হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে জিএসএম নেটওয়ার্ক
১০ আগস্ট ২০১০আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই গলদ নিয়ে কোনো ভাবনাই নেই অপারেটরদের৷ হ্যাকারদের সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷
মাত্র ১১শ ইউরো, মোবাইল ফোনের একটি টাওয়ার বসাতে এখন খরচ এমনই৷ এক সময় অবশ্য তা বেশি ছিল৷ তবে তা অনেক কমে এসেছে৷ এই ১১শ ইউরো খরচ করেই হ্যাকাররা জিএসএম নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়তে পারবেন বলে জানালেন ক্রিস পাগেট৷ অ্যামেরিকার এই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ গত শনিবার লাভ ভেগাসে হ্যাকার সম্মেলনে তুলে ধরেন এ সংক্রান্ত তথ্যাদি৷
ডেফকন সম্মেলন হ্যাকারদের সবচেয়ে বড় সম্মেলন৷ প্রতিবছরই বিশ্বের নানা স্থান থেকে লাস ভেগাসে জড়ো হন তারা৷ সেখানে আলোচনায় অংশ নেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, আইনজ্ঞরাও৷ ১৯৯৩ সালে শুরু হয়েছে এই আসর৷ ২০০৮ সালের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৮ হাজার৷
কী করে একটি নকল টাওয়ার বসিয়ে মোবাইল ফোনে হ্যাকিং সম্ভব, সম্মেলনে তাই তুলে ধরেন পাগেট৷ তিনি বলেন, সেকেন্ড জেনারেশনের জিএসএম সিস্টেমে অনায়াসেই হ্যাকিং সম্ভব৷ তা করতে খরচও খুব বেশি নয়৷ অর্থাৎ বিশ্বের জিএসএম নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা আছে ঝুঁকির মধ্যে৷ পাগেট বলেন, একটি নকল টাওয়ার বসিয়ে জিএসএম নেটওয়ার্কে হ্যাকিং খুব একটা কঠিন নয়৷ কোনো মোবাইল থেকে কল করতে চাইলে নকল টাওয়ারের মাধ্যমে তা ধরে নিতে হবে৷ তখন গ্রাহক এবং তার অন্যপাশের সব কথাবার্তা শোনা যাবে৷ পাগেট বলছেন, এই ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থেকেও ওয়ার্ল্ড জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের কোনো মাথাব্যথাই দেখা যাচ্ছে না৷
অবশ্য পাগেটের কথা শোনার পর জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, কিছুটা ঝুঁকির মধ্যে আছে, সেটা তারাও জানে৷ তবে নকল টাওয়ার বসিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বের বাইরে গ্রাহকদের ফোনকল টেপ করা যাবে না বলেই দাবি তাদের৷ সেইসঙ্গে তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই গলদ কাটাতেও সচেষ্ট তারা৷
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিএসএম প্রযুক্তি অনেক পুরনো হয়ে গেছে৷ মোবাইল ফোনের নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টস জেনাকিস ডয়চে ভেলে-কে বলেন, ‘‘আধুনিকায়ন না করেই পুরনো প্রযুক্তি ধরে চলছে জিএসএম অপারেটররা৷ ফলে তারা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে৷'' তবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই সমস্যা কাটানো সম্ভব বলে মনে করেন জেনাকিস৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার