এ বার হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফের নামও জানিয়ে দিলেন বাইডেন। তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী রন ক্লেইন এই পদ পাবেন।
ছবি: Jacquelyn Martin/AP Photo/picture alliance
বিজ্ঞাপন
হোয়াইট হাউস না ছাড়ার ব্যাপারে ডনাল্ড ট্রাম্প এখনো অনড়। এতকিছুর পরেও তাঁর সহযোগীরা বলছেন, ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট থেকে যাবেন. কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট বাইডেন তাঁর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তিনি করোনা টাস্ক ফোর্স গঠন করে ফেলেছেন। এ বার হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফের নামও জানিয়ে দিলেন।
১৯৮০ সাল থেকে বাইডেনের সঙ্গে আছেন ক্লেইন। প্রথমে সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিটিতে, তারপর ভাইস প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ হিসাবে। বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট, তখনো তিনি হোয়াইট হাউসে উচ্চ পদে ছিলেন। আল গোর যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট তখন তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ ছিলেন।
হোয়াইট হাউসে চিফ অফ স্টাফের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি প্রেসিডেন্টের প্রতিদিনের কর্মসূচি ঠিক করেন। তাঁকে বলা হয় গেটকিপার। প্রেসিডেন্টের কাছে পৌঁছাতে গেলে আগে তাঁর অনুমোদন জরুরি। তাঁর নিয়োগ প্রায়শই রাজনৈতিকভাবে হয় এবং তার জন্য সেনেটের অনুমোদন লাগে না।
মার্কিন নির্বাচন: যে বিশ্বনেতারা এখনো বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানাননি
ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্রদের অনেকেই দ্রুত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ তবে, এখনো কিছু রাষ্ট্রনেতা আছেন যারা এই বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন৷
ছবি: Alexei Druzhinin/dpa/picture-alliance
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
বেইজিং জানিয়েছে যে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া অবধি কাউকে অভিনন্দন জানাবে না দেশটি৷ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি বাইডেন নির্বাচনে বিজয় ঘোষণা করেছেন৷ আমরা যেটা বুঝতে পারছি তাহচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল দেশটির আইন এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণের পর ঘোষণা করা হবে৷’’
ছবি: Ju Peng/Xinhua/picture-alliance
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন
পুটিনের মুখপাত্র দিমিত্রি প্যাস্কভ জানিয়েছেন যে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট আইনি জটিলতার নিরসন না হওয়া পর্যন্ত বাইডেনের জয় নিয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে ক্রিমলিন৷ তিনি বলেন, ‘‘সেখানে নির্দিষ্ট কিছু আইনি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে যার কথা বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে জানিয়েছেন৷ ফলে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন, তাই আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগ অবধি অপেক্ষা করাটা যৌক্তিক মনে করছি আমরা৷’’
ছবি: Alexei Druzhinin/dpa/picture-alliance
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো
ডানপন্থি এই প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বের প্রথম নেতা হবেন যে ডনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাবে৷ তবে, বাইডেনের বিষয়ে চুপ রয়েছেন বলসোনারো৷ দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যামিল্টন ম্যুরাও এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমি মনে করি ভোট জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হওয়া অবধি অপেক্ষা করছেন প্রেসিডেন্ট৷’’ ‘‘সময়মত’’ বাইডেনকে অভিনন্দন জানানো হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
ছবি: Marcos Corrêa/Presidência da República do Brasil
লোপেজ ওব্রাডোর জানিয়েছেন যে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট আইনি জটিলতার নিরসন না হওয়া অবধি বিজয়ীকে অভিনন্দন না জানাতে তার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷ তিনি উল্টো প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কীভাবে একজন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ঠিক করবে (মার্কিন নির্বাচনে) কোন প্রার্থী জয়লাভ করেছে?’’ তবে, তিনি তার বক্তব্যে বাইডেনকে ‘‘সম্ভাব্য বিজয়ী’’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷
ছবি: Reuters/H. Romero
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন
মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি কিম৷ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও এই বিষয়ে চুপ রয়েছে৷ ২০১৬ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার দু’দিন পর অবধিও চুপ ছিল পিয়ংইয়ং৷ অতীতে অবশ্য বাইডেনকে কিম ‘স্বল্প বুদ্ধির বোকা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন৷ জবাবে বাইডেন তাকে ‘গুণ্ডা’ বলেছিলেন৷
ছবি: Reuters/KCNA
স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জেনেজ জানিয়া
উগ্র ডানপন্থী ও অভিবাসনের বিরোধী হিসেবে পরিচিত স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জেনেজ জানিয়া মার্কিন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর দ্রুতই ডনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন৷ তবে ভোট গণনা প্রায় শেষ হওয়ার পর যখন বাইডেনকে বিজয়ী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, তখন চুপ হয়ে গেছেন তিনি৷ জানিয়া শুধু এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আশা করছে তার দেশ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Leskovsek
6 ছবি1 | 6
ক্লেইনের বিপুল প্রশংসা করে বাইডেন বলেছেন, ''ক্লেইনের অভিজ্ঞতা অপরিসীম। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ হতে গেলে এটাই দরকার। আমরা একটা সংকট সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা আপাতত সব চেয়ে বড় কাজ।''
ক্লেইন জানিয়েছেন, ''প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট এই আস্থা রেখেছেন জেনে গর্বিত। হোয়াইট হাউসে তাঁকে সাহায্য করার জন্য মুখিয়ে আছি। প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট-এর একটা উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা আছে। তাঁরা পরিবর্তন আনতে চান। ক্ষত সারিয়ে দেশকে আবার ঐক্যবদ্ধ করতে চান।''
২০০০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে একটি সিনেমা হয়েছিল। তার নাম ছিল 'রিকাউন্ট'। সেখানেও তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ ক্লেইনের ভূমিকা ছিল। সেখানে অবশ্য কেভিন স্পেসি তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন।