1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১০ ই-কমার্স বন্ধের উপক্রম, গ্রাহকদের অর্থ ফেরত নিয়ে শঙ্কা

১৮ জুলাই ২০২১

বাংলাদেশে ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একের পর এক লেনেদেন স্থগিত করছে বিভিন্ন সহযোগী কোম্পানিগুলো৷ প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে তদন্তে করছে সিআইডি থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ৷ হতে পারে মামলাও৷ 

Symbolbild Online-Handel
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner

সবশেষ মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ আলোচিত ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ করে দিয়েছে ‘গ্রাহকদের স্বার্থে'৷ তাদের মধ্যে আছে ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ধামাকা শপিং, ই অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপিং, নিডস, কিউকুম, আলাদীনের প্রদীপ, আদিয়ান মার্ট ও বুমবুম৷

ব্র্যাক ব্যাংকসহ আরো কয়েকটি ব্যাংক গত জুনে এই ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় তাদের ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (৪৫দিন) পণ্য সরবরাহের অর্ডার নেয় প্রায় অধের্ক দামে৷ যা উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম৷ অর্ডার নেওয়ার সময়ই পুরো দাম তারা নিয়ে নেয়৷ কিন্তু নির্ধারিত সময়ে খুব সামান্য গ্রাহককেই পণ্য সরবরাহ করে৷ বড় অংশকে মাসের পর মাস অপেক্ষায় রাখে৷ শেষ পর্যন্ত অনেকেই পণ্যও পান না, টাকাও ফেরত পান না৷ এনিয়ে ২০ হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা আছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে৷

ফাহিম মাশরুর

This browser does not support the audio element.

এদিকে যাদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে এইসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের দেয় সেইসব প্রতিষ্ঠানের পাওনা তারা ঠিকমত শোধ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এ কারনে রঙ, কে-ক্রাফট, ব্র্যান্ড জেন্টল পার্ক, ট্রেন্ডস, আউটফিটস ও আর্টিজানসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ভাউচারে পণ্য দিচ্ছে না গ্রাহকদের৷ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক বৈঠকে সার্বিক অভিযোগ নিয়ে ইভ্যালিসহ ৬টি প্রতিষ্ঠানকে তলবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

তিনটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ, প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ৫০০ কোটি টাকার মতো পণ্যের আগাম দাম নিয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে৷

ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক প্রতারণা ও অর্থ পাচার নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ৷ সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি ৷ মানিলন্ডারিং, গ্রাহক প্রতারণা সবই দেখা হচ্ছে৷ আমরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি৷ আপনাদের সামনে দ্রুতই তা প্রকাশ করব৷’’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও ভাবছেন তারা৷

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে বলা হয়েছে ইভ্যালির সম্পদের চেয়ে দায় ছয়গুণ বেশি৷ তাদের সম্পদের পরিমান ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা, কিন্তু দেনা ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা৷ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন গ্রাহকদের ৩৫০ কোটি টাকা ইভ্যালি কী করেছে তা জানা যাচ্ছে না৷ সিআইডি বলছে ওই টাকা তারা পচারের আশঙ্কা করছে৷

ইভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদকও৷ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামিমা নাসরিন ও এমডি মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে৷

এদিকে গত তিনদিন ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিস বন্ধ থাকায় গ্রাহকদের মধ্যে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷

গ্রাহকরা পণ্য না পেয়ে অফিসে গিয়ে নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া কাউকে পাচ্ছেন না৷ কাস্টমার কেয়ারে ফোন করেও কেনো সাড়া মিলছে না বলে অভিযোগ৷

গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তের পর ইকমার্স নিয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে৷ তারমধ্যে অন্যতম হলো কোনো পণ্যের দাম আগে নেয়া যাবে না৷ পণ্য সরবরাহের সময় দাম নিতে হবে৷ আর ব্যাংকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাত দিনে সরবরাহের শর্তে আগাম টাকা নেয়া যাবে৷ কিন্তু সেই টাকা ইকমার্স প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে যাবে না৷ ব্যাংকের কাছে থাকবে৷ পণ্য সরবরাহের পর ব্যাংক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অর্থ ছাড় করবে৷

কিন্তু অভিযোগ আছে এরপরও বিভিন্ন ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ওই আদেশ এড়িয়ে কৌশলে সরাসরি নগদ অর্থে নানা ধরনের অফার করছে৷

বাংলাদেশে ই-কমার্স পথিকৃতদের একজন বিডিজবস-এর প্রধান ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানগুলো ইকমার্সের নামে বিনিয়োগ ব্যবসা শুরু করেছিল৷ কোন একটি নির্দিষ্ট পণ্যের কথা বলে টাকা নেওয়া হতো৷ ...ব্যাংক যেভাবে টাকা নেয় সেভাবেই তারা প্রায় এক বছর টাকাটা ধরে রাখে, প্রচলিত আইনে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানই শুধু এই কাজ টাকরতে পারে৷ অন্য কেউ যদি করে থাকে সেটা বেআইনী কাজ৷’’

আবদুল ওয়াহেদ

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ১০০ জনের মধ্যে হয়ত ১০ জন টাকা ফেরত পাচ্ছে, ৪০ জনকে চেক দেওয়া হচ্ছে৷ বাকিরা আসলে আর কোন টাকা ফেরত পাচ্ছে না৷ এই টাকাগুলো এরইমধ্যে কোম্পানিগুলো খরচ করে ফেলেছে বা সরিয়ে ফেলেছে৷ সেক্ষেত্রে গ্রাহকরা এইসব কোম্পানি থেকে অর্থ  ফেরত পাবেন কীনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ফাহিম মাশরুর৷ এই বিষয়ে সরকার ও আদালতে নির্দেশনা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি৷

বাংলাদেশ ই-কমার্স অ্যাসেসিয়েশনের মোট সদস্য এক হাজার ৬০০৷ প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল জানান, ‘‘আমরা গবেষণা করে দেখছি যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে কথা উঠেছে তাদের বিজনেস মডেল গ্রহণযোগ্য কী না৷ না হলে তাদের বন্ধ করতে বলব৷ আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের শোকজ করে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে৷ আমারও ইভ্যালিকে শোকজ করেছি৷”

কিন্তু যদি গ্রাহকরা টাকা ফেরত না পান তার কী প্রতিকার হবে তা নিয়ে কোনো কথা হচ্ছে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ