ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত৷
বিজ্ঞাপন
আর সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকে মাদক আইনের মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷
এক প্রতিবেদনে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন এই আদেশ দেন৷
আট দিন আগে গ্রেপ্তার সম্রাট ও আরমানকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে রমনা থানায় মাদক আইনের মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়৷ এছাড়া একই থানায় অস্ত্র আইনের আরেক মামলায় সম্রাটকে আরও ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ৷
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড শুনানি করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি আব্দুল্লাহ আবু, একই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাজ্জাদুল হক শিহাব, তাপস পাল ও এপিপি আজাদ রহমান৷ আর আসামির পক্ষে শুনানি করতে গাজী জিল্লুর রহমান, আব্দুল কাদেরসহ প্রায় ২৫ জনের মত আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷
কোন দেশে কত বেশি ক্যাসিনো
বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের ব্যবসা চলে ক্যাসিনো নির্ভর গ্যাম্বলিং বা জুয়াকে ঘিরে৷ চীনের মূল ভূখণ্ড আর মুসলিম কিছু দেশ ছাড়া পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির প্রায় সব দেশ আর বড় শহরগুলোতেই আছে ক্যাসিনোর রমরমা আয়োজন৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/F. Fell
যুক্তরাষ্ট্র সবার উপরে
ক্যাসিনোর কথা উঠলে প্রথমেই আসবে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের নাম, নেভাদায় যার অবস্থান৷ ৩৬০ টি ক্যাসিনোর অস্তিত্ব শুধু এই এক অঙ্গরাজ্যেই৷ ইউটাহ, হাওয়াই আর আলাস্কা ছাড়া ক্যাসিনো আছে দেশটির বাকি সব রাজ্যেই৷ সব মিলিয়ে ১৯৫৪ টি ক্যাসিনো চালু আছে যুক্তরাষ্ট্রে, আছে ৯ লাখের উপর স্লট মেশিন৷ ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান আর বছরে ৭০ বিলিয়ন ডলার আয়ের জোগান দেয় সেখানকার এই শিল্প৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/F. Fell
জুয়া ভালোবাসে ক্যানাডার মানুষ
সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাসিনো আছে ক্যানাডাতে৷ জনগণকে ক্যাসিনোর মালিকানা আর পরিচালনার প্রথম অনুমতি দিয়েছে উদারমনা দেশটি৷ তাতে সেখানে মোট ক্যাসিনোর সংখ্যা ২১৯ টিতে দাঁড়িয়েছে৷ সবচেয়ে বেশি ৭৩ টি আছে অন্টারিওতে৷ এরপর তালিকায় আছে আলবার্টা আর ব্রিটিশ কলম্বিয়া৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটির ৭৬ ভাগ মানুষই কোনো-না -কোনো জুয়ার সাথে জড়িত৷ বছরে সাড়ে ১৫ বিলয়ন ডলার লেনদেন হয় এর মাধ্যমে৷
ছবি: imago/imagebroker
মেক্সিকোতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত
২০৬ টি ক্যসিনো আছে উত্তর আমেরিকার আরেক দেশ মেক্সিকোতে৷ গেম পরিচালনায় এর কোনোটিরই নিজস্ব কোনো প্রোগ্রাম নেই, গোটাটাই কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত৷ কোডারে, বিগ বোলা আর ইমোশন— এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের দখলে অবশ্য মেক্সিকোর ক্যাসিনো শিল্পের বড় অংশটাই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J.Mendez
অতীতের আবহে ফ্রান্স
উত্তর অ্যামেরিকার দেশগুলোকে বাদ দিলে সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্যাসিনো ফ্রান্সে৷ বলতে গেলে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ক্যাসিনোগুলোর দেখা মিলবে এই দেশটিতেই৷ তবে অ্যামেরিকার মতো জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও ঐতিহাসিক দিক থেকে এসব খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ যেমন, ১৯১২ সালে চালু হওয়া ক্যাসিনো ব্যারিয়ো দাভিলা৷ সব মিলিয়ে ১৮১ টি ক্যাসিনো চালু আছে ফ্রান্সে৷ এর পরের অবস্থানটি নেদারল্যান্ডসের, ১৬৬ টি আছে সেখানে৷
ছবি: JOHN GURZINSKI/AFP/Getty Images
কথায় কথায় বাজি ব্রিটিশদের
রাজপ্রাসাদ থেকে শুরু করে রাজপথ, বাজি যদি জুয়ার মধ্যে পড়ে তাহলে ব্রিটিশদের চেয়ে এগিয়ে আর কেউ নেই৷ শুধু লন্ডনেই হাজারের উপর বেটিং শপ আছে৷ ২০ লাখের বেশি ব্রিটিশ অনলাইনে জুয়া খেলে৷ এর বাইরে মেফেয়ার আর পিকাডিলির মতো খ্যাতনামা ক্যাসিনোতো আছেই৷ সব মিলিয়ে সংখ্যাটি ১৫৮৷
ছবি: picture-alliance/prismaonline
ম্যাকাও মানেই ক্যাসিনো
সংখ্যায় বেশি না হলে নামিদামি ক্যাসিনোর দিক থেকে লাস ভেগাসের পরেই আসে চীনের স্বায়ত্ত্বশাসিত অঙ্গরাজ্য ম্যাকাওয়ের নাম৷ বলতে গেলে সেখানকার অর্থনীতিই এই শিল্প নির্ভর৷ যুক্তরাষ্ট্রের উইনস্টারের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো ভেনিটিয়ানের অবস্থানও এখানে৷ সিটি অব ড্রিমস, পন্টে সিক্সটিন, স্যান্ডস, এমজিএম গ্র্যান্ডও আছে দশের ভিতরে৷ মাত্র অর্ধশত ক্যাসিনোই ম্যাকাওয়ের সরকারের ৮০ ভাগ রাজস্বের যোগান দেয়৷
ছবি: AP
আছে মুসলিম অধ্যুষিত দেশেও
বিশ্বের অনেক মুসলমান প্রধান দেশেও বৈধ ক্যাসিনো আছে৷ সবচেয়ে বেশি ১৭ টি আছে মিশরে, যার ১৪ টি শুধু রাজধানী কায়রোতেই৷ ৯ টি আছে তুরস্কে৷ আফ্রিকার মরক্কোতে আছে সাতটি৷ এছাড়াও মধ্যাপ্রাচ্যের আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, আরব আমিরাত আর এশিয়ার মালয়েশিয়াতেও ক্যাসিনোর অনুমোদন আছে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/F. Hall
দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশে
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১টি ক্যাসিনো আছে ভারতে৷ গোয়ার পানাজি, গ্যাংটক, মুম্বাইসহ মোট ১১ টি শহরে সেগুলোর অবস্থান৷ ৫ টি ক্যাসিনো আছে শ্রীলঙ্কায়, যার সবগুলোই রাজধানী কলম্বোয়৷ এছাড়া ১১ টি ক্যাসিনো আছে নেপালে আর ৫ টি মিয়ানমারে৷
ছবি: Imago/ITAR-TASS
8 ছবি1 | 8
সম্রাটকে আদালতে আনার খবরে যুবলীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী সকাল থেকেই পুরান ঢাকার আদালত পাড়ায় ভিড় করেন৷ আদালতের ফটকের বাইরে ও জনসন রোডে জটলা করে তারা সম্রাটের পক্ষে স্লোগানও দেন৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট৷ ৭ আগস্ট কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে ব়্যাব৷
পরে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো চালিয়ে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং নির্যাতন করার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানায় ব়্যাব৷ ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠায়৷
তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় দায়েরকৃত মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুই মামলায় তাকে ১০ দিন করে মোট ২০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে পুলিশ৷ তবে কারাগারে নেওয়ার দুদিন পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে সম্রাটকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়৷ সেখানে চারদিন চিকিৎসা দিয়ে গত ১২ অক্টোবর আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয় সম্রাটকে৷
এসআই/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
২৫ সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
তাদের ঘরে এত টাকা!
ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ, নগদ টাকা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাব৷ মধ্যমসারির নেতাদের বাড়ি থেকে এসব উদ্ধারের ঘটনা সাড়া ফেলেছে৷ পুরো অভিযান দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
বিস্ময়কর
ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী ও এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
কড়া অভিযান
থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসায় মঙ্গলবার অভিযান চালায় র্যাব৷ এসময় তাদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
এত সোনা!
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৭২০ ভরি সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে৷ র্যাব বলছে, টাকা রাখার জায়গা হতো না বলে টাকার একটি অংশ সোনায় রূপান্তর করেন তারা৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা আর টাকা
আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা, তাদের এক কর্মচারী ও এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব৷ এসব টাকা ক্যাসিনো থেকে আয় হতো বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
আছে অস্ত্রও
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বাসা থেকে টাকা, স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি দুটি পিস্তল, দুটি এয়ারগান এবং একটি শটগানও উদ্ধার করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা আসে ক্যাসিনো থেকে
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান শেষে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল জানান, ক্যাসিনো থেকে আয়ের টাকা এনামুল বাসায় সিন্দুকে ভরে রাখতেন৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা রাখতে নতুন সিন্দুক
এনামুলের ভাই রুপন ইংলিশ রোড থেকে পাঁচটি সিন্দুক কিনেছেন এমন খবর পেয়ে দুই ভাইয়ের বিষয়ে খোঁজ শুরু করে র্যাব৷ তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় তিনটি সিন্দুক৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
বস্তাভর্তি টাকা
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনুর কর্মচারী আবুল কালামের নারিন্দার বাসা থেকে জব্দ করা টাকা বস্তায় ভরে নিয়ে যায় র্যাব৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
তার বাড়িতেও এত টাকা!
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনুর কর্মচারী আবুল কালামের নারিন্দার বাসার সিন্দুকে পাওয়া যায় ২ কোটি টাকা ও একটি পিস্তল৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
পালিয়েছেন তারা
র্যাব বলছে, এনামুল সপ্তাহ খানেক আগে থাইল্যান্ডে চলে গেছেন৷ তার ভাই রুপনেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাদের অন্তত ১৫টি বাড়ি রয়েছে৷