হেভিওয়েট বক্সিং
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২এটাকে ঠিক স্পোর্টস বলা চলে কিনা বলা শক্ত৷ জিমবাবওয়ে'তে জন্ম নেওয়া চিসোরা শুক্রবারে ওয়েইং-ইন'এর সময় ভিটালিকে হঠাৎ থাপ্পড় মারেন৷ ইউক্রেইন'এর ডক্টর লৌহমুষ্টি অতিমাত্রায় ভদ্রলোক না হলে ব্যাপারটা কোথায় গড়াত, কে জানে৷ শনিবার রিং'এও ভিটালির ভাই ভ্লাদিমিরের মুখে নিজের মুখ থেকে কুলকুচো করে জল ফেলেন চিসোরা৷
সব সত্ত্বেও মাথা গরম না করে পয়েন্টে জিতেছেন ভিটালি৷ ওদিকে গত জুলাই'তে হামবুর্গে একটি ফাইটে ব্রিটেনের ডেভিড হেয়ি'কে হারিয়েছিলেন ভ্লাদিমির৷ সেই হেয়ি শনিবার মিউনিখে উপস্থিত ছিলেন বিশেষজ্ঞ হিসেবে৷ ক্লিচকো-চিসোরা ফাইটের পর সাংবাদিক সম্মেলনে বচসা শুরু হয় প্রথমে হেয়ি এবং চিসোরার ম্যানেজার বার্ন্ড বোয়েন্টে'র মধ্যে৷ তারপরে চিসোরা স্বয়ং হাতাহাতি, মারামারিতে যোগ দেন৷ এই সময় হেয়ি'র ম্যানেজার অ্যাডাম বুথ'এর চোখের ওপরে কেটে যায়৷
ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ইত্যাদি এদিক-সেদিক গিয়ে পড়ছে, সাংবাদিকরা পালাচ্ছেন, নিরাপত্তার লোকজন লড়াকুদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে, শেষমেষ পুলিশ আসছে৷ এটার সঙ্গে স্পোর্টসম্যানশিপের কি সম্পর্কে থাকতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে৷ ভিটালি ক্লিচকো এবার ছিলেন হেয়ি-চিসোরা মারামারির নীরব দর্শক৷ পরে তিনি বিবিসি'কে বলেছেন: ‘‘আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি৷ বড্ড বাড়াবাড়ি হয়েছে৷ স্পোর্ট হিসেবে বক্সিং'এ ও'রকম হওয়া উচিৎ নয়৷''
অথচ ক্লিচকো-চিসোরা ফাইটটা কিন্তু খুব খারাপ হয়নি৷ দর্শকরা স্বভাবতই ক্লিচকো'কে সমর্থন করেছে৷ তবে চিসোরা যেভাবে একটানা আক্রমণ চালিয়েছেন, তা'তে ক্লিচকো ফ্যানরা সপ্তম রাউন্ডে হয়তো কিছুটা চিন্তাতেই পড়েছিল, ভিটালি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন কিনা৷ কিন্তু নবম রাউন্ডে চিসোরা ক্লিচকোর ডান মুষ্টির একটি জোর আঘাতের পর যেন তার প্রতিরোধ হারিয়ে ফেলেন৷ দশম রাউন্ডে তো চিসোরা'র যেন দাঁড়িয়ে থাকতেই কষ্ট হচ্ছিল৷ তবে ভিটালি পরে নিজেই স্বীকার করেছেন, ‘‘ওর যা পাওনা ছিল, ও'কে আমি দিতে পারিনি৷'' অর্থাৎ নক-আউট৷ কিন্তু ভিটালি আরো বলেছেন: ‘‘লাইফ ইজ লং৷ কে জানে, আমাদের হয়তো অন্য কোনোদিন মোলাকাত হবে৷''
এর নাম বক্সিং৷ এর নাম স্পোর্ট৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল হক