জার্মানির অনেক মানুষের মতো চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও বাসা থেকে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন৷ করোনা ধরা না পড়লেও তাঁকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে৷ নিঃসঙ্গ বোধ করলেও তিনি এভাবে কাজ করে সন্তুষ্ট৷
বিজ্ঞাপন
সংক্রমণের ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস যে কোনো বাছবিছার করে না, আক্রান্তদের তালিকা দেখলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়৷ ধনী-দরিদ্র, রাজনীতিক বা সাধারণ মানুষ – কেউই এই ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত নয়৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সুস্থ থাকলেও করোনায় আক্রান্ত এক ডাক্তারের সান্নিধ্যে আসার কারণে তাঁকে গত রবিবার থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন৷ ফলে বাসা থেকেই তিনি কাজ করছেন৷ বৃহস্পতিবার জি-টোয়েন্টি ও ইইউ নেতাদের সঙ্গে ভিডিও ও টেলিফোন কনফারেন্স করেছেন তিনি৷
তবে চরম ব্যস্ততা সত্ত্বেও এমন নিঃসঙ্গ অবস্থায় থাকতে তাঁর ভালো লাগছে না৷ সবার সঙ্গে যোগাযোগ সত্ত্বেও সরাসরি সহকর্মীদের সান্নিধ্যের অভাব বোধ করছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ ম্যার্কেল বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সশরীরে হাজির থাকতে না পেরে তাঁর খারাপ লাগছে৷ হোম অফিস করা বড় চ্যালেঞ্জ হলেও কিছু নিয়ম যে মেনে চলতে হয়, ম্যার্কেল সে বিষয়ে নজর আকর্ষণ করেন৷ যেমন টেলিফোন বা ভিডিও কনফারেন্সে সবাই একসঙ্গে কথা বললে চলে না৷ সুযোগ পেলে তবেই কথা বলতে হয়৷ তাছাড়া সম্মেলনের সময় চেয়ার ছেড়ে উঠে অন্যদের কাছে গিয়ে যেভাবে ঐকমত্য অর্জনের চেষ্টা করা যায়, ভিডিও কনফারেন্সের সময় তা সম্ভব নয়৷ তবে সব মিলিয়ে বাসায় বসেও ভালোই কাজ করা যায় বলে মনে ম্যার্কেল মনে করেন৷
কবে ম্যার্কেলের ‘গৃহবন্দিদশা' শেষ হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ দু-দুবার পরীক্ষা সত্ত্বেও তাঁর শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি৷ শুক্রবার এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর তা নির্ভর করবে৷ তবে আগামী সপ্তাহ থেকে তিনি হয় সশরীরে অথবা টেলিফোনে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন৷
জার্মান চ্যান্সেলর অদূর ভবিষ্যতে ‘মুক্তি' পেলেও দেশের মানুষের জন্য কড়াকড়ি শিথিল করতে এখনই প্রস্তুত নন৷ তাঁর মতে, বিপদ মোটেই কেটে যায়নি৷ তাই তিনি দেশের মানুষের কাছে ধৈর্য ধরে রাখার আবেদন করেছেন৷ বর্তমান শাটডাউনের ফলে কতটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে এবং তার ভিত্তিতে বিপদের আশঙ্কার পূর্বাভাষ বোঝার সময় এখনো আসেনি বলে মনে করেন ম্যার্কেল৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা মিলে প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন৷
শিল্পীর চোখে ম্যার্কেল
বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের তালিকা প্রথম সারির একজন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বুধবার ৬৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি৷ জন্মদিনে দেখে নিন, কীভাবে শিল্পের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷
ছবি: Elizabeth Peyton
বিবর্তন
‘ক্ষমতার পদচিহ্ন‘ নামের সিরিজে আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সাবেক চ্যান্সেলর গেরার্ড শ্র্যুডার ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওশকা ফিশারকে তুলে ধরেছেন আলোকচিত্রী হেরলিন্ডে কোয়েলব্ল ৷ ছবি ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাজনীতিকদের বিবর্তন তুলে ধরেছেন তিনি৷
ছবি: Herlinde Koelbl
পপ আইকন
ভগ ম্যাগাজিনের জন্য ২০১৭ সালে ম্যার্কেলের এই চিত্রটি এঁকেছেন মার্কিন চিত্রশিল্পী এলিজাবেথ পেইটন৷ যৌবনের ছাপ রাখা ছবিতে তাঁর দৃঢ়তাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী৷ ম্যার্কেলের ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের কয়েকশ’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটি আঁকা হয়েছে৷
ছবি: Elizabeth Peyton
মানবিকতা
২০১৫ সালে এভাবে টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার সংখ্যার প্রচ্ছদে স্থান পান আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ছবির শিল্পী কলিন ডেভিডসন বলেন, ‘‘তাঁকে শান্ত ও নরম মনের মানুষ হিসাবে দেখানো হয়েছে, শরণার্থীদের প্রতি তাঁর মানবিক অবস্থানের কারণে৷’’ সেসময় ইউরোপের ঋণ এবং শরণার্থী সংকটে মানবিকতার হাত প্রসারিত করেছিলেন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Time Magazine
অবসাদ
ডাচ শিল্পী এরিক ফন লিশাউটের তুলিতে এভাবে ধরা দিয়েছেন অবসাদগ্রস্ত ও বিষন্ন ম্যার্কেল৷ বন শহরের সমসায়মিক চিত্রকর্মের সংগ্রহশালা সংগ্রহ করেছে এ চিত্রটি৷ ফন লিশাউট বলেছেন, প্রতিকৃতিটি আঁকতে মাত্র এক ঘন্টা সময় নিলেও লাল লিপিস্টিকে অন্যরকমভাবে ফুটে উঠেছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷
ছবি: Erik van Lieshout
জর্জ ডাব্লিউ বুশের তুলিতে
কেবল প্রখ্যাত শিল্পীদের নয়, শখের বশে চিত্রকরদের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ তুলিতে যে ত্রিশ বিশ্বনেতার ছবি এঁকেছেন, তাঁদের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. W. Smith
রাজনীতির দেয়ালচিত্র
দক্ষিণ অ্যামেরিকার রাজনৈতিক বক্তব্য সম্বলিত ম্যুরালটি এঁকেছেন ইটালিয়ান শিল্পী ইয়ুপিতারফাব৷ চিত্রটিতে গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে দেখা যায় ম্যার্কেলকে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/G. Georgiou
রম্যচিত্র
আর্ট জাদুঘরের সংগ্রহশালার অন্যতম অনুষঙ্গ রাজনৈতিক রম্যচিত্র৷ এই ছবিতে উলঙ্গ ম্যার্কেলে কোলে উঠে পড়েছেন নেপোলিয়ান হ্যাট পড়া সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট সারকোজি৷ এঁকেছেন ব্রিটিশ শিল্পী ও রম্যলেখক কায়া মার৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/B. Strenske
সংলাপ
বুলেগিরার স্টারো জেলেজারে গ্রামে এই দেয়ালচিত্রটি এঁকেছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের ছবি দিয়ে দেয়ালচিত্রটির সূচনা হলেও পরে ম্যার্কেলের মতো রাজনীতিকদের সেখানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়৷ সাধারণ মানুষের সঙ্গে ম্যার্কেলের সংলাপ দেখানো হয় তাতে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/H. Rusev
প্রতিবাদ
প্রতিবাদী অনেক ভাস্কর্যে বিকৃতভাবে ম্যার্কেল উপস্থাপন করা হয়েছে ম্যার্কেলকে৷ ‘ইউরোপিয়ান সিটিজেনশিপ‘ শিরোনামের ভাস্কর্যে ম্যার্কেলকে তুলে ধরা হয়েছিল মুণ্ডুহীন৷ উপরের ছবিটি ‘ট্রানজিট‘ নামক ইনস্টলেশনের, যেখানে দুই হাজার ৬০০ জনের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: Courtesy Georg Korner
হিপস্টার
‘হিপস্টোরি’ নামের সিরিজে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তরুন হিপস্টার হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছেন ইসরায়েলি ইলুস্ট্রেটর আমিত শিমোনি৷ হাওয়াইয়ান শার্ট পড়া ট্রাম্প আর উঁচু খোপার ওবামার সঙ্গে ম্যার্কেল আছে সেখানে৷ কালো হ্যাট আর লিপিস্টিক পড়া ম্যার্কেলকে এভাবে হিপস্টার বানিয়েছেন শিমোনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
ব্যঙ্গচিত্র
কুঁচকানো চোখ আর মুখসমেত ম্যার্কেলের ছবিও কম আঁকা হয়নি৷ জার্মানির বাইরের বহু গণমাধ্যমেও এমন সব চিত্রায়ন দেশ ছাড়িয়ে তাঁর বিশ্বনেতা হওয়ার প্রমাণ বহন করে৷