হ্যাংওভারকে অসুস্থতা বলে রায় দিয়েছে জার্মানির একটি আদালত৷ সেই সঙ্গে হ্যাংওভার দূর করার ক্ষমতার কথা বলে বাজারে আনা খাদ্য বা পানীয়কেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
অ্যালকোহল পানের পর হ্যাংওভার হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়৷ অনেকের হয়তো সেটি অল্পতেই কেটে যায়, অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় লাগে৷ এই ধরনের হ্যাংওভার কাটাতেই বাজারে পানীয় (ড্রিংকস পাউডার ) ছেড়েছিল জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান, যেটি ক্লান্তি, বমি ভাব, আর মাথাব্যথা দূর করতে পারে বলেও দাবি করেছিল তারা৷ এ নিয়েই মামলা করা হয়েছিল আদালতে৷
ফ্রাংকফুর্টের বিচারকরা রায় দিয়েছেন বাদীর পক্ষে৷ অ্যালকোহল পান পরবর্তী প্রভাব কাটানোর নামে তৈরি এমন খাদ্য বা পানীয়কে অবৈধ ঘোষণা করেছে আদালত৷ রায়ে বলা হয়েছে, হ্যাংওভার এক ধরনের অসুস্থতা আর কোনো ধরনের অসুস্থতা খাদ্য বা পানীয় দিয়ে দূর করা যাবে এমন প্রচার চালানো যাবে না৷
‘‘মানুষের অসুস্থতা প্রতিরোধ, চিকিৎসা বা নিরাময় করা যায়, খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে এমন কোনো গুণ আরোপ করার তথ্য দেয়া যাবে না,’’ বলা হয়েছে রায়ে৷
কেন হ্যাংওভারকে অসুস্থতা বলা হচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে আদালত৷ রায়ে বলা হয়েছে, শরীরের স্বাভাবিক অবস্থা বা কর্মকাণ্ডের ছোটখাট অথবা সাময়িক কোনো পরিবর্তন ঘটলেও সেটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসুস্থতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷
জার্মানির বিখ্যাত বিয়ার উৎসব ‘অক্টোবরফেস্ট’ শুরুর কয়েকদিন আগেই রায়টি দেয়া হয়েছে৷ ২২ সেপ্টেম্বর মিউনিখে এই উৎসব শুরু হয়েছে৷
এফএস/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)
জার্মানরা যেভাবে বিয়ার পান করেন
জার্মানির পাঁচশ বছরের পুরনো ‘বিয়ার পিউরিটি আইন’ অনুযায়ী, বিয়ারে শুধুমাত্র হপস, বার্লি, খামির এবং পানি ব্যবহার করা যাবে৷ চলুন দেখে নেই ইউরোপের এই দেশটির বিয়ার সংস্কৃতি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পছন্দের শেষ নেই
জার্মানি বিয়ারের দেশ৷ মাত্র চারটি উপাদান ব্যবহার করে দেশটির বিয়ার উৎপাদকরা ৫,৫০০’রও বেশি ব্রান্ডের বিয়ার তৈরি করেছেন৷ আর এই সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, কেননা প্রতি সপ্তাহে তালিকায় নতুন নতুন বিয়ার ব্র্যান্ড যোগ হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Kumm
আপনি সবসময়ই বিয়ার পান করতে পারেন
মদ্যপানের যখন প্রশ্ন আসে, তখন তা অফিস পার্টি, সিনেমার বিরতি কিংবা বার্লিনের গ্যোর্লিৎসার পার্ক – যেখানেই হোক না কেন, বিয়ার সবসময়ই প্রথম পছন্দ জার্মানদের৷ এখানে প্রকাশ্যে বৈধভাবে বিয়ার পান করা যায়৷ দীর্ঘ একটা সময়ে বিয়ারকে পুরুষের পানীয় বলে মনে করা হলেও, ক্রমশ এটা ১৯ থেকে ২৪ বছর বয়সি তরুণ-তরুণীদের প্রিয় পানীয়তে পরিণত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hein
ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অপরিহার্য
জার্মানির ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলার এক অন্যতম অনুষঙ্গ বিয়ার৷ এই পানীয় ছাড়া উৎসব ঠিক জমে না৷ কিছু অঞ্চলের আঞ্চলিক বিয়ার প্রস্তুতকারীরারা তাদের অঞ্চলের উৎসবকে কেন্দ্র করেও বিয়ার প্রস্তুত করেন৷ এই যেমন মিউনিখের অক্টোবরফেস্ট-কে কেন্দ্র করে যে বিয়ার তৈরি হয়, তা শুধুমাত্র এক লিটারের গ্লাসে বিক্রি হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Hörhager
ফুটবল এবং বিয়ার – এক চমৎকার জুটি
ফুটবলও জার্মানদের কাছে এক ধরনের উৎসব৷ আর সেই উৎসব পূর্ণতা পায় যখন বিয়ার হাতে দর্শকরা তা উপভোগ করেন৷ তাই জার্মানির যে কোনো ফুটবল স্টেডিয়ামে বিয়ার ছাড়া দর্শক খুঁজে পাওয়া ভার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
বিয়ার কেনা যায় সবসময়
জার্মানির বড় শহরগুলোতে রাস্তার পাশের কিছু দোকান সারারাত খোলা থাকে৷ সেসব দোকানে পত্রিকা, তামাক, চকোলেট বা মিষ্টির পাশাপাশি বিয়ারও বিক্রি করা হয়৷ ১৫০ বছর আগে এ সব দোকান, যা কিয়স্ক নামে পরিচিত, খোলা হয়েছিল শুধুমাত্র পানি বিক্রি করতে৷ এখন অবশ্য সেগুলো আরো অনেক কাজে লাগছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kusch
গ্রীষ্ম উপভোগ করতে বিয়ার গার্ডেন
জার্মান বিয়ার সংস্কৃতির সঙ্গে বিয়ার গার্ডেনের সংযোগ বহুদিনের৷ আজকাল এ ধরনের গার্ডেন জার্মানির প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়৷ তবে এর শুরুটা হয়েছিল বাভারিয়ায়, ঊনিশ শতকের শুরুর দিকে৷ বিশেষ করে গরমের দিনগুলোতে বিয়ার পান করতে অনেকেই মিউনিখের বিয়ার গার্ডেনে হাজির হন৷
ছবি: Deutscher Brauer-Bund e.V.
বাভারিয়ায় বিয়ার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ
বাভারিয়া, যেখানে ১৫১৬ সালে বিয়ার পিউরিটি আইনটি চালু হয়েছিল, বিয়ার মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে মিশে গেছে৷ বর্তমানে সেখানে ৬২৬টি বিয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা জার্মানির অন্য যে কোনো রাজ্যের চেয়ে বেশি৷