্ডের সংস্কৃতি নষ্ট হচ্ছে৷ সংসদেই ভিল্ডার্সকে এরপর চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অন্যান্য সংসদেরা৷
ছবি: Imago/Hollandse Hoogte
যোগী আদিত্যনাথ
ভারতে বর্তমান শাসকদল বিজেপি এবং তার সহযোগীরা হেট স্পিচের জন্য বিখ্যাত৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি অভিযুক্ত গুজরাট দাঙ্গার জন্য৷ হেট স্পিচও দিয়েছেন তিনি একসময়৷ তবে সমসময়ে তাঁর শিষ্য এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হেট স্পিচের জন্য সবচেয়ে কুখ্যাত হয়েছেন৷ উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে একাধিক হেট স্পিচ দিয়েছেন তিনি প্রকাশ্যে৷ দাঙ্গাও বাঁধিয়েছেন৷
ছবি: Imago/Zumapress
প্রবীণ তোগাড়িয়া
বিশ্বহিন্দু পরিষদ বিজেপিরই অন্যতম শাখা সংগঠন৷ সেই সংগঠনের প্রধান প্রবীণ তোগাড়িয়া একটি জনসভায় মুসলিমদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন৷ এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বহু মামলা হয়েছে৷ সে সব মামলা এখনো চলছে৷
ছবি: UNI
জর্জ ডাব্লিউ বুশ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগেও বহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হেট স্পিচের জন্য ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন৷ ট্রাম্পের সমকক্ষ না হলেও জর্জ ডাব্লিউ বুশ তাঁর অন্যতম৷ বর্ণবিদ্বেষমূলক নীতি গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে৷ বিশেষত স্কুলের ছাত্রদের ক্ষেত্রে তিনি বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/S. Wenig
জন ক্যালভিন কোলড্রিজ
১৯২৩ থেকে ১৯২৯ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন কোলড্রিজ৷ ১৯২৭ সালে হয় ভয়াবহ মিসিসিপি বন্যা৷ অভিযোগ, শ্বেতাঙ্গদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করলেও কোলড্রিজ কৃষ্ণাঙ্গদের উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থাই করেননি৷ বহু কৃষ্ণাঙ্গ সে সময় প্রাণ হারিয়ে ছিলেন৷ পৃথিবী জুড়ে কোলড্রিজের বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছিল৷
ছবি: Imago/Ralph Peters
উড্রো উইলসন
১৯১৩ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন উড্রো উইলসন৷ বহু ভালো কাজের জন্য প্রশংসিত হলেও অধিকাংশ মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো তিনিও হেট স্পিচ দিয়েছেন৷ ক্ষমতায় এসে ফেডারেল শ্রমিকদের কাজের পুনর্নবিকরণ করেছিলেন৷ সে সময় অধিকাংশ কৃষ্ণাঙ্গকে চাকরিচ্যূত করেছিলেন৷ যাঁদের কাজ বেঁচে গিয়েছিল, তাঁদের জন্য আলাদা খাওয়ার ঘর, কাজের পরিসরের ব্যবস্থা হয়েছিল৷ শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে কাজ করার অধিকার ছিল না তাঁদের৷
ছবি: Getty Images
আডল্ফ হিটলার
কমিউনিস্ট, মুসলিম এবং ইহুদিদের বিরুদ্ধে তিনি যা বলেছেন, সবই হেট স্পিচ৷ শুধু বলেছেন না, ইহুদিদের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানোরও ব্যবস্থা করেছেন৷ বিশ শতকের দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি হেট স্পিচের রেকর্ড আডল্ফ হিটলারের মুকুটেই৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media Co. Ltd
বেনিটো মুসোলিনি
তাঁর শাসনকালেই ‘ফাশিস্ত’ শব্দটির উদ্ভব৷ বিরোধীদের প্রসঙ্গে যে ধরনের মন্তব্য তিনি করতেন, তা এক কথায় হেট স্পিচ৷
ছবি: picture alliance/AP
ইদি আমিন
১৯৭১ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত উগান্ডার স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন ইদি আমিন৷ তাঁর আগের শাসক আবোটের অনুগামীদের বিরুদ্ধে কুৎসিত মন্তব্য করে তিনি নিজের সমর্থকদের তাতিয়ে দিতেন৷ অভিযোগ, আকোলি এবং ল্যাঙ্গো উপজাতির বিরুদ্ধেও একইরকম মন্তব্য করতেন তিনি৷ এবং শেষ পর্যন্ত ওই দুই উপজাতির মানুষদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল তাঁর দলবল৷ উগান্ডার ইতিহাসে এখনো যা সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায়৷
ছবি: Getty Images
জোসেফ স্ট্যালিন
সোভিয়েত রাশিয়ার এই কমিউনিস্ট নেতার বিরুদ্ধেও হেট স্পিচের অভিযোগ আছে৷ কেবল অ্যামেরিকা নয়, তাঁর নিজের দেশের বিরোধীদের সম্পর্কেও বহু হেট স্পিচ দিয়েছেন তিনি৷ মানুষ উসকেছেন বিরোধীদের একঘরে করার জন্য৷ বস্তুত আয়রন ক্যাম্পও তাঁরই সৃষ্টি৷
ছবি: AFP/Getty Images
আশিন উইরাথু
তিনি ‘মিয়ানমারের বিন লাদেন’ হিসেবেও পরিচিত৷ এই কট্টর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ফেসবুকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট দিয়ে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন৷ তার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এতটাই প্রভাব বিস্তার করছিল যে ফেসবুক তাঁর পেজটি মুছে ফেলতে বাধ্য হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad
জুলফিকার আলী ভুট্টো
বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণ পাকিস্তানের শোষণমূলক ব্যবস্থার বিরোধিতা করায় এ নিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর খুবই মনোকষ্ট ছিল৷ তিনি কখনো মেনে নিতে পারেননি যে, এদেশের মানুষ তাঁর কথার বিরোধিতা করেছে৷ এমনকি প্রকাশ্যে তিনি জনসভাতেই বলে ফেলেছিলেন৷ ঢাকায় এক জনসভায় তিনি বলেই ফেলেছিলেন যে, ‘‘মঞ্জুর হ্যায় তো ঠিক হ্যায়, নেহি মঞ্জুর হ্যায় তো শুয়োর কে বাচ্চে, জাহান্নাম মে যায়ে৷’’
ছবি: STF/AFP/GettyImages
13 ছবি1 | 13
তবে সামাজিক মাধ্যমগুলো জরিমানার ভয়ে আপত্তিকর নয়, এমন অনেক পোস্টও মুছে ফেলছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ যেমন গত জানুয়ারি মাসে জার্মানির তৎকালীন বিচারমন্ত্রী হাইকো মাসের একটি পুরনো টুইট মুছে ফেলা হয়৷ ঐ টুইটে তিনি অভিবাসনবিরোধী এক লেখককে ‘ইডিয়ট' বলেছিলেন৷ উল্লেখ্য, আলোচিত নেৎসডিজি আইনটি হাইকো মাসের হাত ধরেই প্রণীত হয়েছে৷ হাইকো মাস বর্তমানে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
এছাড়া হাস্যরসাত্মক, ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্টও অনেকসময় মুছে দেয়া হচ্ছে৷ যেমন গত জানুয়ারিতে মর্যাদাপূর্ণ ‘গ্রিমে অ্যাওয়ার্ড' জেতা ‘বারবারা'র (ছদ্মনাম) একটি ছবি মুছে দিয়েছিল ফেসবুক৷ এমনকি তার অ্যাকাউন্টও ব্লক করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল৷ সেই সময় বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল৷
এই আইনে এখনও পর্যন্ত মুছে দেয়া কন্টেন্ট ফিরে পাওয়ার কোনো উপায় রাখা হয়নি৷
এ সব কারণে বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা অ্যাক্টিভিস্ট, জার্মানির সাংবাদিকদের সংস্থাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নেৎসডিজি আইনের সমালোচনা করেছে৷ অনেকে আইনটি বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন৷
এসব আলোচনা বিবেচনায় নিয়ে জার্মানির নতুন সরকার আইনটিতে একটি ধারা যোগ করার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে৷ সেটি বাস্তবায়িত হলে ব্যবহারকারীরা তাদের মুছে দেয়া পোস্ট ফিরে পেতে পারেন৷
এছাড়া আপত্তিকর পোস্ট সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সব সামাজিক মাধ্যম মিলে একটি স্বাধীন সংস্থা গড়ে তোলার কথা বলছেন সাংসদরা৷ সেটি সম্ভব হলে কোনো কন্টেন্ট ব্লক করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করে পদক্ষেপ নেয়া যাবে, বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা৷
দেশে দেশে ইন্টারনেটে নিয়ন্ত্রণ-লড়াই
অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ করতে জার্মানি একটি ‘সামাজিক মাধ্যম আইন’ করতে চায়৷ জার্মান সংসদে এ নিয়ে আলোচনা চলছে৷ এরই মধ্যে এর সমালোচনাও শুরু হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Kastl
মুক্তমত, নাকি অবৈধ বিষয়বস্তু?
ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য, প্রপাগান্ডা, অ্যাক্টিভিজম ইত্যাদি অনলাইনে হরহামেশাই চলে৷ এগুলো নিয়ে দেশে দেশে বিতর্ক কম হয়নি৷ নানা দেশে তাই সামাজিক মাধ্যমে সরকারি হস্তক্ষেপও এসেছে৷ অনেকে এটাকে মুক্ত মতের উপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Kastl
সামাজিক মাধ্যম আইন
জার্মানির আইনমন্ত্রী হাইকো মাস সামাজিক মাধ্যমের জন্য একটি আইনের প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন৷ সে আইনে বিদ্বেষমূলক পোস্ট অপসারণ না করলে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানির বিপুল জরিমানার কথা বলা হয়েছে৷ কিন্তু এতে বিগড়ে বসেছে ফেইসবুক৷ তারা বলছে, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং ভুয়া খবর ঠেকানোর দায় তাদের একার নয়৷ সরকারকেও এই দায়িত্ব নিতে হবে৷ আইনটি এখন পর্যালোচনার জন্য জার্মান সংসদীয় কমিটিতে রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
ভুলে যাওয়ার অধিকার
২০১৪ সালে ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিসের জারি করা এক আদেশে বলা হয়, গুগল, বিং-এর মতো সার্চ ইঞ্জিনকে তাদের অনুসন্ধানের ফলাফলে কোনো বিশেষ কিছু বাদ দিতে ইউরোপীয় নাগরিকরা অনুরোধ জানাতে পারবেন৷ গুগল সেই আদেশ বাস্তবায়ন করলেও আগে এ বিষয়ে বেশ অনাগ্রহ দেখিয়েছে৷ তখন তারা বলেছে, এটা ইন্টারনেটকে মুক্ত বিশ্বের আবদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলবে৷
ছবি: picture-alliance/ROPI/Eidon/Scavuzzo
ইউক্রেনের নিষেধাজ্ঞা
ইউক্রেন গত মে মাসে রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যম ও ওয়েবসাইটের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ বিষয়টি দেশটির লাখ লাখ মানুষের উপর প্রভাব ফেলে৷ অনেকেই তাদের ডাটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ এর প্রতিবাদে তরুণরা রাস্তায় নেমে আসে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Str
প্রসঙ্গ: সেফ হারবার
২০১৫ সালে ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস এক রায়ে ইউএস এবং ইইউ’র মধ্যকার চুক্তি ‘সেফ হারবার’কে অকার্যকর ঘোষণা করে৷ যে চুক্তি বলে কারো ব্যক্তিগত তথ্য পূর্বানুমতি ছাড়াই হস্তান্তর করা যায়৷ অস্ট্রেলীয় আইনের ছাত্র ম্যাক্স স্ক্রিম ফেইসবুকের বিরুদ্ধে একটি মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন৷ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক ঠিকাদার অ্যাডওয়ার্ড স্নোডেন তথ্য ফাঁস করায় তিনি এই ব্যবস্থা নিচ্ছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Warnand
কঠোর চীন
চীনে সরকার কঠোরভাবে সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে৷ ফেসবুক, টুইটার, ইনসটাগ্রামের মতো হাজার হাজার ওয়েবসাইট দেশটির সরকার নিষিদ্ধ করে রেখেছে৷ সেখানকার সরকার নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু করেছে৷ যেমন, ইউবো, উইচ্যাট৷ জনবহুল এই দেশটিতে এখন এগুলোরও কোটি কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Imaginechina/Da Qing
6 ছবি1 | 6
নেৎসডিজি মেনে চলতে জার্মানিতে ফেসবুকের প্রায় ১,২০০ কর্মী কাজ করছে৷ পুরো বিশ্বে ফেসবুকের এমন কর্মীর সংখ্যা ১৪ হাজার৷
টুইটার এ ব্যাপারে তাদের পরিকল্পনা জানায়নি৷ আর গুগলের ইউটিউব বলেছে, জার্মান আইন মানতে তারা ভবিষ্যতে বিনিয়োগ বাড়াবে৷
বিশ্ব তাকিয়ে
অনলাইনে হেট স্পিচ নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে জার্মানিই সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্খী পদক্ষেপ নিয়েছে৷ কারণ নাৎসি আমলের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে জার্মানিতে এমনিতেই ঘৃণা উসকে দেয় এমন বক্তব্য দেয়া ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়ার আইন রয়েছে৷
তাই জার্মানির এই আইনটি কেমন কাজ করছে তার দিকে নজর রাখছে অন্য দেশগুলো৷ কারণ তারাও এমন আইন করতে চাইছে৷ যেমন ‘ভুয়া খবর' বন্ধে আইন করতে চায় ফ্রান্স৷ অনলাইনে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধস করতে আগ্রহী ব্রিটেন৷ আর জাপান চায় আত্মহত্যা বিষয়ক পোস্ট নিয়ন্ত্রণ করতে৷ কারণ সেদেশের একজন সিরিয়াল কিলার নাকি টুইটারের মাধ্যমে শিকার খুঁজতেন৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স)
এ বিষয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷