টাইগাররা ভালো খেললে সমর্থকরা সবাই প্রশংসায় মেতে উঠি৷ আর খারাপ করলে দোষীদের চৌদ্দপুরুষ ধরে টান দেই৷ একই রোগে আসক্ত ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরাও৷
বিজ্ঞাপন
সমস্যাটা সেখানেই৷ সমর্থকরা দোষীদের দায়ী করে হারের সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করতেই পারেন৷ কিন্তু ক্রিকেট বোর্ডের কর্তা আর সংশ্লিষ্টদের তো তা মানায় না৷ তাঁদের কাজ হচ্ছে, দোষ খোঁজার পাশাপাশি তার সমাধানও খুঁজে বের করা৷ দল জিতলে বোর্ড প্রেসিডেন্টসহ অন্য কর্মকর্তাদের দল বাছাই থেকে অন্য সব কিছুর জন্য কৃতিত্ব নিতে দেখা যায়৷ কিন্তু হারলেই যেন দলটিকে কেউ চিনতে পারেন না৷ তখন তারা প্রশ্ন তোলেন দলে ও কেন সে নেই কেন অথবা কেন দলে পেসার আছে বা নাই ইত্যাদি৷
ক্রিকেট বোর্ডের কাজ বা দায়িত্ব বা কর্তব্য নির্দিষ্ট করা আছে৷ কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই সে কাজে মনোযোগ দিতে দেখা যায় না৷ তাইতো ভালো পেসার তৈরি করা যাচ্ছে না৷ আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্টে একজন পেসারও না নিয়ে সাকিব বোর্ড কর্তাদের সেই অভাবটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, টেস্টে বাংলাদেশের পেসারদের অতীত রেকর্ডের কারণে তাদের নেয়া হয়নি৷
সাকিবের এই বক্তব্য ছাপার পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলো জানিয়েছে, টেস্টে বাংলাদেশের পেসারদের ইকোনমি বাকি ১১টি দলের চেয়ে খারাপ৷ এছাড়া গত তিন বছরে ঘরের মাঠে স্পিনাররা ২০০ উইকেটের মধ্যে ১৮০টি পেয়েছেন৷ আর পেসাররা পেয়েছেন মাত্র ১৫টি৷
পেসারদের এই যখন অবস্থা তখন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কেন একজন পেসার নামানো হলো না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন৷ অথচ কেউ তাঁকে প্রশ্ন করছেন না যে, তিনি সাত বছর ধরে বিসিবির প্রধান৷ এই সময়ে দলে ঢোকার মতো একজন পেসারও কেন উঠে আসল না?'
টেস্ট দলে সৌম্য, লিটন আর সাব্বিরের উপস্থিতিতেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি পাপন সাহেব৷ তাঁর মতে, তারা নাকি টেস্ট ক্রিকেটার নন৷ যদি তা-ই হয়, তাহলে এতদিনেও পর্যাপ্ত টেস্ট প্লেয়ার উঠে না আসার দায়ও তো আপনার৷
সুতরাং আর সময় নষ্ট না করে নিজ কাজে মনোযোগ দিন৷
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ কী?
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ শুরু হচ্ছে৷ এর মধ্য দিয়েই শুরু হচ্ছে দুই বছরব্যাপী বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ৷ ছবিঘরে থাকছে নতুন এই প্রতিযোগিতার বিস্তারিত৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Copley
টেস্টের সেরা বের করা
ওডিআই ও টি-টোয়েন্টির মতো এবার টেস্টেরও বিশ্বসেরা বের করতে চায় আইসিসি৷ এছাড়া দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজগুলো আরও অর্থবহ করতে দুই বছর মেয়াদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ দিয়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে৷ ফাইনাল হবে ২০২১ সালের জুনে, লর্ডসে৷
ছবি: Imago Images
যারা খেলছে
নয়টি দেশ এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে৷ বাংলাদেশও আছে এর মধ্যে৷ বাকিরা হলো অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷
ছবি: bdnews24.com/M. Mostafigur Rahman
কয়টি খেলা?
হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ফরম্যাটে প্রতিটি দেশ তিনটি করে মোট ছয়টি সিরিজ খেলবে৷ একেকটি সিরিজে অন্তত দুটি ম্যাচ থাকবে৷ এছাড়া তিন, চার ও পাঁচ ম্যাচের সিরিজও রয়েছে৷
ছবি: Reuters/D. Gray
সবদলের ম্যাচ সংখ্যা সমান নয়
প্রতিযোগিতায় একেক দেশের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা একেক রকম হবে৷ যেমন দুই বছরে ইংল্যান্ড খেলবে সর্বোচ্চ ২২টি টেস্ট৷ আর সবচেয়ে কম খেলবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা, ১৩টি করে৷
ছবি: bdnews24.com/M. Mostafigur Rahman
পয়েন্ট সিস্টেম
একেকটি সিরিজে দুটি দল ১২০ পয়েন্টের জন্য লড়বে৷ সেক্ষেত্রে দুই টেস্টের সিরিজ হলে একটি ম্যাচ জিতলে ৬০ পয়েন্ট পাওয়া যাবে৷ সিরিজ তিন টেস্টের হলে ম্যাচপ্রতি পয়েন্ট হবে ৪০ করে৷ চার টেস্টেট সিরিজে ম্যাচপ্রতি পয়েন্ট ৩০ আর পাঁচ টেস্টের সিরিজে এক ম্যাচে জয়ের জন্য ২৪ পয়েন্ট পাওয়া যাবে৷ কোনো টেস্ট টাই হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে৷ আর ড্র হলে প্রতিটি দল এক-তৃতীয়াংশ পয়েন্ট পাবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
ফাইনাল
লিগ ভিত্তিতে খেলা শেষে যে দুই দলের পয়েন্ট সর্বোচ্চ থাকবে তারা লর্ডসে ফাইনাল খেলবে৷ ফাইনাল টাই কিংবা ড্র হলে দুই দলই যৌথ চ্যাম্পিয়ন হবে৷
ছবি: AP
বাংলাদেশের খেলা
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট নভেম্বরে ভারতের বিরুদ্ধে৷ ভারত সফরে দুটি টেস্ট খেলবে টাইগাররা৷ এরপর বাংলাদেশ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি ও ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট খেলবে৷ সেগুলো কোথায় হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি৷
ছবি: bdnews24.com/M. Mostafigur Rahman
টাইগারদের আরও খেলা
২০২০ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুটি ও আগস্টে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ৷ এরপর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে তিনটি টেস্ট খেলার কথা টাইগারদের৷ এই প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড ও সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কোনো টেস্ট খেলবে না বাংলাদেশ৷ এমনিভাবে প্রতিটি দলই মোট ছয়টি দেশের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলবে৷