সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ ঘন্টায় ১০ শিশুর মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় চলছে৷ ওই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ মারা গেছেন ৩২ জন৷ মারা যাওয়া শিশুদের স্বজনরা মনে করেন, চিকিত্সায় অবহেলার কারণেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার রাত ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডসহ তিন ওয়ার্ডে ১০ শিশু মারা যায়৷ তাদের মধ্যে পাঁচ নবজাতক ৷ সোমবার তাদের জন্ম হয়েছিল৷ বাকি পাঁচ শিশুর মধ্যে সর্বোচ্চ দেড় বছর বয়সি শিশু রয়েছে৷
মারা যাওয়া শিশুরা হলো: রাজশাহীর শেখঘাট এলাকার নিলুফার, শহরতলীর শাহ পরানের আসমা এবং একই এলাকার সন্ধ্যা রানীর নবজাতক; হবিগঞ্জের ইয়াসমিন (বয়স ৩ দিন) ; সিলেটের জকিগঞ্জের দশগ্রামের আকাশ (৭ দিন); সুনামগঞ্জ সদরের তাজরিয়া ও মেহেদি (আড়াই মাস), বিশ্বম্ভরপুরের নাদিয়া (৬ মাস), ছাতকের শাপরাজ (দেড় বছর) এবং সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সায়মা (দেড় বছর)৷
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুস সালামের তথ্যমতে, ২৪ ঘন্টায় শিশুসহ ৩২ জন মারা গেছে৷ তাঁর মতে, প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতালে ১৪ জন মারা যায়৷ তবে ১০ ঘন্টায় ১০ শিশুর মৃত্যু অস্বাভাবিক বলে জানান তিনি৷
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৫৬টি শয্যা আছে, কিন্তু ভর্তি আছে ১৬২ শিশু৷ নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় শিশুদের সেখানে ভর্তি করা হয়৷
অভিভাবকদের অভিযোগ, চিকিত্সকদের অবহেলার কারণেই এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ সিলেট নগরের শেখঘাট এলাকার বাসিন্দা অটোরিকশাচালক আবুল কালাম ও নিলুফা আক্তার দম্পতির প্রথম সন্তান মারা গেছে৷ রবিবার নিলুফা এই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়৷ সোমবার শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে নেয়া হয়৷ মঙ্গলবার সকালে শিশুটি মারা যায়৷ প্রথম সন্তানের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন নিলুফা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘কোনো রোগে না, অবহেলায় আমার বাচ্চা মারা গেছে৷''
তবে ডা. আব্দুস সালাম দাবি করেন, শিশুরা বিভিন্ন রোগে মারা গেছেন৷ তিনি আরো জানান, '‘চিকিত্সকদের অবহেলার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে৷ শিশু মুত্যুর এ ঘটনায় হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে৷'’
মায়ের দুধের নানা গুণ
১লা আগস্ট ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃদুগ্ধ পান দিবস৷ এই দিবস পালন করা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর থেকেই৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়ের দুধ শিশুদের জন্য ম্যাজিক পানীয়৷ বিস্তারিত জানতে এই ছবিঘরটি দেখুন৷
শিশু পেটে আসার পর থেকেই মায়ের বুকে দুধ তৈরি হওয়া শুরু হয়৷ এর জন্য সাহায্য করে প্রোজেস্টেরন এবং প্রোলাকটিন নামের দুটি হরমোন৷ এই দুধ শিশুকে জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পান করানো যায়৷ তবে শিশু কতটা দুধ পাবে তা নির্ভর করে প্রথম স্তন্যপানের ওপর৷ অর্থাৎ শরীরের প্রোলাকটিন হরমনই মায়ের নার্ভ সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেভাবেই প্রয়োজনীয় দুগ্ধ উৎপাদন করে৷
ছবি: Svetlana Fedoseeva - Fotolia.com
শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভালো
মায়ের দুধ শিশুদের শরীরে ম্যাজিকের মতো কাজ করে৷ শিশুর জন্মের প্রথম সপ্তাহে মায়ের দুধ পান করলে তা বাচ্চাকে অন্ত্র সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং হজম করতে ও দুধ পান করার সময় পেটে বাতাস জমা থেকে রেহাই পেতেও সহায়তা করে৷ মায়ের দুধ শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যালার্জির বিরুদ্ধে কাজ করে৷ তাছাড়া মায়ের দুধ পান করার কারণে শিশুর মুখের তালু এবং মাড়ি শক্ত হয়৷
ছবি: Fotolia/Marcito
মায়ের দুধে কী আছে?
মায়ের দুধে কী আছে তার হিসেব অনেক লম্বা৷ এতে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন, ফ্যাট, পানি ইত্যাদি৷ মায়ের দুধে বিশেষ এক রকম ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা শিশুর চোখের জ্যোতি বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে৷
ছবি: Getty Images
শালদুধ
সদ্য প্রসূতির স্তন থেকে বের হওয়া প্রথম দুধ৷ হলদেটে রং-এর এই দুধ পরিমাণে কম হলেও এতে থাকে শ্বেতকণিকা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ শালদুধ শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারি, যা শিশুর জীবনের প্রথম টিকা হিসাবেও কাজ করে৷ শালদুধে থাকে আমিষ ও প্রচুর ভিটামিন-এ৷ শালদুধ শিশুর পেট পরিষ্কার করে এবং শিশুর জন্ডিস হবার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়৷
ছবি: imago/Xinhua
মায়ের দুধই কি যথেষ্ট?
নবজাতকের মা এক লিটারের মতো দুধ উৎপাদন করে থাকেন৷ শিশুরা সাধারণত প্রতিবার ২০০ থেকে ২২৫ মিলিগ্রাম দুধ পান করে৷ তবে একজন শিশুর যতটা দুধ প্রয়োজন শিশু চাইলে ঠিক ততটুকুই পায়৷
ছবি: Royal Holloway, University of London
কত বয়স পর্যন্ত স্তন্যপান করা উচিত
মায়ের দুধ শিশুদের আদর্শ পুষ্টিকর খাবার৷ তবে এ দুধ কতদিন শিশু পান করবে – সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জার্মানির জাতীয় মাতৃদুগ্ধ পান কমিশনের পরামর্শ: কমপক্ষে ছয়মাস মায়ের দুধ পান করানো উচিত৷ তবে চার মাসের পর থেকে নবজাতকদের মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবারও দেয়া যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দেশ ভেদে রয়েছে পার্থক্য
মায়ের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে একেক দেশে একেক রীতি প্রচলিত৷ যেমন মধ্য আফিকার ‘বফি’-তে সাধারণত সাড়ে চার বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করানো হয় বাচ্চাদের৷ অবাক করার মতো হলেও অনেক মা ১৬,০০০ লিটার দুধ উৎপাদন করে থাকেন৷ তবে সারা বিশ্বে গড়ে মায়েরা ৩০ মাস পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ পান করিয়ে থাকেন৷
ছবি: imago/blickwinkel
অন্য নারীর নয়, মায়ের দুধ চাই
বহুদিন আগে কিন্তু শিশুদের অন্য নারীর বুকের দুধ পান করানো হতো৷ পরবর্তীতে ১৮ শতক থেকে একটি প্রচারাভিযান চালানো হয়, যেখানে বলা হয় যে, মা-রাই যেন শিশুকে নিজের বুকের দুধ পান করান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রকাশ্যে দুধ পান করানো
মা তাঁর শিশুকে প্রকাশ্যে দুধ পান করাচ্ছেন – এটা কিছু দেশের মানুষের কাছে তেমন পছন্দ নয়৷ তাই সেসব দেশে মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছে এমন ছবি কেউ ফেসবুকে দিলে সেগুলো ফেসবুক থেকে মুছে ফেলা হয়৷
ছবি: Getty Images
শুধু শিশু নয়, মায়েরও উপকার হয়
যে মা তাঁর শিশুকে বুকের দুধ পান করান সেই মায়ের জরায়ু, স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়৷ তাছাড়া দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে সন্তান ও মায়ের মধ্যে তৈরি হয় এক নিবিড় সম্পর্ক৷
এদিকে ঢাকায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এ জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ একদিনে এতগুলো শিশুর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হবে৷ চিকিত্সকদের কোনো অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক অবশ্য দাবি করেন, ‘‘পাঁচ নবজাতক মারা গেছে জন্মকালীন শ্বাসরোধে৷ বাকি পাঁচ শিশু ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়াসহ অন্য সমস্যায় মারা গেছে৷ আর পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের মৃত্যু সম্পর্কে মহাপরিচালক বলেন, চোখের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক ও মারামারির ঘটনায় আহত পাঁচজন মারা গেছেন৷'
বাংলাদেশের চিকিত্সা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে নানা অভিযোগ আছে৷ হাসপাতালে সুযোগ সুবিধা না থাকা ছাড়াও চিকিত্সকদের হাসপাতাল ফেলে প্রাইভেট প্রাকটিস করা এর মধ্যে অন্যতম৷
বাংলাদেশে প্রতি দুই হাজার ৬৫৯ জনের বিপরীতে ডাক্তার মাত্র একজন৷ আর পাঁচ হাজার ২৩৫ জনের জন্য নার্সও মাত্র একজন৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে দেশে মোট সরকারি হাসপাতাল আছে ৫৭০টি৷ এর মধ্যে উপজেলা ও তার নিচের পর্যায়ে রয়েছে ৪৫৯টি৷ জেলা ও বিভাগ এবং বিশেষায়িত হাসপাতাল মিলে রয়েছে ১১৯টি৷
প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে যথাক্রমে দুই হাজার ২৭১ ও চার হাজার ৭৩৫টি৷ সারা দেশে মোট প্রাইভেট চিকিত্সকের সংখ্যা সাড়ে চার লাখ৷ এর মধ্যে ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিত্সক ও ডিগ্রিবিহীন চিকিত্সকের অনুপাত ১: ১২৷
এর বাইরে সারা দেশে ১৭ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আছে৷
শৈশবেই উচ্চ রক্তচাপ; অবহেলা নয়
উচ্চ রক্তচাপ শুধু বয়স্কদের অসুখ নয়, শিশু-কিশোরদেরও হয়ে থাকে৷ তাই শিশুদের উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা না করে গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ কারণ তা না হলে তার ফল হতে পারে মারাত্মক৷
ছবি: Fotolia/pete pahham
শিশু ও উচ্চ রক্তচাপ?
‘শিশু ও উচ্চ রক্তচাপ’ –এ দুটো শব্দ যেন একসাথে মানায় না৷ উচ্চ রক্তচাপ যেন শুধু বয়স্কদের অসুখ – এমনটা মনে করেন অনেকেই৷ তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল! বলেন গ্যোটিংগেন শহরের শিশু-কিশোর বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিওলজিস্ট (হার্টের ডাক্তার) মার্টিন হুল্পকে-ভেটে৷
ছবি: DW
দেরিতে ধরা পড়ে
ডাক্তার হুল্পকে ভেটের কথায়, ‘‘জার্মানির শিশু-কিশোরদের মধ্যে চার থেকে পাঁচ ভাগেরই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তবে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে অনেক দেরিতে৷’’
ছবি: DW/R. Breuer
গুরুত্ব দেওয়া হয় না
মিউনিখ টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার রেনাটে ওবারহোফার বলেন, ‘‘শিশুদের উচ্চ রক্তচাপকে মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না৷ যদিও এর ফলে শিশুদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে৷ অসুখের দিক দিয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক – এ দুটোই সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে৷’’
ছবি: Alexander Raths/Fotolia.com
স্কুলের স্ট্রেস
আগে শোনা যেত ‘স্ট্রেস’ শুধু বড়দের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য৷ কিন্তু আজকের দিনে সেটা আর ঠিক নয়৷ কারণ বাচ্চাদের স্কুল থকেই শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতার যুদ্ধ, যার ফলে ওদেরও থাকে প্রচণ্ড মানসিক চাপ৷ আর উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণই যে হলো মানসিক চাপ!
ছবি: picture-alliance/dpa
খেলাধুলা
এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন পড়াশোনা বা স্কুলের অন্যান্য চাপের পাশাপাশি খেলাধুলা, গান-বাজনা বা কোনো হবি থাকা৷ যাতে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা তাদের রাগ, দুঃখ, কষ্ট ভুলে গিয়ে মাথাটাকে পুরোপুরি অন্য দিকে ঘোরাতে পারে৷
ছবি: Khaneye Koudak Teheran
খাওয়া-দাওয়া
শিশু-কিশোররা খেতে পছন্দ করে ‘পিৎসা’, তেলে ভাজা ‘ফ্রেঞ্চফ্রাই’ বা এ ধরনের নানা খাবার৷ এ সব খাবারে থাকে প্রচুর তেল এবং লবণ৷ তাছাড়া কফিনসহ এনার্জি ড্রিংক বা মিষ্টি পানীয়ও অল্পবয়সিদের বেজায় পছন্দ৷
ছবি: MEHR
উচ্চ রক্তচাপ সহজে বোঝা যায় না
শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ সেভাবে বোঝা যায় না৷ তবে অনেকের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি হতে দেখা দেয়৷ নিজের সন্তানের এ ধরনের পরিবর্তন দেখলে মা-বাবার সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা দরকার৷
অতিরিক্ত ওজন
অনেক সময় বংশগত ধারাকে উপেক্ষা করার উপায় থাকে না – তা উচ্চ রক্তচাপই হোক বা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যাই হোক৷ তাই যাদের মা-বাবার অতিরিক্ত ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ছোটবেলা থেকে খাদ্যাভাসের দিকে নজর রাখা ও ব্যায়াম করা প্রয়োজন৷
ছবি: picture alliance/dpa
ধমনীর কাঠিন্য
কার্ডিওলজিস্টরা বলেন, ‘‘উচ্চ রক্তচাপের চেয়েও ধমনীর কাঠিন্য বা সমস্যা থেকে হৃদরোগ হতে পারে৷ এক্ষেত্রে ধমনী আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসে৷ তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ধুমপান, ডায়বেটিসসহ অন্যান্য অসুখও৷
ছবি: Fraunhofer MEVIS, Bremen
কিডনি নষ্ট হয়ে যাবার ভয়
উচ্চ রক্তচাপের ফলে অনেকের কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ এ রকমটা হলে সারা জীবনের জন্য ডায়ালিসিসের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়৷ অথবা নিতে হয় কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ঝুঁকি৷
ছবি: imago/imagebroker
ওষুধ
প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ওষুধ সেবনও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়৷ এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ‘হাইপার অ্যাকটিভ’, অর্থাৎ অত্যন্ত চঞ্চল বা অশান্ত ছটফটে বাচ্চাদের কথা৷ বহুক্ষেত্রে তাদের যে সমস্ত ওষুধ দেওয়া হতে থাকে, তা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রক্তচাপ মাপা প্রয়োজন
‘‘যেসব বাচ্চার কিডনি, ইউরিনারি নালী এবং আয়োডিনের সমস্যা রয়েছে অথবা যারা হার্টে খুঁত নিয়ে জন্মেছে, তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্ত চাপ মাপা প্রয়োজন৷’’ এই পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির শিশু-কিশোর ফেডারেল সমিতির বিশেষজ্ঞ ডা. ভল্ফরাম হার্টমান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কিছু নিয়ম
নিয়মিত শরীরচর্চা অনেক রোগব্যাধিকে দূরে রাখে৷ তাই শৈশবেই শরীর চর্চা ও সুষম খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন৷ বিশেষ করে যথেষ্ট কলা, বিভিন্ন বাদাম, আলু ইত্যাদি৷ অন্যদিকে লবণ জাতীয় খাবারকে না বলা দরকার৷ স্ট্রেস এড়িয়ে যোগ ব্যায়াম ও বিনোদনমূলক কোনো ব্যায়াম করাও যেতে পারে৷
ছবি: Fotolia/pete pahham
13 ছবি1 | 13
বাংলাদেশের চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের পাশাপাশি কর ফঁকিরও অভিযোগ আছে৷
জাতীয় রাজস্ববোর্ডের অভিযোগ চিকিত্সকরা প্রাইভেট প্রাকটিস করলেও ৯০ শতাংশ চিকিত্সক তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেন না ৷ তাই তাদের চিহ্নিত করে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর৷ এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিয়মিত বেতন পাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসা ও প্রাইভেট প্রাকটিস থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন চিকিত্সকরা৷ কিন্তু বেশিরভাগ চিকিত্সক বেতনের বাইরে বাড়তি উপার্জনের ওপর কর দেন না৷ কর ফাঁকি দিতে তাঁরা আয়কর বিবরণীতে প্রকৃত উপার্জনের চেয়ে কম হিসাব দেখান৷ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ৬০ হাজার রেজিস্টার্ড চিকিত্সক রয়েছে৷ তবে এদের মধ্যে আয়কর দেন মাত্র ১০ হাজারের মতো চিকিত্সক৷ এছাড়া সারাদেশে বিপুল সংখ্যক নিবন্ধনহীন চিকিত্সক রয়েছেন যারা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখে প্রচুর অর্থ আয় করেন৷
এনবিআর-এর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল এরই মধ্যে ৫৩৭ জন চিকিত্সকের তালিকা করে তাদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্যাবলী সংগ্রহ ও প্রস্তুত করেছে৷ এদের কারও চার্জ বা ফি ৫০০ টাকার নীচে নয়৷ কারও কারও ফি হাজার টাকারও বেশি৷ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, নামি-দামি চিকিত্সকরা দৈনিক ৩০ থেকে ৮০ জন রোগী দেখেন৷