1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হেফাজতের বিক্ষোভে মামুনুলের মিডিয়া বয়কটের হুমকি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২ এপ্রিল ২০২১

কয়েকদিনের সহিংসতা, সংঘাত-সংঘর্ষের পর শুক্রবার ঢাকায় হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ৷ তারা নতুন কোনো কর্মসূচি দেয়নি৷ তবে প্রয়োজনে সংবাদমাধ্যমকে বয়কটের হুমকি দিয়েছেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক৷

ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে হেফাজতে ইসলাম তাদের পূর্ব নির্ধরিত বিক্ষোভ সমাবেশ করে৷ তবে তাদের এই সমাবেশ মসজিদের গেটের মধ্যেই সীমাদ্ধ ছিল৷ বাইরের সড়কে তারা বের হয়নি৷  বাইরে কোনো মিছিলেরও চেষ্টা করেনি৷

এই বিক্ষোভ সমাবেশের কারণে বায়তুল মোকারররম, পল্টন, কাকরাইল, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন এলকায় বিপূল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল৷ বায়তুল মোকাররম মসজিদ সংলগ্ন সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল জুমার নামাজের আগে থেকেই পুলিশ বন্ধ করে দেয়৷ সমাবেশ শেষে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা পুলিশের নির্দেশনা মেনে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বের হয়ে যায়৷

সমাবেশে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন ৷ তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের বিরোধিতার কর্মসূচিতে সহিংসতা, তাণ্ডব, জ্বালাও পোড়াও ও মৃত্যুর জন্য সরকারকেই দায়ী করেন৷ তাদের দাবি, সরকারে পুলিশ এবং হেলমেট বাহিনী-আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এর জন্য দায়ী৷ হেফাজত নেতারা আরো দাবি করেন, গত শুক্রবার (২৬ মার্চ) বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না৷ সরকারের বাহিনীই লাঠিসেটা নিয়ে সহিংস ঘটনা ঘটায়৷

কিছু সংবাদমাধ্যম সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে হেফাজতের তাণ্ডব বলে অপপ্রচার করছে: মামুনুল হক

This browser does not support the audio element.

হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী দাবি করেন, ‘‘চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও ঢাকায় পুলিশ আগে গুলি চালিয়েছে৷ তার প্রতিক্রিয়ায়, ক্ষোভে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ কয়েকটি এলকায় কিছূ সহিংস ঘটনা ঘটেছে৷ আমাদের নেতা-কর্মীরা নিহত হয়েছে৷ এরজন্য সরকারই দায়ী৷’’

প্রয়োজনে মিডিয়া বয়কটের হুমকি

হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, ‘‘মিডিয়াকর্মীদের বলবো, আপনারা অনেক শক্তিশালী, আমরা মানি৷ আপনারা যতই প্রভাবশালী, যতই শক্তিশালী হোন, যতই পরিবেশ-পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করেন, মনে রাখবেন আল্লাহর চেয়ে শক্তি আপনাদের বেশি নেই৷ ইসলামের বিপক্ষে আপনারা অবস্থান গ্রহণ করছেন৷ প্রয়োজনে আপনাদেরও বয়কট করা হবে৷’’

তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কিছু সংবাদমাধ্যম সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে হেফাজতের তাণ্ডব বলে অপপ্রচার করছে৷ তারা সত্য আড়াল করছে৷ এ কারণেই প্রয়োজনে মিডিয়া বয়কটের কথা বলেছি৷’’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব৷ তিনি দাবি করেন, ‘‘একজন এমপির নির্দেশে মিছিল নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা আক্রমণ করা হলো, ককটেল মারা হলো, তাকে এখনো কেন গ্রেফতার করা হলো না৷ মুক্তাদিরের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হলো না ৷ আমরা সমাবেশ থেকে জানাতে চাই, অনতিবিলম্বে মুক্তাদির চৌধুরী কে গ্রেফতার করা হোক৷’’

হেফাজতের এই সমাবেশ থেকে কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচার দাবি করা হয়৷ তারা আহতদের সুচিকিৎসা এবং যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মুক্তির দাবি জানান৷

হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ বায়তুল মোকাররম গেটের ভিতরে সীমাবদ্ধ রাখার কারণ জানিয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘‘আমরা নতুন কোনো সহিংসতা চাই না৷ কেউ ঘাপটি মেরে থেকে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে, এ কারণে আমরা নিয়ন্ত্রণে রেখেছি৷’’

এরা ধর্ম ব্যবসায়ী: মাহবুব উল আলম হানিফ

This browser does not support the audio element.

আর নতুন কর্মসূচি না দেয়া প্রসঙ্গে আজিজুল হক ইসলামবাদী বলেন, ‘‘করোনা বাড়ছে৷ আবার কওমী মাদ্রাসাগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে৷ তাই নতুন কোনো কর্মসূচি আপতত দেয়া  হয়নি৷ তবে পরে হেফাজতের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দেয়া হবে৷’’

‘হেফাজত, জামাত ধর্মের নামে অধর্ম করে, এরা মিথ্যা বলায় ওস্তাদ’

এদিকে হেফাজতের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘‘এরা ধর্ম ব্যবসায়ী৷ এরা ধর্মের কথা বলে নাশকতা ও সহিংসতা করেছে৷ এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে৷ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না৷’’

সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়, রেলস্টেশন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের বাসস্থান, হিন্দুদের মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশকে হেফাজতের দায়ী করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘হেফাজত, জামায়াত এরা নামের সাথে ইসলাম লাগায়, কিন্তু ধর্মের নামে অধর্ম করে৷ এরা মিথ্যা কথা বলায় ওস্তাদ৷ মিথ্যা কথা বলতে এদের কোনো কুণ্ঠা বোধ হয় না৷’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘তদন্তে হেফাজতের যে পর্যায়ের নেতাদের নামই আসুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে৷’’

হেফাজতের ব্যাপারে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করেছে৷ সবার আগে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে৷

‘বয়কটের হুমকি আর দোষ চাপানো তাদের পুরোনো অভ্যাস’

হেফাজতের মিডিয়াকে বয়কটের হুমকির প্রসঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, ‘‘মিডিয়াকে বয়কট করা, এড়িয়ে যাওয়া, কোনো এক পক্ষের বলে রঙ দেয়া তাদের পুরনো অভ্যাস৷ শুধু হেফাজতই নয়, ধর্মের লেবাসধারীরা এই কাজই করে৷ কারণ, তারা মনে করে তারা যা ভাবে, যা করে তা-ই ঠিক৷ আর কোনো সত্য তারা গ্রহণ করে না৷’’

তিনি বলেন, মিডিয়া যা ঘটনা, তা প্রকাশ করবে, যা সত্য তা তুলে ধরবে৷ বিএনপি জামায়াত জোট সরকাররও বলেছিল ‘বাংলা ভাই' বলে কিছু নাই, এটা মিডিয়ার সৃষ্টি৷ ১৯৭১ সালেও এরকমই তারা করেছে৷

তার মতে, ‘‘এরা হলো একাত্তরের একটা প্রেতাত্মা গ্রুপ৷ তারা এখন দেশকে ভিন্ন খাতে নিতে চাইছে৷ মিডিয়ার এখন উচিত হবে তারা বয়কট করুক আর না করুক যা সত্য তা তুলে ধরা৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ