হোম অফিস কর্মীদের স্বার্থে নতুন আইন করতে চায় জার্মানি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
করোনা ভাইরাস সংকটে জার্মানিতে অনেকেই বাড়ি থেকে কাজ করছেন ৷ তাদের স্বার্থ রক্ষায় জার্মানির শ্রমমন্ত্রী নতুন আইন করতে চান৷ তবে এ নিয়ে ব্যবসায়ী মহলে মতবিরোধ রয়েছে ৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির শ্রমমন্ত্রী হুবার্টুস হাইল হোম অফিসের কর্মীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়ন করার ঘোষণ করেছেন ৷ বিশেষ করে কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার সময়সীমার ব্যাপারে৷ হানোফারভিত্তিক রেডাকসিয়ন্সনেটভের্গ ডয়চলান্ড-কে তিনি বলেন, কোনো কর্মীরই ২৪ ঘণ্টা কাজ করার জন্য বাধ্য থাকা উচিত নয়৷ হোম অফিস মানে এই নয় যে, একজন কর্মীকে সারাক্ষণই কাজের জন্য তৈরি থাকতে হবে৷ হোম অফিসের মূল লক্ষ্য কাজ সম্পন্ন করা, আর সে কাজ যার যেভাবে সুবিধা সেভাবে করার সুযোগ থাকতে হবে৷
কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় অফিসের বিধিনিয়মগুলো এই শরতেই ঠিকঠাক করতে হবে ৷ কর্মীরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে এবং তাদের চাকরি আর ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে বলেও মনে করেন তিনি৷
শ্রমমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘কোম্পানিগুলো চায় বাড়ি থেকে কাজের ক্ষেত্রে কর্মীরা নমনীয় থাকুক, বিনিময়ে কোম্পানিগুলোকেও কিন্তু নমনীয় হতে হবে৷ অফিসের কাজ যেন কর্মীরা বাড়ি থেকে সহজে করতে পারে, সেটাই আমরা চাইবো৷’’
এনএস/এসিবি(এএফপি, ইপিডি)
কোয়ারান্টিনের সময়কাল কমাতে চায় জার্মানি
করোনা কোয়ারেন্টিনের সময়কাল ১৪দিনের পরিবর্তে পাঁচদিন করার দাবি উঠেছে জার্মানিতে৷ এতে রাজনীতিকরা সমর্থন জানিয়েছেন এবং এর পক্ষে কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন৷ তারা আশা করছেন পদক্ষেপটি জনগণের বিপুল গ্রহণযোগ্যতা পাবে৷
ছবি: MSF/Anna Pantelia
করোনার বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হচ্ছে জার্মানিতে৷ এমনকি জার্মান সংসদ ভবনের সামনেও বিক্ষোভকারীরা হামলার চেষ্টা করেছে৷ বিভিন্ন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ৷
ছবি: Reuters/C. Mang
শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট ড্রসটেনের প্রস্তাব
কোয়ারান্টিন পাঁচদিন করার দাবিতে জার্মানির শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট ক্রিশ্চিয়ান ড্রসটেনের যুক্তি, “পাঁচদিন পরই করোনা পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল এবং রোগি আগে সংক্রমিত হয়েছিলো কিনা সেটা বোঝা যাবে৷ তাছাড়া রোগ নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে কষ্টের অনুভূতির মাত্রা কম হবে যা জনগণের কাছে আরো বেশি সমর্থন পাবে৷”
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Gateau
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থবহ
জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক মূখপাত্র কার্ল লাউটারবাখ বলেন, “বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচদিন পর আর সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকেনা, এমনকি পিসিআর পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক হলেও৷ শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি থাকার অর্থ এই নয় যে রোগি করোনায় সংক্রমিত৷ যা প্রথমদিকে বোঝা কঠিন হলেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থবহ বলে কোয়ারান্টিনের সময় কমানো উচিত৷”
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Endig
সময় নির্ধারণ হবে রিপোর্টের ভিত্তিতে
জার্মান চ্যান্সেলার ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক মূখপাত্র কারিন মাগ বলেছেন, “জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে যার লক্ষ্য বর্তমান কোয়ারান্টিন পরিস্থির মূল্যায়ণ এবং ইউরোপীয় সহযোগী দেশগুলোর সহযোগিতায় করা রিপোর্টের ভিত্তিতে কোয়ারেন্টিনের সময় নির্ধারণ করা হবে৷”
ছবি: picture-alliance/Winfried Rothermel
জনসাধারণের গ্রহণযোগ্যতা পাবে
মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক মূখপাত্র ক্রিস্টিনে আশেনব্যার্গ-ডুগনুস কোয়ারান্টিনের সময়কালকাল পাঁচদিন করার পক্ষে মত জানিয়ে বলেন, “পদক্ষেপটি জনসাধারণের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং পাশাপাশি তিনি করোনা ভাইরাস তত্ত্বের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধাচারণ করেন৷”
ছবি: Getty Images/O. Messinger
প্রস্তাব ভালো, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যস্ততা!
জার্মানির দক্ষিণপন্থী দল এএফডি-এর স্বাস্থ্য বিষয়ক মূখপাত্র ডেটলেভ শ্পাঙ্গেনব্যার্গ জানান, ভাইরোলজিস্ট ড্রসটেনের পাঁচদিন কোয়ারান্টিনের প্রস্তাবের প্রতি তাঁর দলের সমর্থন রয়েছে ঠিকই তবে বর্তমান পদক্ষেপগুলি অতি দ্রুত গ্রহণ করা হয়েছে, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে তিনি মনে করেন৷